আশিক আরেফীন, জাককানইবি প্রতিনিধি: জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্নিবীণা হলের ডাইনিং এর খাবারের মান ও দাম নিয়ে অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্নিবীণা হলের খাবার খেতে এসে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থী চয়ন দেওয়ান সহ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী খাবারের মান নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
আজ দুপুরে হলে খাবার খেতে এসে খাওয়ার এক পর্যায়ে খাবার ডালে ৪/৫ টি মাছি দেখতে পান চয়ন ও তার বন্ধু আসিফ। এ বিষয়ে হলের খাবারের দায়িত্বরত তারা মিয়াকে বিষয়টি জানালে তিনি রেগে গিয়ে বলেন, আপনাদের মতই কারো অসতর্কতার কারণে খাবারে মাছি পড়ে। চয়ন কথার এক পর্যায়ে রেগে গিয়ে হলের ডাইনিং এ রাখা তরকারির প্লেটে ধাক্কা দিলে কিছু তরকারি পড়ে যায়। পরবর্তীতে ডাইনিং এর কার্যক্রম কিছুক্ষণের জন্য বন্ধ রাখা হয়।
পরবর্তীতে বিষয়টি অগ্নিবীণা হলের প্রভোস্ট মো. নূরে আলমকে জানানো হলে তিনি হলের খাবারের দায়িত্বরত তারা মিয়াকে হলে ঘটে যাওয়া বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চান।
এ সময় তারা মিয়া বলেন, হলের খাবার ডালে মাছি পাওয়ার বিষয়টি সম্পর্কে জানার পর আমি তার সেই খাবার পরিবর্তন করে দিয়ে নতুন করে খাবার দেই। পরবর্তীতে তিনি উঠে গিয়ে ডাইনিং এ রাখা খাবার প্লেটে ধাক্কা দিয়ে খাবার ফেলে দেন। এসময় কিছু খাবার নষ্ট হয়। ডালে যেন মাছি না পড়ে সেজন্য ঢাকনার ব্যবস্থা করা আছে। অনেকে সেই ঢাকা খুলে রেখে যাওয়ায় হয়তো এই কারণে মাছি পড়েছে। খাবার ফেলে ঘটনার কারণে ঐ সময় যারা খাবার খাচ্ছিলেন তাদের খাবার শেষ হলে কিছুক্ষণের জন্য ডাইনিং বন্ধ রাখি।
এসময় শিক্ষার্থীরা তার কথার প্রতিবাদ করে জানান, খিচুড়ির মূল্য ছিল ১৫ টাকা যা বর্তমানে ১৮ টাকা করা হয়েছে, ছোট মাছের তরকারি বলে যে তরকারি বিক্রি হচ্ছে সেখানে ছোট মাছের অস্তিত্ব নেই, ডিম ভাজির মূল্য বৃদ্ধি এবং অন্যান্য ভাজি হোটেলের মত দাম রাখলেও মানহীন ও পরিমাণে কম দিয়ে থাকে। সমমূল্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটোরিয়া সহ বাইরের হোটেল গুলোতে এর চেয়ে ভাল খাবার পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে খাবারের মান বৃদ্ধি সহ খাবারের দাম কমাতে হবে।
এসময় উপস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম বাবু ও সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল হাসান রাকিব ও অগ্নিবীণা হলের সভাপতি প্রয়াস কুমার মিশ্র এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের সভাপতিসহ এর অন্যান্য সদস্যের উপস্থিতিতে এ সকল অভিযোগ শোনার পর হল প্রভোস্ট মো. নূরে আলম বলেন, খাবারের সমস্যা হলে সেই বিষয়ে আমাদেরকে অভিযোগ করতে পারেন। কিন্তু এই বিষয়ে নিজে থেকে কোন পদক্ষেপ নেওয়ার অধিকার আপনাদের নেই। এক্ষেত্রে আপনাদের খাবার ফেলে দেওয়া এবং ডাইনিং বন্ধ রাখা উচিত হয়নি।
এসময় তিনি আরও বলেন, ইতোপূর্বে আমি ডাইনিং এর দায়িত্বরতদের খাবারের দাম কমাতে বলেছিলাম। তারা যদি খাবারের দাম না কমিয়ে থাকে সেক্ষেত্রে রবিবারের মূল্য কমিয়ে তার তালিকা প্রকাশ হবে। পরবর্তীতে তারা খাবারের মান বাড়াতে না পারলে তাদের সাথে ডাইনিং এর চুক্তি বাতিল করা যাবে।
উল্লেখ্য, শিক্ষার্থীরা খাবারের দাম ও মান নিয়ে অভিযোগ করার সময় শিক্ষার্থীদের সাথে হলের খাবারের দায়িত্বরত তারা মিয়ার বদ মেজাজি আচরণের বিষয়টি যেন ভবিষ্যতে তিনি এড়িয়ে চলেন সেই বিষয়ে তাকে সতর্ক করে দেন।