মঙ্গলবার, ২১ মার্চ ২০২৩, ১০:৪৯ পূর্বাহ্ন

তীব্র আবাসন সংকটে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা

  • আপডেট টাইম বৃহস্পতিবার, ২৬ জানুয়ারী, ২০২৩, ১০.১৮ পিএম
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি)

বেরোবি প্রতিনিধিঃ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি)। প্রতিষ্ঠার ১৫ বছর কেটে গেলেও তীব্র আবাসন সংকটে ভুগছে শিক্ষার্থীরা। আবাসন সংকটের কারণে অতিরিক্ত টাকায় মেস ও বাসা ভাড়া গুনতে হচ্ছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির সাথে সাথে মেস মালিক ও বাসা মালিকেরা ভাড়া বৃদ্ধি করেছে।

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে ছয়টি অনুষদের অধীনে ২২ টি বিভাগে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় দশ হাজার। ক্যাম্পাসে আবাসিক হল রয়েছে ৪টি। বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি আবাসিক হল মিলে আসন সংখ্যা মাত্র ৯৩৭টি। এর মধ্যে ছেলেদের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে সর্বাধিক আসন ৩০৪টি ও শহীদ মুখতার ইলাহী হলে ২৪০টি। আর মেয়েদের জন্য একমাত্র শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে ৩৪২টি আসন রয়েছে। মোট শিক্ষার্থীর তুলনায় এ আসন সংখ্যা অতি নগণ্য। তার মধ্যে একটি ছাত্রী হল ( শেখ হাসিনা হল) নির্মাণাধীন অপেক্ষায় রয়েছে। বর্তমানে আবাসিক সংকটই বিশ্ববিদ্যালয়ে বড় সমস্যা। শিক্ষার্থীদের মধ্যে আবাসিক হলে থাকার সুযোগ পেয়েছেন মাত্র ১০ শতাংশ। ফলে ৯০ শতাংশ শিক্ষার্থীই আবাসিক সুবিধাবঞ্চিত। এদের অনেককেই নগরীতে বাসা ভাড়া বা মেস করে থাকতে হচ্ছে। অনেকের পক্ষে মেসে থাকা খাওয়া খরচ জুগিয়ে পড়ালেখা করা দুঃসাধ্য ও কষ্টকর হওয়ায় বিপাকে রয়েছেন নিম্নবিত্ত পরিবার থেকে আসা শিক্ষার্থীরা।

আবাসিক হলে অবস্থান করা একাধিক শিক্ষার্থী সাথে কথা বলে জানা যায় ,একটি রুমে শিক্ষার্থী থাকার কথা চারজন সেখানে আমরা সাতজন এক রুমে থাকছি। এতে করে পড়াশোনার জন্য ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। পরিবার থেকে তেমন আর্থিক সুবিধা না থাকায় কষ্ট হলেও গাদাগাদি করে থাকছি।

কয়েকজন অনাবাসিক শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলে জানা যায়, আমরা হলে সিট না পেয়ে মেসে উঠেছি। আগে মেসে সবমিলিয়ে খরচ হতো ছয় হাজার টাকা। কিন্তু বর্তমানে সকল পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় আরও অতিরিক্ত দেড় হাজার থেকে দুই হাজার টাকা বেশি খরচ হচ্ছে।

এদিকে ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে নতুন শিক্ষার্থীর শুরু হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আবাসন ব্যবস্থা পর্যাপ্ত না থাকায় সকলকে উঠতে হবে ক্যাম্পাসের বাইরের মেসগুলোতে। বিপুল পরিমাণ শিক্ষার্থীর আবাসন সুবিধা না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন এলাকায় শতাধিক আবাসিক মেস গড়ে উঠেছে। যেখানে মেস মালিকেরা তাদের ইচ্ছেমতো বাড়তি টাকা আদায় করছেন। এ মেসগুলোতে গাদাগাদি করে থাকছে শিক্ষার্থীরা। এতে প্রতিনিয়ত নানান বিপত্তির শিকার হতে হচ্ছে তাদের। 

অতিরিক্ত ভাড়া আদায়, অপরিচ্ছন্ন সেমিপাকা ঘর, পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ সরবরাহের অভাব, নিরাপত্তাসহ বিশুদ্ধ পানি ও স্যানিটেশন ব্যবস্থার অভাবে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে মেসে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের। ফলে তাদের পড়ালেখায় ব্যাঘাত ঘটছে। এর মধ্যেও মেসের চড়া মূল্য ও খাবার বিল দিতে অতি কষ্টে দিন অতিবাহিত করছেন গরিব শিক্ষার্থীরা। 

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সম্রাট বলেন, হলে এভাবে একবিছানায় দুজন থাকা খুবই কষ্টকর। ঠিকমতো ঘুমাতে পারি না। একজন গোসলে গেলে আর একজনকে বসে থাকতে হয়। এভাবে সিরিয়াল দিয়ে সবকিছু করতে হয়।

শহীদ মুখতার এলাহী হলের শিক্ষার্থী সুজন আলী বলেন, ৪টি টেবিলে ৬জন মানুষ, কীভাবে পড়া যায় । পালা করে ঘুমাতে হয়। একজন পড়ে আর একজনকে বসে থাকতে হয় । না হলে রিডিং রুমে যেতে হয় কিন্তু রিডিং রুমেও সিট স্বল্পতায় বসার জায়গা পাওয়া যায়। না।

ছাত্রী হলেও একই সমস্যা। সবাইকে ডাবলিং করে থাকতে হচ্ছে। খাওয়া, গোসল, ঘুম সবকিছুই পালা করে করতে হচ্ছে। শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের শিক্ষার্থী (নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক ) বলেন, একরুমে আটজন থাকা, ছোট একবেডে দুজন গাদাগাদি করে থাকা লাগে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট বলেন, “নতুন করে হল বরাদ্দ নতুন একটি হল নির্মাণ করতে অনেক বড় বাজেটের প্রয়োজন এটি ইউজিসি বা সরকার না দিলে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব অর্থায়নে সম্ভব না বিশ্ববিদ্যালয় হতে ইউজিসিতে প্রস্তাবনা পাঠানোর কথা। যেহেতু গ্লোবাল ইকোনমিক ক্রাইসিস চলছে যদি বরাদ্দ আসে তবে হল নির্মাণ করা সম্ভব আমাদের হল নির্মাণ প্রয়োজন।বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনফ্রাস্ট্রাকচার গঠনের জন্য সরকারের বিশেষ একটা সুদৃষ্টি আহবান করব। এই অঞ্চলের প্রভাবশালী মহল বিশেষ সুদৃষ্টির দিলে এটা আরও ত্বরান্বিত হবে।”

The Campus Today YouTube Channel

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
themesbazar_creativenews_II7
All rights reserved © 2019-20 The Campus Today