কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিঃ জাতীয় কবি কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ওয়ালিদ নিহাদের উপর হামলার ঘটনায় ৪ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বোর্ড মিটিংয়ের সিদ্ধান্তে তাদের সাময়িক ভাবে বহিষ্কার এবং ৭ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন শাস্তির সুপারিশ করা হয়।
সোমবার বিকাল ৩ টায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আইন শৃংঙ্খলা বোর্ড মিটিং বসে। বোর্ড মিটিং চলে একটানা রাত ১০:৩০ পর্যন্ত। এরপর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত প্রদান করা হয়।
এই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী লোকপ্রশাসন ও সরকার পরিচালন বিদ্যা ২০১৬-১৭ বিভাগের সামিউল হক হিমেল, ফোকলোর বিভাগের ২০১৫-১৬ ব্যাচের আবু নাঈম আব্দুল্লাহ (যাযাবর নাঈম), লোকপ্রশাসন ও সরকার পরিচালন বিদ্যা ২০১৪-১৫ বিভাগের মোমেন সরকার, লোকপ্রশাসন ও সরকার পরিচালন বিদ্যা ২০১৮-১৯ বিভাগের তানভির আহমেদ তুহিনকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সাময়িক ভাবে বহিষ্কার করে।
বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার বরাবর কেন তাদের স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না তার জবাব আগামী ১৫ (পনের) দিনের মধ্যে জানতে চেয়ে কারণ দর্শানোর নোটিস ইস্যুর সুপারিশ করেছে প্রশাসন। সেইসঙ্গে তাদের স্ব-স্ব হলের বরাদ্দকৃত সিট বাতিল করার সুপারিশ করা হয়।
এছাড়াও বৈঠকে শিক্ষার্থীদের মধ্যে একজনকে সতর্কীকরণপত্র ইস্যু ও হলের বরাদ্দকৃত সিট বাতিল করা, তিনজন শিক্ষার্থীকে সতর্কীকরণ পত্র ইস্যু, তিনজন শিক্ষার্থীর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ৩২৪ নং কক্ষের বরাদ্দকৃত আসন বাতিলের সুপারিশ করা হয়।
এ ঘটনায় জড়িত শিক্ষার্থীরা ভবিষ্যতে এরূপ কার্যকলাপে যুক্ত হলে এবং গৃহীত প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের প্রতিক্রিয়া হিসেবে কোন বিশৃংখলা সৃষ্টি করলে কর্তৃপক্ষ কর্তৃক কঠোর প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের বৈঠকে সুপারিশ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. উজ্জ্বল কুমার প্রধান বলেন, হামলাকারীর ৪ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কারের বিষয়টি ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন শৃংঙ্খলা কমিটির সিদ্ধান্তে জানানো হয়েছে।বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা বোর্ড এর এই সিদ্ধান্ত মেনে নেবেন বলে প্রত্যাশা করছি।
শাস্তির বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, আমার সভাপতিত্বে সভাটি হয়েছে। তদন্তের আলোচনা পর্যালোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আইন ও নিয়ম মেনেই পরিচালিত হবে। অন্যায় করলে কেউ ছাড় পাবে না। সেখানে প্রশাসন কঠোর হবেই।এভাবেই চলবে এখন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়।
কারণ দর্শানোর নোটিশ সহ প্রশাসনিক চিঠি ইতোমধ্যে পাঠানো হয়ে গেছে সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীদের কাছে বলে নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. হুমায়ুন কবীর।
এদিকে নির্যাতনের স্বীকার ওয়ালিদ নিহাদের বড় ভাই আব্দুল আজিজ জিহাদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তার সিদ্ধান্ত নেবে।আমরা চূড়ান্ত সিদ্ধান্তর দিকে তাকিয়ে আছি। পাশাপাশি আমার ভাই যেনো নিরাপদ ভাবে শিক্ষা-কার্যক্রমে অংশ নিতে পারে সেটিই চাই।
শাস্তির বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল হাসান রাকিব বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তার জায়গা থেকে সিদ্ধান্ত দিয়েছে। আমরাও ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছি। আজ মঙ্গলবার উত্তর দেয়ার সময় শেষ হবে। এরপরই সংগঠনের জায়গা থেকে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং আমাদের অবস্থান জানানো হবে।
বিচারের দাবীতে আন্দোলন করা শিক্ষার্থীদের থেকে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে রাশেদ বলেন,আমরা আগে নিজেরা বসে আলোচনা করবো।তারপর গণমাধ্যমকে আমাদের অবস্থান জানাবো। ৪ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কাররের ঘটনায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।