যবিপ্রবি টুডেঃ যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগে একটি আসন বাড়িয়ে নিপুন বিশ্বাসকে ভর্তির সিদ্ধান্ত হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনস কমিটির এক জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।
এর আগে যথাসময়ে উপস্থিত হতে না পারায় মেধা তালিকায় স্থান পেয়েও ভর্তি হতে পারছিলেন না নিপুন বিশ্বাস। তার বাড়ি নীলফামারীর সদর উপজেলা লক্ষীচাপ ইউনিয়নে। তার বাবা প্রেমানন্দ বিশ্বাস পেশায় একজন নাপিত।
তাকে নিয়ে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ করা হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এ প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের অনুরোধে ডিনস কমিটি আসন বাড়িয়ে তাকে ভর্তির সিদ্ধান্ত নেয়।
রবিবার সন্ধ্যায় ডিনস কমিটির এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগের ভর্তি সংক্রান্ত উদ্ভূত পরিস্থিতি সম্পর্কে আলোচনা করতে মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় ডিনস কমিটি জরুরি বৈঠকে বসে।
এতে আরো বলা হয়, রবিবার ভর্তি জন্য মেধাতালিকার ১৭তম নিপুন বিশ্বাস পরিববহন সংক্রান্ত জটিলতার কারণে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লিখিত সময়ে উপস্থিত হতে পারেননি। এ অবস্থায়, অনুষদীয় ভর্তি কমিটি উক্ত শিক্ষার্থীর ক্রমের পরবর্তী উপস্থিত শিক্ষার্থী বায়েজিদ মল্লিককে ভর্তি করে। পরবর্তীতে নিপুন বিশ্বাস বেলা দেড়টায় উপস্থিত হন। বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে অবহিত করলে তিনি মানবিক দিক বিবেচনায় শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগে একটি আসন বাড়িয়ে উক্ত শিক্ষার্থীকে ভর্তি করানোর জন্য ডিনস কমিটিকে অনুরোধ করেন।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, উপাচার্যের অনুরোধের প্রেক্ষিতে এ কমিটি উক্ত শিক্ষার্থীকে ভর্তির সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। বিষয়টি কেন্দ্রীয় ভর্তি কমিটির পরবর্তী সভায় অবহিত করার সিদ্ধান্ত হয়।
ডিনস কমিটির সভাপতি ড. মো. মেহেদী হাসান সভায় সভাপতিত্ব করেন।
এর আগে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী নিপুন বলেন, ‘গতকাল (রবিবার) বিকেলে ওয়েবসাইটের নোটিশে তৃতীয় ভর্তি বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। আমার কোনো স্মার্টফোন নেই যার কারণে আমি ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখতে পারিনি। কিন্তু আমার মোবাইল নম্বরে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য কোনো কল বা মেসেজ দেওয়ার কথা থাকলেও সেটা দেওয়া হয়নি।’
‘মাঝরাতে আমার একজন বড় ভাই আমাকে ফোন করে ভর্তির বিষয়ে জানালে আমি তৎক্ষণাৎ ধারে ২৩ হাজার টাকা জোগাড় করি। এরপর নির্দিষ্ট সময়ে আসার জন্য মাইক্রোবাস ঠিক করি ১৫ হাজার টাকা দিয়ে। কিন্তু যশোর থেকে নীলফামারীর দূরত্ব অনেক হওয়ায় এবং রাস্তার অবস্থা খারাপ হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছাতে আমার বেলা ১২টা ৮ মিনিট বেজে যায়। এর মধ্যে ১০টার দিকে আমার বিষয়ে একজন বড় ভাই ডিন স্যারের সঙ্গে এই সমস্যার বিষয়ে কথা বলেন। কিন্তু আমি আসার পরে জানতে পারি মেরিট লিস্টে আমি প্রথমে থাকার পরেও তৃতীয় সিরিয়ালে থাকা শিক্ষার্থীকে ভর্তি নেওয়া হয়েছে। এরপর আমি অনেক অনুনয়-বিনয় করলেও তারা আমাকে ভর্তি নেয়নি।’
তিনি আরো বলেন, আমি কাজ করে হলেও এই টাকা জোগাড় করতে পারব কিন্তু আমি আমার বাবা-মাকে কি জবাব দিব?
‘আমার বাসা দূরে হওয়ার জন্য আজ আমি সময় মত আসতে পারিনি। যদি সময়সীমা বাড়ানো হত তাহলে আমি সঠিক সময়ে উপস্থিত হতে পারতাম। তাছাড়াও আমাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে কোনো মেসেজও দেওয়া হয়নি। অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ওয়েটিং লিস্টে থাকায় আমি মেসেজ পেয়েছি কিন্তু এখানকার প্রশাসন কোনো মেসেজ দেয়নি। আমাকে যদি আগে থেকে মেসেজ দেওয়া হত অথবা নোটিশের পরের দিনই সময় না দিয়ে একটা দিন পরে দেওয়া হত তাহলে আমি সঠিক সময়ে এসে ভর্তি হতে পারতাম।’
তাকে ভর্তির সিদ্ধান্ত নেয়ার পর নিপুন বিশ্বাসের সঙ্গে তাৎক্ষণিক যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। সূত্রঃ দেশ রুপান্তর।