চবিতে চলমান পরীক্ষা স্থগিত, শিক্ষার্থীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি)

চবি প্রতিনিধিঃ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) বিভিন্ন বিভাগের চলমান পরীক্ষা স্থগিত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। চবি প্রশাসন বুধবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৮টায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরীক্ষা স্থগিতের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর শিক্ষার্থীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। আগামীকাল বৃহস্পতিবার ক্যাম্পাসে তাঁরা সমাবেশ করবেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এস.এম.মনিরুল হাসান গণমাধ্যমকে বলেন, পরীক্ষা নেওয়া যাচ্ছে না। আগামীকাল বৃহস্পতিবার নোটিশ দিয়ে বিভাগগুলোকে জানিয়ে দেওয়া হবে।

পরীক্ষা নিয়ে অনিশ্চয়তায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা

তিনি আরও জানান, সরকারের নির্দেশনা ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্ষদের সভার সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে পরীক্ষা স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ সিদ্ধান্ত সব বিভাগের মানতে হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চবির ইংরেজি বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, “আমাদের ৩য় বর্ষ পরীক্ষা হওয়ার কথা ২০১৯ সালে কিন্তু সেই পরীক্ষা আমরা ২০২১-এ এসেও দিতে পারছি না।২০২০ সালে জানুয়ারি মাসে পরীক্ষা হবে বলা হয়েছিল কিন্তু সেই পরীক্ষা মার্চ মাসে নিয়ে যাওয়া হয়।এরপর কোভিড ১৯-এর কারণে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়ে যায়।পরবর্তীতে আমরা রুটিন পাই কিছুদিন আগে।রুটিন অনুযায়ী আমাদের ৪ঠা মার্চ থেকে পরীক্ষা শুরু।কিন্তু শিক্ষামন্ত্রীর ঘোষণার পর থেকে আমরা দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগছি পরীক্ষা হবে কি হবে না।ইতোমধ্যে আমাদের জীবনের ২টা বছর নষ্ট হয়ে গেছে।এমতাবস্থায় যদি পরীক্ষা শিক্ষামন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আরো পেছানো হয় তাহলে আমরা অপূরণীয় ক্ষতির সম্মুখীন হব।’’

চবি ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী শহিদুল্লাহ কায়সার বলেন, “স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোর উচিত তাদের নিজস্ব ক্ষমতায় পরীক্ষা চালিয়ে নিয়ে যাওয়া এবং ছাত্রদেরকে ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তা থেকে মুক্তি দেয়া।এটা হলো স্বায়ত্তশাসনের নিজস্ব অধিকার।’’

চবির একাধিক শিক্ষার্থী জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের হল বন্ধ রেখে পরীক্ষা নেওয়ায় নানা ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। হল খুলে দিয়ে পরীক্ষা নিলে শিক্ষার্থীরা উপকৃত হবেন। হল না খোলা পর্যন্ত পরীক্ষা স্থগিত রাখলে খারাপ হবে না।

অন্যদিকে অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী দেওয়ান তাহমিদ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘করোনার কারণে দীর্ঘ সেশনজটে পড়ে বেশির ভাগ শিক্ষার্থী হতাশ হয়ে পড়েছেন। এ অবস্থায় চলমান পরীক্ষা স্থগিত হলে সে হতাশা আরও বাড়বে।’

এর আগে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি গত সোমবার এক ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে ক্লাস শুরু হবে আগামী ২৪ মে। তার আগে ১৭ মে আবাসিক হলগুলো খুলবে। হলে ওঠার আগে আবাসিক শিক্ষার্থীদের করোনা টিকা নিতে হবে। আর হল খোলার আগে কোনো পরীক্ষা হবে না।’ এ বক্তব্যের দুই দিন পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পরীক্ষা স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিল।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ

Leave a Comment