বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধিঃ গত শুক্রবার (২৪ ডিসেম্বর) বশেমুরবিপ্রবির আইন বিভাগের শিক্ষার্থী, ইংরেজি দৈনিক ডেইলি সান পত্রিকার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি এবং বশেমুরবিপ্রবি সাংবাদিক সমিতির সভাপতি ফাতেমা-তুজ-জিনিয়াকে গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসকের বাসভবনের সামনের সড়ক থেকে ২ মোটরসাইকেল আরোহী কর্তৃক অপহরণের চেষ্টার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বশেমুরবিপ্রবি সাংবাদিক সমিতি (বশেমুরবিপ্রবিসাস)। একই সঙ্গে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানানো হয়েছে।
আজ(রবিবার) সকালে এক বিবৃতিতে বশেমুরবিপ্রবিসাসের সাধারণ সম্পাদক মাইনউদ্দিন পরান এ দাবি জানান।
বিবৃতিতে মাইনউদ্দিন পরান বলেন, ‘দেশের সাংবাদিকতায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে ক্যাম্পাস সাংবাদিকতা। পেশাদারিত্ব ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে ক্যাম্পাসগুলোতে কর্মরত সংবাদকর্মীদের ভূমিকা প্রশংসনীয়। বশেমুরবিপ্রবি সাংবাদিক সমিতির সদস্যবৃন্দ বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার মাধ্যমে দেশের ক্যাম্পাস সাংবাদিকতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। কিন্তু আমরা আশঙ্কাজনক ভাবে প্রত্যক্ষ করছি দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে আপোষহীন ভূমিকার জন্য এ সংগঠনের সদস্যদের উপর বিভিন্ন সময়ে স্বার্থান্বেষী মহল কর্তৃক নগ্ন ভাবে হামলা ও নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে৷
সর্বশেষ বশেমুরবিপ্রবি সাংবাদিক সমিতির সভাপতি ফাতেমা-তুজ-জিনিয়াকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। ইতিপূর্বে বশেমুরবিপ্রবিসাস এর সাবেক সভাপতি শামস জেবিন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শাফিউল কায়েস, সাবেক দপ্তর সম্পাদক তাওহীদ ইসলাম, ক্যাম্পাস সাংবাদিক মুরাদ হোসেনসহ বেশ কয়েকজন সাংবাদিক বিভিন্ন সময়ে হামলার শিকার হয়েছেন।
গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসকের বাসভবনের সামনে কঠোর নিরাপদ এলাকায় ফাতেমা-তুজ-জিনিয়ার অপহরণের চেষ্টার ঘটনা ও বিভিন্ন সময়ে ক্যাম্পাস সাংবাদিকদের উপর হামলার ঘটনা যা খুবই উদ্বেগজনক।
এ ঘটনায় বশেমুরবিপ্রবি সাংবাদিক সমিতি পরিবার শঙ্কিত। আমরা ধারণা করছি বিভিন্ন অনিয়মের বিরুদ্ধে ফাতেমা-তুজ-জিনিয়া সহ সাংবাদিক সমিতির সাংবাদিকবৃন্দের আপোষহীন ভূমিকার জন্য সাংবাদিকদের একটি প্রচ্ছন্ন হুমকি প্রদানের জন্য স্বার্থান্বেষী মহল কর্তৃক এমন ঘৃণ্য অপচেষ্টার ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে।
বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, দুর্বৃত্ত কর্তৃক এ ধরনের অপহরণের চেষ্টার ঘটনা স্বাধীন সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে গণমাধ্যম কর্মীদের মাঝে মনস্তাত্ত্বিক চাপ সৃষ্টি করবে। এটি স্বাধীন সাংবাদিকতার ক্ষেত্রেও চরম প্রতিবন্ধকতা। গণতান্ত্রিক সমাজে এ ধরনের ঘটনা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
আরো পড়ুনঃ গোপালগঞ্জে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে অপহরণের চেষ্টা
বর্তমানে দেশে সাংবাদিক লাঞ্ছনা ও হুমকি প্রদান নিত্যদিনের ঘটনায় পরিণত হয়েছে। গণমাধ্যম কর্মীদের উপর প্রতিনিয়ত পেশিশক্তির এমন নগ্ন প্রয়োগে নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছেন প্রতিটি গণমাধ্যম কর্মী। এমনটি চলতে থাকলে এবং এর সাথে জড়িত ব্যক্তিরা বারবার পার পেয়ে যেতে থাকলে দেশে মুক্ত সাংবাদিকতার চর্চা ব্যাপকভাবে বাধাগ্রস্ত হবে বলে মনে করি। আমরা প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর কাছে দাবি জানাবো সাংবাদিক ফাতেমা-তুজ-জিনিয়াকে অপহরণের চেষ্টার ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুততম সময়ের মধ্যে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করে মুক্ত সাংবাদিকতার পথ প্রশস্ত করার জন্য।
সেইসাথে আমরা দৃঢ় কণ্ঠে বলতে চাই, গণমাধ্যম কর্মীরা মামলা হামালার ঝুঁকি মাথায় নিয়েই অনিয়ম দুর্নীতির বিরুদ্ধে বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রেখে কলম চালিয়ে এসেছে এবং এ ধারা অব্যাহত রাখবে। কোনো ধরনের হামলা, হুমকি কিংবা অপহরণের চেষ্টা আমাদের কলম থামিয়ে দিতে পারবে না।