তথ্যপ্রযুক্তি মামলায় গ্রেপ্তার রাবি সাংবাদিক বাপ্পীর মুক্তি দাবি সাংবাদিকদের

 

রাবি প্রতিনিধি

তথ্য ও প্রযুক্তি আইনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার দৈনিক যুগান্তরের প্রতিনিধি মানিক রাইহান বাপ্পীকে নিশঃর্ত মুক্তির দাবি জানিয়েছেন গণমাধ্যমকর্মীরা।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রোববার দুপুর ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে মানববন্ধন করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মরত সাংবাদিকরা।

মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিকরা দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি সাইফুল আলম, রাজশাহীর স্থানীয় সোনালী সংবাদের সম্পাদক লিয়াকত আলীসহ ৮ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।

রাবি প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক বেলাল হোসাইন বিপ্লবের সঞ্চালনায় মানববন্ধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মরত সাংবাদিকরা।

এসময় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার্স ইউনিটি’র সভাপতি আরাফাত রহমান বলেন, এধরণের মামলা গোটা সাংবাদিক মহলের জন্য হুমকি স্বরূপ। মূলত অভিযুক্তদের কর্মকাণ্ড আড়াল করার চেষ্টা থেকে ক্যাম্পাসে কর্মরত সাংবাদিকদের হয়রানি করাই এ মামলার উদ্দেশ্য বলে মনে করি।

এভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো পরিসরে সাংবাদিকেরা পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে যদি হয়রানির শিকার হতে হয় তবে, অন্যান্য ক্যাম্পাসগুলোতেও সাংবাদিকতার পথ আরো সংকুচিত হয়ে যাবে। কাজের পরিবেশ রুদ্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হবে। তাই দ্রুত এই মামলাটি প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি একই সাথে গ্রেপ্তার মানিক রাইহান বাপ্পীর নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি।

সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহিন আলম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ সবসময়ই সাংবাদিকদের নিজেদের স্বার্থে ব্যবহারের চেষ্টা করেন। কোন সাংবাদিক শিক্ষকদের স্বার্থের বিপরীতে অবস্থান নিলেই তাকে হেয় প্রতিপন্ন ও হয়রানি করতে উনারা উঠেপড়ে লাগেন।

এ ঘটনায় প্রেসক্লাবের সভাপতি সালমান শাকিল বলেন, শুরু থেকেই আমরা আইনের বিরোধিতা করে আসছি। ধারায় অপরাধ ও আইনের সামঞ্জস্যতা নেই। আমরা চাই অবিলম্বে সাংবাদিকদের হয়রানিমূলক এই আইন বাতিল করা হোক। আর দ্রতই সাংবাদিক মানিক রাইহান বাপ্পীকে নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়া হোক।

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন রাবি প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি আকরাম হোসাইন, রাবি রিপোর্টার্স ইউনিটির সহ-সভাপতি হারুন অর রশিদ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আহমেদ ফরিদ, রাবি সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহিন আলম, সাবেক সভাপতি সুজন আলী প্রমুখ।

উল্লেখ্য যে , ২০১৫ সালের অক্টোবরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলে সিট বরাদ্দ দিতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অনৈতিকভাবে চাঁদা দাবির অভিযোগ ওঠে ওই হলের আবাসিক শিক্ষক ও কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক কাজী জাহিদের বিরুদ্ধে।

সেই ঘটনায় রাবির আবাসিক হলে শিক্ষকের বিরুদ্ধে ‘সিট বরাদ্দে চাঁদা দাবির অভিযোগ’ শিরোনামে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। গণমাধ্যমে ওই শিক্ষকের কর্মকাণ্ড নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর শিক্ষক ক্ষুব্ধ হয়ে বর্তমান ৫৭ ধারায় মামলা দায়ের করেন।

এ ঘটনায় গত ১৩ নভেম্বর সন্ধ্যায় চাপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জের নিজ বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় সাংবাদিক মানিক রাইহান বাপ্পীকে। পরে ১৪ নভেম্বর আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *