ক্যাম্পাস টুডে ডেস্কঃ নাম জারিন তাসনিম দিয়া। দিয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী। দেশে করোনার প্রাদুর্ভাবে সবকিছু বন্ধ হয়ে গেলে একরকম ঘরবন্দী দিন কাটাচ্ছিলেন তিনি। লম্বা অবসর কাজে লাগাতে মুসলিমদের ধর্মগ্রন্থ আল কোরআন হাতে লিখতে শুরু করেন তিনি। দেড় বছর লেখার পর ৩০ পারার ১১৪টি সুরাই লিখে শেষ করেন তিনি।
তিনি হাতে লিখেছেন গোটা কোরআন শরিফ। মহাগ্রন্থ আল কোরআনকে ভালোবেসে এ অসাধ্য সাধন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য সাবেক শিক্ষার্থী জারিন তাসনিম দিয়া। পাণ্ডুলিপি থেকে এরইমধ্যে তিনি পূর্ণাঙ্গ কোরআন বাঁধাইও করেছেন। দেশের ৫০০টি মডেল মসজিদে হাতে লেখা এ পবিত্র গ্রন্থ উপহার হিসেবে দিতে চান দিয়া।
প্রথম দেখায় বোঝার উপায়ই নেই এটি ছাপা অক্ষর না, হাতের লেখা। দিয়া জানান, এই কাজে সবচেয়ে বেশি উৎসাহ দিয়েছেন তার বাবা-মা। এ প্রসঙ্গে দিয়া বলেন, আমি কোরআন পড়তে জানি একদিন কোরআন পড়ছি তখন আমার আব্বু আমাকে বললেন যেন তাকে আয়াতুল কুরছি লিখে দিই তিনি সেটি ঘরের সামনে টাঙিয়ে রাখবো। আমি যখন দেখে দেখে লিখলাম তখন বাবা বললেন যে, তোমার হাতের লেখা তো সুন্দর আছে, তুমি পুরো কোরআনই লিখতে পারো।
দিয়া বলেন, আমি যেখানেই যেতাম আমার কোরআন, কাগজ ও কলম সাথে করে নিয়ে যেতাম। এক পর্যায়ে ভাল লাগা তৈরি হলো।
হাতে লেখা শেষ হলে ৩০ জন হাফেজের সহযোগিতায় সম্পাদনার কাজ করা হয়। পরে তা বাঁধাই করে রূপ দেয়া হয় পূর্ণাঙ্গ কোরআন শরিফে। এ প্রসঙ্গে দিয়া বলেন, প্রতিজন এক পারা করে দেখেছেন। তারা যে ভুলগুলো দেখালেন সেগুলো পরে বাসায় এসে মার্ক করে ঠিক করে নিয়েছি।
প্রায় সাড়ে ১৪’শ বছর আগে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর ওপর কোরআন নাজিল হলে এভাবেই হাতে লিখে রাখতেন সাহাবারা। দিয়া চান, তার হাতে লেখা পবিত্র এই গ্রন্থ বিতরণ করবেন দেশের বিভিন্ন মসজিদ-মাদ্রাসায়। দিয়া বলেন, বাংলাদেশের যতো মডেল মসজিদ ও মাদরাসা আছে সেগুলোতে বিনা মূল্যে আমার এই কোরআন আমি উপহার হিসেবে পাঠাবো। শিক্ষাজীবনে কখনও মাদ্রাসায় পড়েননি; তবুও মহান আল্লাহ তায়ালার বাণীকে ভালোবেসে দিয়ার এমন কাজ অন্যরকম নজির হয়ে থাকবে।#সূত্রঃযমুনা টিভি অনলাইন।