একপা- দুপা করে হেটে আজ কুবি তার সাবালকত্বে পৌঁছিয়েছে। কাটিয়েছে ১৪ টি বছর। কত সফলতা- ব্যর্থতা যুক্ত হয়েছে তার নামের পাশে। তবে তার বুক সজীব করা শিক্ষার্থীগণ প্রতিনিয়তই তাকে তুলে ধরছে জাতির সামনে। এক বুক আশা রেখে এগিয়ে যাচ্ছে কুবি। স্বপ্ন দেশসেরা বিশ্ববিদ্যালয় হওয়া। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা তুলে ধরেছেন বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী আবু জাফর।
প্রিয় ক্যাম্পাস,আমি তোমার প্রতিটি আঙ্গ, প্রতিটা ধুলো-কণা,প্রাণী -অপ্রাণী সকলকে ভালবাসি।তুমি আমায় অসংখ্য প্রিয়জনের মাঝেও অন্যতম কাউকে উপহার দিয়ে আরো আপন হয়ে আছ।আমার জীবনের সেরা কিছু স্মৃতি তোমায় ঘিরে।
আমি অসংখ্য অচেনাকে চিনেছি,অজানাকে জেনেছি,অদেখা দেখেছি পাহাড় আবৃত এ ক্যাম্পাসে পা রেখে।জানিনা জীবনে কতটা সফল হয়েছি। তবে যতটা হয়েছি তার অনেকটাই ক্যাম্পাসের অবদান।
কখনো কাশফুল, কখনো কৃষ্ণচূড়া, লাল-নীল বাস,মাঠ,বাবুই চত্ত্বর,লালন চত্ত্বর,সানসেট ভেলি এ সবকিছুই আমাকে প্রেম, বন্ধুত্ব, স্নেহ-শ্রদ্ধাবোধ শিখিয়েছে।আমার বিভাগে রয়েছে অসংখ্য স্মৃতি যা বলে শেষ করার মতো নয়। মায়ের মতো প্রিয় ক্যাম্পাস, জানিনা কতটা তোমায় স্মরণ করেছি। তোমায় নিয়ে যে স্মৃতি জমা হয়েছে জীবনের খাতায় তা অবর্ণনীয়। শুভ জন্মদিন, প্রিয় ক্যাম্পাস।
জান্নাতুল ফিরদাউস, শিক্ষার্থী, বাংলা বিভাগ।
বাংলাদেশর ঐতিহাসিক কুমিল্লা জেলার লালমাই পাহাড়ের পাদদেশে, পাহাড়ি ও সমতলভূমির ৫০ একর ভূখন্ডে প্রকৃতির আপন মহিমায় ২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় দেশের দক্ষিন পশ্চিমাঞ্চলের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ, ২৬তম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়। সূচনালগ্নে ৩০০ জন শিক্ষার্থী ও ১৫ জন শিক্ষক নিয়ে যাত্রা শুরু করে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়।
বর্তমানে ১৯ টি বিভাগ, ২৫৩ জন শিক্ষকমণ্ডলী ও সাত হাজারের অধিক শিক্ষার্থীদের আনাগোনায় প্রাণোচ্ছল কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় পদার্পণ করছে ১৪ তম বর্ষে। প্রতিষ্ঠার এত বছর পরো নানান সমস্যায় জর্জরিত প্রিয় বিদ্যাপীঠ। এসব সমস্যা থেকে দ্রুত উত্তরণের মাধ্যমে দেশের প্রসিদ্ধ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে আত্নপ্রকাশ করুক আমাদের প্রাণের কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়।
তানভীর আহমেদ রাসেল, শিক্ষার্থী, ফার্মেসী বিভাগ।
প্রাপ্তি এবং প্রত্যাশা মানব জীবনের মৌলিক দুই অভিধা।যার যোগসূত্র যোগ্যতা। হাঁটি হাঁটি পা পা করে কুবি আজ তাঁর বাল্যকাল ছেড়ে কৈশোর ছুঁয়েছে। বাল্যকালেই তাঁর সন্তানেরা তাঁর কাছে যতটুকু যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছে,তার চেয়ে আরো বেশি সন্তানদের সে বিলিয়েছে।বাল্য বয়সে যা সে দিয়েছে,দেশের অন্য কোন বিশ্ববিদ্যালয় কৈশোরোত্তীর্ণ হয়েও তা দিতে পারেনি।সন্তানদের সে মৌলিকভাবে শিক্ষা দিয়েছে সুদৃঢ় নৈতিকতা এবং ইতিবাচক মানসিকতা।
হয়তো সে দিতে পারেনি টি.এস.সি.র মতো কোন মিলনকেন্দ্র,কিন্তু দিতে পেরেছে নির্মল আনন্দ-হিল্লোলের কাঁঠালতলা। হয়তো সে দিতে পারেনি পর্যাপ্ত ল্যাব আর শ্রেণিকক্ষ,কিন্তু দিতে পেরেছে প্রকৃতির পসরা বিছানো শিক্ষক-ছাত্রের গাছতলা। হয়তো সে দিতে পারেনি আধুনিক কোন বিনোদন যন্ত্র,কিন্তু দিতে পেরেছে সবুজের বুক চিড়ে লাল মাঠে সন্তানদের দক্ষ খেলা। প্রকৃতিপ্রেমী একজন কুবিয়ান হিসেবে আজ কী বাকী থাকতে পারে তাঁর কাছে চাওয়া?
আহমাদ আয়মানী, শিক্ষার্থী, বাংলা বিভাগ।
১৪ বছর পেরিয়ে ১৫ তম বর্ষে পদার্পণ করলো বাংলাদেশের দক্ষিন পূর্বাঞ্চলের সেরা বিদ্যাপীঠ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়। নানা সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও লালমাটির এ ক্যাম্পাসটি গত এক যুগ ধরে শিক্ষার আলোকবর্তিকা নিয়ে আলোকিত করেছে হাজারো কুবিয়ানকে।আশা করি বাস সংকট, লাইব্রেরি সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি, গবেষণা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি সহ যে সকল সমস্যা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদ্যমান তা সমাধান করার জন্য বর্তমান প্রশাসন কার্যকারি উদ্যোগ নিবে।