কুবি প্রতিনিধি: ‘কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন’ প্রকল্পে দ্বিতীয় ক্যাম্পাস বর্তমান ক্যাম্পাস থেকে প্রায় ১.২ কিলোমিটার দূরে স্থাপনের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছে সালমানপুর এলাকাবাসী। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস দ্বিখন্ডিত করার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন তারা। ১৪ ফেব্রুয়ারী (সোমবার) সকাল ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় এলাকাবাসীরা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আগে থেকে এই এলাকার মানুষ নিজেদের স্বার্থ চিন্তা না করে অনেক জমি দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ার মাধ্যমে আমরা স্বপ্ন দেখি নিজেদের কর্মসংস্থানের। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তৈরি করেছি আমরা। কিন্তু প্রকল্প অনুমোধন হওয়ার পর থেকে একটি স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী নিজেদের জমি বিক্রি করতে ক্যাম্পাসকে দ্বিখন্ডিত করার পায়তারা করছে।
এই ক্যাম্পাস দ্বিখন্ডিত হয়ে গেলে আমরা বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবো। আমাদের দাবি এলাকার চারপাশে জায়গা আছে, এগুলো অধিগ্রহণ করে বর্তমান ক্যাম্পাসের সাথেই সম্প্রসারণ করা হোক।
জনি নামের এক এলাকাবাসী বলেন, বর্তমান ক্যাম্পাস সমতল জায়গা রয়েছে। এ ক্যাম্পাসের আশেপাশে জায়গা থাকতে কেন অন্য জায়গা জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। সরকার আমাদের যে দামে জমি অধিগ্রহণ করবে আমরা জমি দিব। তবুও ক্যাম্পাস দ্বিখ-িত করতে দিব না। আমাদের আশেপাশে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও ভাড়া বাসা তৈরি করেছি। সেইগুলো কোনভাবে নষ্ট হতে দিব না। এখানে এত পরিমান সমতল জায়গা থাকতে কেন পাহাড় এলাকায় জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। সেখানে জমি অধিগ্রহণের নামে সরকারী অর্থের লুটপাট চলছে।
সোহাগ আলী বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে থাকতে চাই, যারা জমি অধিগ্রহণ নামে লুটপাট করছে তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। একজন দশ হাজার টাকার ড্রাইভার কিভাবে এত বিঘার জমির মালিক হয়। আমরা কোনভাবে এই ক্যাম্পাস দ্বিখ-িত করতে দিব না।
মোস্তাফা কামাল বলেন, আমার নিজের জমি এই বর্তমান ক্যাম্পাসে অধিগ্রহণের সময় দিয়েছি। যদি প্রয়োজন হয় তাহলে আরো দিতে পারব। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য আমরা সব করতে পারি। যারা ক্যাম্পাস দ্বিখ-িত করার কাজে লিপ্ত তাদেরকে আমরা চিনি। যখন থেকে জমি অধিগ্রহণের কাজ শুরু হয়, কয়েকজন নিজেদের লোকজন দিয়ে জমি দখল করছে। এই ক্যাম্পাস দ্বিখ-িত করতে দেওয়া হবেনা।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে অক্টোবরে ১৬৫৫ কোটি টাকার মেগা প্রকল্পের অনুমোদন দেয় সরকার। প্রকল্পের আওতায় বর্তমান ক্যাম্পাস থেকে ১.২ কি. মি. দূরে জমি অধিগ্রহণ করতে জায়গা নির্ধারণ করা হয়। বর্তমান ক্যাম্পাস থেকে ১.২ কি. মি. দূরে ক্যাম্পাস করায় শুরু থেকে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এর আগে ২০১৮ সালে ২৮ অক্টোবর ক্যাম্পাসকে দ্বিখ-িত করার প্রতিবাদে দোকান ও রাস্তা অবরোধ করে সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন এলাকাবাসী। ২০১৯ সালের ৩০ মে বিশ^বিদ্যালয় সংশ্লিষ্টদের বরাবর এলাকাবাসী কয়েকজনের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি সংক্রান্ত আইনি নোটিশটি প্রেরণ করেছি।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ২৩ অক্টোবর ভূমি অধিগ্রহণ ও নতুন ভবন নির্মাণসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের জন্য ১ হাজার ৬৫৫ কোটি ৫০ লাখ টাকার মেগা প্রকল্পের অনুমোদন দেয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি।