উচ্চ শিক্ষার আশা নিয়ে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিয়েছিলেন বান্দরবন জেলার শৈহলা মারমা। ভর্তির সুযোগ ও পেয়েছেন । কিন্তু অর্থের অভাবে সে আশা প্রায় ব্যর্থ হচ্ছিলো। বৃদ্ধ বাবার পক্ষে টাকা জোগাড় করা সম্ভব না হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার আশা প্রায়ই ছেড়ে দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তার এই দুর্দিনে শৈহলা মারমার ভর্তির দায়িত্ব নিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক।
মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে আইন বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহকারী অধ্যাপক বাদশা মিয়া ওই শিক্ষার্থীর কাছে ভর্তির টাকা হস্তান্তর করেন। এরপর শৈহলা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ স্টাডিজ বিভাগে ভর্তি হন।
বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পেরে আবেগে কান্নায় ভেঙে পড়েন শৈহলা মারমা।
শৈহলা মারমা বলেন, ‘আমি খুব চিন্তায় ছিলাম। ভর্তি হতে পারছিলাম না। বাবা বৃদ্ধ হয়ে গেছেন, কোনো কাজ করতে পারেন না। ধার করে টাকা এনে মৌখিক পরীক্ষায় উপস্থিত হয়েছি। বাড়িতে জানিয়েছিলাম ভর্তির টাকা দেওয়ার জন্য। কিন্তু একসঙ্গে এতো টাকা দেওয়া সম্ভব নয় বলে জানালো পরিবার থেকে। বিশ্ববিদ্যালয়ে বসে কান্না করছিলাম। আমার কান্না দেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাদশা মিয়া স্যার সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিলেন। সঙ্গে আরো কয়েকেজন শিক্ষকও সহযোগীতা করতে এগিয়ে আসেন। আমি স্যারদের কাছে আজীবন কৃতজ্ঞ থাকবো।’
আইন বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহকারী অধ্যাপক বাদশা মিয়া বলেন, ‘আমি দূর থেকে শৈহলা মারমাকে কান্না করতে দেখছিলাম। কৌতূহল মেটাতে জিজ্ঞেস করলাম কেনো কান্না করছো। আমাকে জানালো টাকার অভাবে সে ভর্তি হতে পারছে না। আমি বিষয়টি দ্রুত অন্যান্য শিক্ষকদের জানাই। পরে তাদের সঙ্গে আলোচনা করে ভর্তির টাকার ব্যবস্থা করি।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ আব্দুস সালাম বলেন, ‘বাদশা মিয়া স্যার আমাদেরকে বিষয়টি জানালে শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. নেওয়াজ মোহাম্মদ বাহাদুর স্যারের সহযোগিতায় ভর্তির টাকার ব্যবস্থা করি। আগামী দিনে এই শিক্ষার্থীর সফলতা আমরা কামনা করছি।’
নোবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. নেওয়াজ মোহাম্মদ বাহাদুর বলেন, ‘মেধাবীরা কখনো শিক্ষার ক্ষেত্রে আটকে যায় না। কেউ না কেউ তাদের পাশে থাকেই। শিক্ষার্থী শৈহলা মারমার যে কোনো প্রয়োজনে শিক্ষকরা তার পাশে থাকবে।’