সোমবার, ০৫ জুন ২০২৩, ০৮:৩৮ পূর্বাহ্ন

জুনিয়র কর্তৃক সিনিয়র হেনস্থা, ১৩ দিনেও মেলিনি তদন্ত রিপোর্ট

  • আপডেট টাইম সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২০, ১২.৪৫ এএম

নোবিপ্রবি প্রতিনিধি


নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) জুনিয়র কর্তৃক সিনিয়র হেনস্তার ঘটনায় ২ দিনের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য বলা হলেও ১৩ দিনে জমা দেয়নি তদন্ত রিপোর্ট। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনফরমেশন সায়েন্স এন্ড লাইব্রেরি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থীরা। তদন্ত রিপোর্টে দেরী হওয়ায় অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর সাথে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সমঝোতা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

জানা যায়,গত ১১ ফেব্রুয়ারী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিজ ব্যাচের জুনিয়র শিক্ষার্থী কর্তৃক এ ঘটনা ঘটে। পরে অজ্ঞান অবস্থায় নোয়াখালী সদর হসপিটালে ভর্তি করা হয় তাকে। হেনস্থার শিকার সোহেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনফরমেশন সায়েন্স এন্ড লাইব্রেরি ম্যানেজম্যান্ট বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।

অভিযোগ উঠেছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের একটি স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে সোহেলকে নীল দিঘী পাড়ে ডেকে পাঠায় ফলিত গণিত বিভাগ তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সাকিবুল হাসান দূর্জয়। পরে সোহেল তার সহপাঠীদের নিয়ে সেখানে গেলে তার দেওয়া স্ট্যাটাসের জন্য জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

আরও পড়ুনঃ নোবিপ্রবিতে জুনিয়র কর্তৃক হেনস্থা, সিনিয়রের আত্মহত্যা চেষ্টা

সোহেলের সহপাঠীরা জানান, এ সময় দুর্জয়ের প্রেমিকা মারিয়াম সিদ্দিকা জেমি নামে প্রথম বর্ষের এক শিক্ষার্থী তার সিনিয়র সোহেলকে কান ধরিয়ে হাঁটায় এবং লাঞ্ছনা করে। জেমি ও সোহেল একই বিভাগের শিক্ষার্থী। এ সময় সোহেল তার দেওয়া স্ট্যাটাসের জন্য ক্ষমা চাইলেও তার কথা গ্রাহ্য না করে দুর্জয় তার দলবল নিয়ে সোহেলের ওপর হামলা চালায়।

সহপাঠীরা আরও জানান, সোহেল দুর্জয় ও জেমির পেছন থেকে তোলা একটি অস্পষ্ট ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোষ্ট করে। এই ছবিকে কেন্দ্র করে সোহেলের ওপর ক্ষোভে ফেটে পড়ে দুর্জয় ও তার সঙ্গীরা।

সহপাঠীরা জানান, জুনিয়র কর্তৃক লাঞ্ছনা সহ্য করতে না পেরে বিকেলে সোহেল আত্মহত্যা চেষ্টা করেন। তাকে অজ্ঞান হয়ে পড়ে থাকতে দেখে তার সহপাঠীরা তাকে নোয়াখালী সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। দীর্ঘ ৫ ঘন্টা পর রাতে জ্ঞান ফিরলেও তিনি কোনো কথা বলেননি।

এই হামলার ঘটনায় সাকিবুল হাসান দূর্জয়ের সঙ্গে সমাজকর্ম ২০১৮-১৯ বর্ষের সোহান, বাংলা বিভাগের তানভীর মাহতাব সামিসহ অজ্ঞাতনামা প্রায় ১০ জন ওই হামলায় অংশ নেন বলে সোহেলের সহপাঠীরা অভিযোগ করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনফরমেশন সায়েন্স এন্ড লাইব্রেরি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের একাধিক শিক্ষার্থী বলেন,২ দিনে তদন্ত রিপোর্ট দেওয়ার কথা থাকলেও ১৩ দিনে তদন্ত রিপোর্ট দেয়নি তদন্ত কমিটি। আর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া তো অনেক পরের কথ। এই জন্য অামরা বিভাগের শিক্ষার্থী হিসেবে খুবই উদ্বিগ্ন। এমনকি বিভিন্ন জায়গা থেকে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর সাথে প্রশাসনের আতাত হওয়ার খবরও শোনা যায়।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে তদন্ত কমিটির প্রধান অনুজীব বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সঞ্জয় কুমার মুখার্জি বলেন,আমরা তদন্ত কমিটির চিঠি পেয়েছি ৫/৬ দিন আগে।ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী অসুস্থ থাকায় আমাদের তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে দেরী হয়েছে।তবে সোমবারে অভিযুক্ত এবং ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের ডাকা হবে।এরপর খুব শিগগিরই আমরা তদন্ত রিপোর্ট জমা দিয়ে দিবো।

এইদিকে এর আগেও র‍্যাগিং ,মারধর,শিক্ষকদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণের জন্য বেশ কয়েকটি ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন হলেও তদন্ত রিপোর্ট কিংবা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে শিক্ষার্থীদের।

The Campus Today YouTube Channel

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
themesbazar_creativenews_II7
All rights reserved © 2019-20 The Campus Today