শনিবার, ১০ জুন ২০২৩, ০৯:১৬ পূর্বাহ্ন

ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের হাতাহাতি, ক্যাম্পাসে দেশীয় অস্ত্রের মহড়া

  • আপডেট টাইম শুক্রবার, ১৮ মার্চ, ২০২২, ৩.১৪ পিএম
ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের হাতাহাতি, ক্যাম্পাসে দেশীয় অস্ত্রের মহড়া

রাবি প্রতিনিধিঃ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ জিয়াউর রহমান হলে দাবা খেলাকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার একপর্যায়ে দেশীয় অস্ত্র রাম দা এবং লাঠিসোটাসহ হলের দুই দিকে অবস্থান নেয় তারা। গত বুধবার রাত ৮টায় হলের গেমস রুমে এ ঘটনার সূত্রপাত হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, বুধবার রাত আটটার দিকে দাবা খেলাকে কেন্দ্র করে হলের গেমস রুমে সমাজ কর্ম বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী আরিফ এবং দর্শন বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ও হল কমিটির পদপ্রত্যাশী ছাত্রলীগ নেতা ওয়ালিউল্লাহর কথা কাটাকাটি হয়। এ সময় আরিফ কল করলে শাখা ছাত্রলীগের সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনুর অনুসারী এবং আহসান উল্ল্যার প্যানেলের রেজোয়ান মন্ডল, অপু মল্লিক, ফিরোজ ও শাকিল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে উচ্চবাচ্য ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ হয়। এর পর তা হাতাহাতির পর্যায় পৌছাঁয়।

পরে ওয়ালিউল্লাহ ক্ষিপ্ত হয়ে হলের দায়িত্বপ্রাপ্ত ছাত্রলীগ নেতা রাশেদ খানের রুম (কক্ষ- ২০৩) থেকে রাম দা নিয়ে তেড়ে আসেন। এসময় ওয়ালিউল্লার সাথে ছাত্রলীগ কর্মী শেহজাদ রিদয় ও সজীব অংশ নেন। তারা উগ্রভাবে রাম দা হাতে হামলার করতে উদ্যত হয়।

এ নিয়ে সমাজ কর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী আরিফ বলেন, বিষয়টি তেমন কিছু না। আমি খেলাধুলা করি, সেও করে। খেলায় ভুল বোঝাবুঝির কারণে একটু সমস্যা হয়েছিলো। পরে আমাদের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে।

তবে হল কমিটির পদপ্রত্যাশী ওয়ালিউল্লাহ বলেন, এমন সমস্যা আগেও হয়েছে। গতকাল আমি দাবা খেলছিলাম। হঠাৎ উনি আসেন এবং গালিগালাজ করেন। এর পর শার্টের কলার ধরেন এবং মারতে তেড়ে আসেন। যা আমার আত্মসম্মানে আঘাত করে। তাৎক্ষণিক ক্ষোভের কারণে আমি রাম দা নিয়ে আসি।

‘সিনিয়র জুনিয়র ভুল বোঝাবুঝি থেকেই এই ঘটনার সূত্রপাত। শুনেছি রাগের মাথায় একজন রাম দা নিয়ে বের হয়েছিলো। পরে সবাইকে নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করা হয় বলে জানান হলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা ও সভাপতি গোলাম কিরবিয়ার অনুসারী রাশেদ খান।

তবে হলে রাম দা সংরক্ষণের বিষয়টি তিনি জানেন না বলে দাবি করেন। বলেন, যারা এটা করেছে তাদের বিরুদ্ধে হল প্রভোস্টের কাছে অভিযোগ দেবো। হল প্রশাসন এর বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

ঘটনাটি রাজনৈতিক ইস্যু নয় দাবি করে জিয়া হলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা ফয়সাল আহমেদ রুনুর অনুসারী আহসান উল্ল্যাহ বলেন, ঘটনাটি গেমস রুমে খেলাধুলাকে কেন্দ্র করে সৃষ্টি হয়েছে। এটা সাধারণ ইস্যু, এখানে কোন রাজনৈতিক কারণ ছিলো না। দেশীয় অস্ত্র প্রদর্শনের বিষয়টি অস্বীকার করেন আহসান।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বলেন, এমন কোন ঘটনা আমার কানে আসে নি। বিষয়টি আমি খোঁজ নেবো, ঘটনার সত্যতা মিললে আমরা সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, আমি ঘটনাটি শুনেছি। ছোট বিষয়কে কেন্দ্র করে ঘটনার সূত্রপাত। তবে হলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা বিষয়টি সমাধান করেছে বলে জানতে পেরেছি। এঘটনায় হাতাহাতি এবং রাম দা প্রদর্শনের বিষয়টি অযৌক্তিক বলে মনে করেন তিনি।

রুনু জানান, কিছুদিনের মধ্যেই হল কমিটির তালিকা প্রকাশ করা হবে। যারা কোনোধরনের সিট বাণিজ্যের সাথে জড়িত নয় এবং যাদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের অভিযোগ নেই; পাশাপাশি ত্যাগী ও আওয়ামী লীগ রাজনীতির সাথে জড়িত এমন পরিবারের সন্তানদের কমিটিতে প্রাধান্য দেয়া হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান জয় এবং সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল করলেও তারা রিসিভ করেননি।

The Campus Today YouTube Channel

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
themesbazar_creativenews_II7
All rights reserved © 2019-20 The Campus Today