বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি :বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় গেটের পাশে বসে চা খাচ্ছিলাম হঠাৎ বন্ধু মমিনুল হাসান বলে বন্ধু আমার অনেক দিনের ইচ্ছা আমার বিভাগের সেরা রেজাল্ট প্রাপ্ত তিনজনকে একটা সংবর্ধনা প্রদান করবো। ব্যতিক্রমধর্মী চিন্তার কথা শুনে তাকে জিজ্ঞাস করি এত চিন্তা থাকতে তুমি এই বিষয়ে কেন চিন্তা করছো? উত্তরে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের ১ম ব্যাচের শিক্ষার্থী কাজী মমিনুল হাসান বলেন, মানুষের অনেক ধরনের শখ থাকে। আর এটা আমার একটা অনেক দিনের ইচ্ছে ছিল। আমি চাই তাদের এই প্রাপ্তি আমি ও আমার বিভাগের সকলে মিলে একসাথে উদযাপন করি। কারণ তারা আমাদের বিভাগের গর্ব। হয়তো তারা একসময় দেশের জন্য গর্বের কেউ হবেন।
বৃহস্পতিবার ২৫ নভেম্বর সকাল ১১ টায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের ১ম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা ক্লাসে তাদের মিড টার্ম পরীক্ষা দিচ্ছিলেন। পরীক্ষা চলাকালীন সময় বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আসাদুজ্জামান নিউটন শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, পরীক্ষা শেষে যেন কেউ ক্লাস ত্যাগ না করেন। কারণ বিকেলে একটা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। বন্ধুদের মাধ্যমে জানতে পারলাম পরীক্ষা শেষে কাজী মুমিনুল হাসানের পক্ষ থেকে ১ম ব্যাচের সেরা তিন শিক্ষার্থীকে সংবর্ধনা প্রদান করা হবে। এই বিষয়ে অনেক আগেই বিভাগটির বিভাগীয় প্রধান মোহাম্মদ ইরফান আজিজ এর সঙ্গে তিনি কথা বলেছিলেন। দুপুর ১২ টার পর থেকে বিভাগের মুট কোর্ট কক্ষটিকে বেলুন দিয়ে সাজানো হয়। সাজানো এই কক্ষটিতে শিক্ষার্থীরা অনুষ্ঠানের জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। এই দিন বেলা ৩ টার অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছেন, আইন ও বিচার বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মোহাম্মদ ইরফান আজিজ, সহকারী অধ্যাপক আসাদুজ্জামান নিউটন, প্রভাষক মানির আলম, অরিন্দম বিশ্বাস ও উম্মে হাবিবা মৌ।
আরও পড়ুনঃনিয়মিত অফিস না করেও ছয় মাসের চুক্তি বাড়লো মেডিকেল অফিসারের
বিভাগের ১ম ব্যাচের শিক্ষার্থী সাত্ত্বিক মাহবুব এর সঞ্চালনায় এসময় শিক্ষকগণ বিভাগের শুরুর ঘটনাকে স্মৃতিচারণ করে বলেন, এক সময় আমাদের বিভাগের ক্লাস নেওয়ারও কক্ষ পর্যন্ত ছিল না। আজ কক্ষ পেয়েছি, সেমিনার লাইব্রেরীও পেয়েছি। এতদিন আপনারা পড়াশোনার মধ্যে থাকলেও চিন্তা মুক্ত ছিলেন। কিন্তু স্নাতকোত্তর শেষ হলে আপনাদের নতুন করে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে হবে। এই সময় মানুষের জীবনে সবচেয়ে কঠিন সময়। এই সময়ে ধৈর্য ধরে চাকরির প্রস্তুতি গ্রহণ করবেন। নিজের মধ্যে আত্মবিশ্বাস রাখবেন যে আপনি এই কঠিন সময় অতিক্রম করতে পারবেন। কোন ভাবেই হতাশ হবেন না। কারণ হতাশা সফলতা অন্তরায়। শুধু আজকের বিভাগ সেরা তিন জন নয় বরং আপনারা প্রত্যেকে যাতে আপনাদের সর্বোচ্চ অবস্থানে পৌঁছাতে পারেন সেই প্রত্যাশা করছি। এ সময় তারা মুমিনুল হাসানের এমন উদ্যোগের জন্য তাকে সাধুবাদ জানান।
আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে বিভাগের শিক্ষকগণ ১ম ব্যাচের সেরা তিন শিক্ষার্থী তানিয়া আক্তার, ফারজানা শাম্মী ও মোহাম্মদ নূরে আলম সিদ্দিকীকে ক্রেস্ট প্রদান করেন। পুরস্কারপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, আজকের এমন প্রাপ্তি তাদের জীবনের অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে এবং এই অনুপ্রেরণাকে কাজে লাগিয়ে তারা ভবিষ্যত জীবনে সফলতা লাভ করবেন বলে প্রত্যাশা করেন। সংবর্ধনা অনুষ্ঠান শেষে শিক্ষার্থীরা ঐ কক্ষেই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।