শাফিউল কায়েস
উচ্চশিক্ষায় বিভিন্ন জরিপে যুক্তরাজ্যের নেতৃত্বস্থানীয় প্রকাশনা টাইমস হায়ার এডুকেশন ২০২১ সালের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তালিকা করেছে, যা দেখে শিক্ষার্থীরা ঠিক করতে পারে সে বছর কোথায় পড়বে তারা ৷ তবে প্রকাশিত এই তালিকায় ১০০০ এর মধ্যে স্থান নেই বাংলাদেশের কোন বিশ্ববিদ্যালয় । তবে এই তালিকায় তালিকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান ১০০১ নম্বরে ৷
চারটি মানদণ্ডে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মূল্যায়ন করে তৈরি করা হয়েছে টাইমস হায়ার এডুকেশন ২০২১ এর এই তালিকা ৷ চারটি হল: শিক্ষা প্রদান, গবেষণা, জ্ঞান বিতরণ এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ড ৷ এদিকে টানা পাঁচ বছর ধরে শীর্ষস্থানে রয়েছে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় – University Oxford বিশ্ববিদ্যালয় ৷
১. অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় – University Oxford
মজার ব্যাপার হলো অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় কবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল কারো জানা নেই। তবে ১০৯৬ সাল থেকে অক্সফোর্ড নামে এই বিদ্যাপীঠ শিক্ষাদানের প্রমাণ পেয়েছেন ঐতিহাসিকেরা। অক্সফোর্ড ভার্সিটির অ্যালামনাইদের বলা হয় ‘অক্সনিয়ান’। অসংখ্য বিখ্যাত ব্যক্তির শিক্ষাজীবন কেটেছে ইংল্যান্ডের ঐতিহ্যবাহী বিশ্বখ্যাত এই বিদ্যাপীঠে । কমপক্ষে ৪ জন ইংরেজ রাজা, ৮ জন বিদেশি রাজা, ৪৭ জন নোবেল পুরস্কারজয়ী, ২৫ জন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী, ২৮ জন বিদেশি প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী, ৭ জন ‘সেইন্ট’ বা ধর্মযাজক, ১৮ জন ‘কার্ডিনাল’ এবং একজন পোপ পড়েছেন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে।
২. স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় – Stanford University
গবেষণার জন্য বিশ্ব বিখ্যাত স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়। যুক্তরাষ্ট্রের ‘সিলিকন ভ্যালি’র সঙ্গে নিবিড় সম্পর্কযুক্ত এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেরিয়ে এসেছেন দারুণ সফল কিছু মানুষ।
গুগলের দুই প্রতিষ্ঠাতা ল্যারি পেজ ও সের্গেই ব্রিন পড়াশোনা করেছেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ে । যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডিও একসময় ছাত্র ছিলেন স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের। এ ছাড়া গলফ তারকা টাইগার উডস, অভিনেত্রী রিজ উইদারস্পুন, চেলসি ক্লিনটনের মতো ব্যক্তিত্বরা পড়েছেন জেন ও লেল্যান্ড স্ট্যানফোর্ডের প্রতিষ্ঠিত গবেষণার জন্য বিখ্যাত এই বিশ্ববিদ্যালয়ে।
৩. হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় – Harvard University
১৬৩৬ সালে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। হাভার্ড মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়টি ম্যাসাচুসেট্স-এর বোস্টনে অবস্থিত। হার্ভার্ডের একটি পার্থক্য যারা অনেক শৃঙ্খলা মধ্যে শিক্ষক, শিক্ষা, এবং গবেষণা এবং উন্নয়নশীল উন্নয়ন মধ্যে শ্রেষ্ঠত্ব নিবেদিত হয়। বিখ্যাত শিক্ষার্থীদের মধ্যে রয়েছেন বারাক ওবামা, বিল গেটস, কারিনা কাপুর, মার্ক জাকারবার্গ, আবুল মাল আবদুল মুহিত, বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী ।
৪. ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি – California Institute of Technology (Caltech)
ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়টি ক্যালিফোর্নিয়ার প্যাসাডোনায় অবস্থিত । ১৮৯১ সালে প্রতিষ্ঠিত এই বিশ্বখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেছেন এ পর্যন্ত ৩৪ জন নোবেল বিজয়ী। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে নাসার বেশির ভাগ মহাশূন্যযানের ডিজাইন ও কার্যকারিতা দেখাশোনা করা হয়।
৫. ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এমআইটি) – Massachusetts Institute of Technology (MIT)
ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি, ম্যাসাচুসেটসের কেমব্রিজে অবস্থিত একটি বেসরকারি গবেষণা বিশ্ববিদ্যালয়। ভৌত বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিজ্ঞানে গবেষণার জন্য ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (এমআইটি) জুড়ি মেলা ভার। ১৮৬১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। শুধুমাত্র বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তিতে এমআইটি এগিয়ে নয় । এমআইটির প্রায় ২০ শতাংশ স্নাতক একটি ক্রীড়া দলে যোগ দেন, এবং ৩৩টি বিশ্ববিদ্যালয় ক্রীড়ার সাথে এমআইটি বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ আন্তঃকলেজিয়েট অ্যাথলেটিক প্রোগ্রাম নিয়ে গর্ব করে।
এমআইটি থেকে বের হওয়া ছাত্রছাত্রীদের দ্বারা ২৫ হাজার ৮০০ প্রতিষ্ঠান চলছে গোটা পৃথিবীতে। নভোচারী বাজ অলড্রিন, জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনান, খান একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা ও শিক্ষাবিদ সালমান খানের মতো মানুষেরা পড়েছেন বিশ্ব বিখ্যাত এই বিশ্ববিদ্যালয়ে।
এখানে ১৯২৮ সালে বানানো হয় পৃথিবীর অন্যতম প্রাচীন কম্পিউটার ‘হুইয়ার্লউইন্ড ১’। বিশ্ববিদ্যালয়ের জাদুঘরে এখনো তা সংরক্ষিত আছে।