কিস্তি আদায়ে ব্যস্ত এনজিও, দিশেহারা গ্রাহক

সারাদেশ টুডেঃ  করোনাভাইরাসে আয় উপার্জন ও ব্যবসা না থাকায় কিস্তি দেওয়া নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন গ্রাহকরা। ঋণ পরিশোধে গ্রহীতাদের বাধ্য না করতে সরকারি নির্দেশনা থাকলেও এর কনোন তোয়াক্কাই করছেন না এনজিও। করোনাকালে ক্ষুদ্র ঋণগ্রহীতাদের কাছে কিস্তি আদায় কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে এনজিওগুলোএমনকি কিস্তি আদায়ের জন্য গ্রাহকদের বাড়িতে গিয়ে বসে থাকা ও হুমকি প্রদানের অভিযোগও পাওয়া গেছে।এমন ঘটনা চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায়।

ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ২০-২৫টির মতো বিভিন্ন এনজিও‘র কার্যক্রম চলমান। প্রতিদিন ঋণগ্রহীতাদের বাসা-বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হানা দিচ্ছে এসব এনজিও কর্মীরা। স্বাভাবিক সময়ের মতো কিস্তি পরিশোধে গ্রাহকদের চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে।

চলমান সংকটে গ্রাহকের অক্ষমতার কোন যুক্তিই কর্ণপাত করা হচ্ছে না। কিস্তি আদায়ের মানসিক চাপের পাশাপাশি বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করা হচ্ছে বলেও দাবি ঋণগ্রহীতাদের।
জুঁইদন্ডী চৌমুহনীর চা দোকানি মোহাম্মদ হোসেন বলেন, করোনা সংকট দেখা দেয়ার আগে ব্যবসার কাজে স্থানীয় একটি এনজিও থেকে ৫০ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছিলাম। সপ্তাহে ১২শ টাকা করে কিস্তিও পরিশোধ করছিলাম। কিন্তু করোনার কারণে দোকান বন্ধ থাকায় কিস্তি দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। তবুও প্রতি সপ্তাহে কিস্তি পরিশোধে আমাকে চাপ দেয়া হচ্ছে।

বটতলী গ্রামের একজন জানান,কাপড়ের দোকানে চাকরি করার সময় স্থানীয় একটি এনজিও থেকে কিছু লোন নিয়ে টিন কিনে বাড়ি করেছিলাম। করোনার কারণে দোকানপাট বন্ধ থাকায় চাকরিটাও নেই। এখন সেই কিস্তির টাকার জন্য চাপ দিচ্ছে, তারা সময়ও দিতে চাচ্ছেন না।

স্থানীয় এক এনজিও কর্মী বলেন, কিছু করার নেই, অফিসের নির্দেশনা মেনে কাজ করতে হয়। স্বাভাবিক সময়ে ঋণ আদায়েও আমাদের অনেক বেগ পোহাতে হয়। তাছাড়া একাধিক কিস্তি জমে গেলে গ্রাহক তা পরিশোধে সক্ষম হবে না। তাই কিস্তি নিতে মাঠে যেতে হচ্ছে।

এনজিও সংস্থা ‘আশা’ এর সদরের শাখা ব্যবস্থাপক রফিকুল ইসলাম বলেন, কিস্তি পরিশোধের জন্য কাউকে চাপ দেওয়া হচ্ছে না। যারা আর্থিকভাবে স্বচ্ছল তাদের কিস্তি নেওয়া হচ্ছে। আবার অনেকে নতুন করে ঋণ নেওয়ার জন্য কিস্তি পরিশোধ করছে। এতে প্রতিদিন গড়ে ৩০ শতাংশ ঋণের কিস্তি আদায় হচ্ছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ জোবায়ের আহমেদ বলেন, সরকারি নির্দেশ মোতাবেক আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত কারো কাছ থেকে জোরপূর্বক কিস্তি আদায়ের সুযোগ নেই।

তবে যারা স্বেচ্ছায় ঋণ পরিশোধ করতে চান, তাদের কিস্তি নেওয়া যাবে। এর ব্যতিক্রম হলে অবশ্যই আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

Scroll to Top