করোনা ভাইরাস এখন পুরোবিশ্বের কাছে এক ভয়ানক নাম। যার ভয়াল গ্রাসে থেমে গেছে পুরো পৃথিবী, স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। প্রতিনিয়ত বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল।
যার মোকাবেলা একাবিংশ শতাব্দীর সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাড়িয়েছে। এর ফলে বিশ্বের প্রায় ১৭০টির ও অধিক দেশে বন্ধ রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। শিক্ষা ব্যবস্থা পড়েছে এক মহা সংকটে।
সম্প্রতি বাংলাদেশে এই সংকট কাটাতে ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সেশট জট থেকে মুক্ত রাখতে অনলাইন ক্লাসের নির্দেশনা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।
কতটা ফলপ্রসূ হবে এই অনলাইন ক্লাস এসব নিয়ে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। এমতাবস্থায় অনলাইন ক্লাস নিয়ে কী ভাবছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা, এনিয়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভাবনা জানাচ্ছেন দ্য ক্যাম্পাস টুডের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি সাকীব খান।
তরিকুল ইসলাম পিয়াস
লোকপ্রশাসন বিভাগ
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর।
“করোনাকালীন সময়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে না দিয়ে বরং অনলাইনে ক্লাস চালিয়ে যাবার যে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে তাকে সাধুবাদ জানাই। এতে করে সেশনজট নিরসনের প্রক্রিয়াটি বেগবান হবে বলে বিশ্বাস করি। অনলাইনে ক্লাস শেষে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পরীক্ষা নিয়ে নিলে শিক্ষার্থীরা অনেক বেশি উপকৃত হবে অবশ্যই। কিন্তু তার আগে দুয়েকটি কথা বলা প্রয়োজন।
আমি গ্রামে বাস করি, এখানে টেলিকম কোম্পানিগুলোর নেটওয়ার্কের ভীষণ বাজে অবস্থা। গুগল মিট, জুম ক্লাউড মিটিং, ডিসকোর্ড কিংবা ম্যাসেঞ্জার রুম তৈরি করে অনলাইনে যে সকল মিটিং এ উপস্থিত থাকি সেখানে ভালো নেটওয়ার্ক পাওয়ার জন্য আমাকে নদীর ধারে, বাঁশের ঝাড়ের কাছে অথবা এমন কোন জায়গায় চলে যেতে হয় যেখানে ভালো নেটওয়ার্ক কভারেজ পাওয়া যায়।
আবার পরিচিত অনেককেই দেখেছি যাদের স্মার্টফোন কিংবা ল্যাপটপ কোনটিই নেই। আবার একজন পুরুষ শিক্ষার্থী হিসেবে আমি ভালো নেটওয়ার্ক কভারেজ পেতে মাঠের ভিতরে পর্যন্ত চলে যেতে পারি, কিন্তু নারী শিক্ষার্থীরা এক্ষেত্রে কিছুটা জটিলতায় পড়ে যেতে পারেন।
এক্ষেত্রে নীতি নির্ধারক ও শ্রদ্ধেয় শিক্ষকমণ্ডলীর কাছে অনুরোধ রাখতে চাই যেন সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীদের কথা মাথায় রেখে তাদের হাতে স্মার্টফোন বা ল্যাপটপ খুব শীঘ্রই পৌছে দেয়া হয়। শিক্ষার্থীদের ক্লাসে উপস্থিতির বাধ্যবাধকতা শিথিল করে পুরো লেকচারটি যেন শিক্ষার্থীরা অনলাইন থেকে ডাউনলোড করে পরবর্তীতে সেটি দেখে নিতে পারে সেটি নিশ্চিত করার পাশাপাশি এই লেকচারগুলোর উপর এসাইনমেন্ট বেজড পরীক্ষা নেয়ারও অনুরোধ জানাই।
এতে করে সেমিস্টার সিস্টেমে যে কন্টিনিউয়াস এসেসমেন্ট অংশটি থাকে সেই মূল্যায়ন যেমন নিশ্চিত হবে,তেমনি করে শিক্ষার্থীরা লেকচারগুলো কতটুকু শুনেছে বা বুঝেছে সেটিও শিক্ষকগণ অনুধাবন করতে সক্ষম হবেন। আর আরেকটি সমস্যা হলো মোটা অংকের ইন্টারনেট বিল, এক্ষেত্রে টেলিকম কোম্পানিগুলোকে শিক্ষার্থীদের জন্য স্বল্পমূল্যে ইন্টারনেট প্যাকেজ অফার করতে হবে,প্রয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে সেই ব্যয় বহন করতে হবে। অনলাইনে ক্লাসের ব্যস্ততাও শিক্ষার্থীদের মানসিক বিষণ্ণতা অনেকটাই কাটিয়ে তুলতে সাহায্য করবে বলে আশা করি।”
আজাহার ইসলাম
আইন ও ভূমি ব্যবস্থাপনা বিভাগ
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া।
“বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসের কবলে পড়েছে প্রিয় মাতৃভূমি। দিনে দিনে এই ভাইরাসের প্রকোপ বেড়েই চলেছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় অনেক বিশ্ববিদ্যালয় অনলাইন ক্লাস চালু করেছে। পড়াশোনা চালিয়ে নিতে নিঃসন্দেহে এটি একটি প্রশংশনীয় উদ্যোগ।
তবে বিপত্তিটা ইন্টারনেট কেনার টাকা, ইন্টারনেট সংযোগ আর ইন্টারনেট গতিতে। আমাদের দেশে ইন্টারনেট সংযোগ সহজলভ্য নয়। ডেটা কিনতেও উল্লেখ্যযোগ্য টাকা খরচ হয়। তাছাড়া প্রত্যন্ত অঞ্চলে ইন্টারনেট গতি প্রায় শুন্যের কোটায়। বাড়িতে বসে ইন্টারনেট সংযোগ না পেয়ে বাড়ি থেকে দূরে রাস্তায় বসে, বাঁশবাগানে কিংবা গাছে বসেও অনেক শিক্ষার্থী ক্লাসে যুক্ত হচ্ছে।
অনলাইন ক্লাস কারো জন্য আশীর্বাদ আবার কারো জন্য অভিশাপ। আবার কারো কারো জন্য বিলাসিতাও বটে। অনেক শিক্ষার্থী বিভিন্ন সমস্যার কারণে ক্লাসে উপস্থিত হতে পারছেনা। এটা রীতিমতো বৈষম্য বৈকি কিছু নয়। তাছাড়া অনলাইন ক্লাসের মাধ্যমে ক্লাসের যথেষ্ট চাহিদা পূর্ণ হচ্ছে না। পড়া বুঝতে না পারলে দুই একজন প্রশ্ন করার সুযোগ পেলেও সিংহভাগ তা পাচ্ছেনা। অনলাইন ক্লাসে তাত্ত্বিক জ্ঞান মিললেও ব্যবহারিক জ্ঞান থেকে আমরা বঞ্চিত হচ্ছি।”
শফিকুল ইসলাম
সমাজবিজ্ঞান বিভাগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
“করোনাকালীন এই বৈশ্বিক মহামারীতে শিক্ষার্থীরা যখন বিরক্তিকর সময় পার করছেন,ঠিক সে সময়ে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার দিকে ফিরিয়ে আনতে অনলাইন ক্লাস বা ডিসটেন্স লার্নিং সত্যিই অনেক ভালো উদ্যোগ এবং সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত।
কিন্তু অনলাইন ক্লাসের জন্য একজন শিক্ষার্থীর যা দরকার (স্মার্টফোন, ট্যাব, ল্যাপটপ, কম্পিউটার) তা মেটানোর সামর্থ্য কি সত্যিই অভিভাবকদের আছে? অনলাইন ক্লাস বা ডিসটেন্স লার্নিং এ আমিও যুক্ত থাকতে আগ্রহী। কিন্ত আমি সন্দিহান যে পুরোটা সময় ধরে যুক্ত থাকতে পারব কি না।
সাম্প্রতিক সময়ে মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ডা:দিপু মনি দাবি করেন দুটি পাঠ-কার্যক্রম টেলিভিশনে সরাসরি ও তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে ৯০ শতাংশ শিক্ষার্থী দেখছে কিন্তু BRAC Institute Of Governance And Development এর গবেষণা বলছে এগুলো টেলিভিশনে দেখছে কেবলমাত্র ১৬% শিক্ষার্থী এবং মাত্র ১শতাংশ শিক্ষার্থী অনলাইন ক্লাসের সাথে যুক্ত আছে।
এখানেও প্রশ্ন থেকেই যায়।এছাড়াও বাংলাদেশে ইন্টারনেট প্রাপ্যতা এবং এর গতি বাস্তবতাও ভিন্ন দিকে ইঙ্গিত করছে।বাংলাদেশে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর তুলনায় ইন্টারনেটের দাম অনেক বেশি এবং গড়ে জিবিতে ব্যয় প্রায় ৩২ টাকা করে।
ইন্টারনেট গতির কথা কারও অজানা নয়, ক্ষেত্র বিশেষে ঘরের ছাদে উঠেও নেটওয়ার্ক না পাওয়ার রেকর্ড কম নয়।যাইহোক অনলাইন ক্লাসে যাওয়ার আগে যদি সকলের সমান অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে (বিশেষ করে যাদের উক্ত সামর্থ্য নেই) স্কুল,কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সে বিষয়ে সঠিক পদক্ষেপ নেয়া সত্যিই সময়ের দাবি।
তা না হলে অনলাইন ক্লাস বা দূরশিক্ষন পদক্ষেপে সাধারণ এবং প্রান্তিক শিক্ষার্থীদের কোনো উপকারে আসবে বলে হয় না। পরিশেষে বলতে হয় অনলাইন ক্লাস প্রশ্নাতীত নয় উক্ত বিষয়ে সমাধান সাপেক্ষে এই পদক্ষেপ সত্যি অনেক ভালো প্রভাব ফেলবে বলে আশা করছি।”
হাসিবুল খান (হাসিব)
লোকপ্রশাসন বিভাগ
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।
“দীর্ঘদিন লকডাউন থাকার পর বর্তমান পরিস্থিতিতে অনলাইন ক্লাস চালু করতে চাইলেও অনুসরণ করতে হবে বিভিন্ন পদ্ধতি। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষার্থীই আসে মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে। তাদের মধ্যে অধিকাংশেরই স্মার্টফোন বা ল্যাপটপ নেই।
এর পরই আসে চড়ামূল্যে ইন্টারনেটের বিষয়টি। খুব কম শিক্ষার্থীই এ পরিস্থিতিতে ইন্টারনেটের খরচ বহন করতে পারবে। তাছাড়া পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই এখন গ্রামে অবস্থান করছে এবং বেশিরভাগ স্থানেই নেটওয়ার্কের বেহাল অবস্থা, যা ক্লাসে অংশগ্রহণের অনুপযোগী।
এবার আশা যাক অন্য প্রসঙ্গে। করোনার ভয়াল থাবা এখন সবত্র ছড়িয়ে পড়েছে। দেখা যাবে অনেক শিক্ষার্থীর পরিবারের কেউই ইতোমধ্যে করোনায় মারা গিয়েছে কিংবা আক্রান্ত। মানসিক অবস্থা ভালো না থাকায় অনেকেই ক্লাসে অংশগ্রহণ করতে পারবে না।ক্লাসের শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশের এসব সমস্যার কথা বিবেচনা করে আমি অনলাইন ক্লাস শুরু না হওয়ার পক্ষেই অবস্থান করছি।
তবে সরকার এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যদি ভিন্নধর্মী উদ্দ্যোগ গ্রহণ করে, তাহলে অনলাইন ক্লাসে অংশগ্রহন করা যেতে পারে।যেমন বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে আলোচনা করে কিংবা সরকারি উদ্দ্যোগে যাদের কাছে পর্যাপ্ত ডিভাইস নেই, সে সকল শিক্ষার্থীর কাছে স্বল্পমূল্যে ল্যাপটপ বা স্মার্টফোন পৌঁছে দেওয়া এবং শিক্ষার্থীদের জন্য ইন্টারনেট সাশ্রয়ী মূল্যে নিয়ে আসা সময়োপযোগী উদ্দ্যোগ হতে পারে।”
মাজেদুল ইসলাম
কৃষি অনুষদ
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ।
“করোনা ভাইরাসের দরুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলোতে সৃষ্ট সেশনজট নিরসনে অনলাইন ক্লাস নিঃসন্দেহে বাংলাদেশ তথা বিশ্বের ছাত্রছাত্রীদের জন্য একমাত্র পথ। কিন্তু বিশেষত বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সর্বোচ্চ সংখ্যক গ্রামীণ ও নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের হওয়ায় শিক্ষার্থীদের অধিকাংশের ল্যাপটপ/স্মার্টফোন নেই। গ্রামে আবার নেটওয়ার্ক এর সমস্যা ভয়াবহ।হয়তো স্মার্ট ফোন বা নেটওয়ার্ক এর ব্যবস্থা করা গেলেও সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো ইন্টারনেট বিল।
যেখানে প্রায় অধিকাংশ শিক্ষার্থী টিউশন করিয়ে তাদের ভরণপোষণ চালাতো।বাড়িতে এসে সেটাও বন্ধ হয়ে গেছে।তাই সবাই টুকটাক কৃষিমুখী কাজে লেগে পড়েছে জীবিকার তাগিদে। পেট চালানো যেখানে প্রধান উদ্দেশ্য হয়ে পড়েছে নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারে বড় হওয়া এসব শিক্ষার্থীদের, তাদের কাছে নিজ খরচে অনলাইন ক্লাস করার কথা চিন্তা করাটাও স্বপ্নের মতো।
এমতাবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি অনলাইন ক্লাসের জন্য ইন্টারনেট বিল শিক্ষার্থীদের জন্য ফ্রী করে দেয় তাহলে হয়তো অনলাইন ক্লাস করা সম্ভব বলে মনে করি।”
সোহানুর রহমান সোহান
ইতিহাস ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর।
“ধারাবাহিক শিক্ষাক্রমের নিভু নিভু সলতের প্রদীপটিকে জ্বালানোর একটা প্রাণপণ প্রচেষ্টা এই অনলাইন পাঠদানের মধ্য দিয়ে প্রতিফলিত হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা বাসায় বসেই শাণিত করছে নিজেদেরকে আর সম্মাণিত শিক্ষকগণ সময়ের যথাযোগ্যতার প্রমাণ রাখছে এর মাধ্যমে।
সত্যিই, নিঃসন্দেহে এই অনলাইন শ্রেণিপাঠ সমকালের সর্বশ্রেষ্ঠ প্রশংসার দাবি রাখে। তবে পলিসি লেভেল এ অনলাইন খরচ কমানোর ব্যাপারটিকে সর্বোচ্চ মাত্রায় ভেবে দেখার সময় এসেছে।”
রিদুয়ান আহাম্মেদ
সমাজবিজ্ঞান বিভাগ
হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, দিনাজপুর।
“করোনা পরিস্থিতি কবে নাগাদ স্বাভাবিক হবে সে বিষয়ে স্বচ্ছ কোনো ধারনা কারোরই নেই। এমন পরিস্থিতিতে গোটা বিশ্বে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিক্ষাখাত। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এমনিতেই সেশনজটে জর্জরিত তার উপরে করোনাকালীন ছুটি সেশনজটকে আরোও বিশাল আকার ধারন করাচ্ছে।
এখন অনলাইন ক্লাস হচ্ছে একমাত্র এবং প্রধান উপায় এই ক্ষতি কমানোর।এই অনলাইনে ক্লাস করার পিছনে আমাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হচ্ছে মানসিকতা।হ্যাঁ আমরা জানি হাতের পাঁচ আঙ্গুল সমান না তবে আমরা যদি সবাই নিজেদের মধ্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেই তাহলে অনলাইন ক্লাস করা আমাদের জন্য সহজতর হবে।
অনলাইনে ক্লাস করার অন্তরায় থাকবেই তবে তিনটি বিষয়ের সমন্বয় করলে ক্লাস করা সম্ভব। “সরকার, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং ছাত্র নিজে”।সরকারকে ইন্টারনেটের দাম সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসতে হবে।সব জায়গায় সমস্যা থাকবে, সীমাবদ্ধতা থাকবে এসব ভেবে থেমে থাকলে চলবে না। অনলাইনে ক্লাস এ যেন কোনো ধরনের সাইবার ক্রাইম সংগঠিত না হয় সেদিকে নজর রাখতে হবে এবং প্রাইভেসি রক্ষা করতে হবে যেহেতু এটা ক্লাস এর বিষয়।
আমার মনে হয় সকল কিছুর সমন্বয় এবং আন্তরিকতাই পারে এই বিশাল ক্ষতি কিছুটা হলেও পুষিয়ে নিতে।”
মোঃ জাকারিয়া
ইলেকট্রনিকস এন্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং ডিসিপ্লিন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়।
“এই লম্বা ছুটিতে আমাদের পড়ালেখার যে বেহাল অবস্থা তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এঅবস্থায় অনলাইন ক্লাস সবার জন্য ইফেক্টিভ কিন্তু অনলাইন ক্লাস করতে গিয়ে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি আমাদের অধিকাংশ শিক্ষার্থীর বাসা গ্রামে হওয়ায় নেট খুবই ধীরগতি,মাঝে মাঝে নেট পায় না।
ফলে ক্লাস করতে সমস্যা হয়। আবার আমার অনেক বন্ধু আছে যাদের প্রয়োজনীয় ডিভাইস নাই।তাছাড়া আমরা ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্র হওয়ায় আমাদের ল্যাবে কাজ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অনলাইনে তো সেটা সম্ভব না।এসব সমস্যা সমাধানের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সমন্বয় জরুরি।”
ফাতেমা জান্নাত মরমী
লোকপ্রশাসন বিভাগ
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর।
“বিশ্বব্যাপী চলছে করোনা ভাইরাস এর তান্ডব। থেমে নেই আমাদের প্রিয় বাংলাদেশেও। এজন্য বন্ধ রয়েছে সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।কবে খুলবে এ উত্তর ও জানা নেই কারো।অনিশ্চয়াতায় দিন গুনছি আমরা শিক্ষার্থীরা। সেশন জট এর মত ফ্রাস্ট্রেশন খুবলে খুবলে মানসিক ভাবে শেষ করে দিচ্ছে আমাদের।
এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এর অনলাইন ক্লাস শুরু করার উদ্যোগ নিঃসন্দেহে প্রশংশার দাবিদার।তাহলে কিছুটা হলেও ওই ফ্রাস্ট্রেশন থেকে মুক্তি পাব আমরা।কথায় আছে, নাই মামার থেকে কানা মামা ভাল।বাসায় বসে থেকে যখন কিছুই হচ্ছে না তখন অনলাইন ক্লাস গুলো করে আমরা নিজেদের পড়াশুনার মাঝে রাখতে পারব।নিজেদের মানসিক স্বাস্থ্য কে অনেকটাই ঠিক রাখতে পারব।
পরবর্তীতে ক্যাম্পাস খুললে আমরা শুধু পরীক্ষাগুলো দিয়ে দিব।পড়ব না সেশন জট এর কবলে। তবে হয়ত আমাদের অনেকেরই নেটওয়ার্ক, ডাটা নিয়ে অনেক রকম সমস্যায় পড়তে হবে।তাই এক্ষেত্রে যদি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও সরকার সঠিক দৃষ্টি প্রদান করে, আমাদের সমস্যা গুলোর সমাধান করেন তাহলে আমরা সকল প্রতিকুলতা কাটিয়ে অনলাইন ক্লাস করতে সক্ষম হব।”