মোঃ সাজেদুল ইসলাম, বেরোবি প্রতিনিধি: বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) মেডিকেল সেন্টারে নানা সময়ে মেডিকেল সেবা না পাওয়ার অভিযোগ তুলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের দাবি বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টার শুধু নামেই সীমাবদ্ধ। মেডিকেল সেন্টারে সেবা না পেয়ে তাদের যেতে হয় বাইরের মেডিকেল, ক্লিনিক, বেসরকারি হাসপাতাল গুলোতে, ফলে তাদের গুনতে হয় অতিরিক্ত টাকা।
সোমবার (২৮ নভেম্বর) সকাল-দুপর সরেজমিনে গেলে দেখা যায় চার জন ডাক্তারের মাত্র ডাক্তার আছে দুই জন। এদিকে সেবা না পেয়ে শিক্ষার্থীরা বাইরে চিকিৎসার উপায় দেখছে।
চিকিৎসা নিতে আসা শিক্ষার্থী এইচ এম রিদয় বলেন, বেশ কিছুদিন থেকে সর্দি কাশিতে ভুগতেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে গেলাম। কোনো ডাক্তার নিজেদের চ্যাম্বারে নেই। কিছু সময় পর একজন ডাক্তার আসলেন আমি চেম্বারে ঢুকলাম। আমি ডাক্তারকে কার্ড বাড়িয়ে বললাম আমার কাশি অনেকদিন থেকে;সর্দিও আছে। "ডাক্তার বললেন,"ওওও কাশি। তিনি আর কিছুই বললেন না এবং আমার আর কোন কথা শুনলেননা। আমাকে ৭ টা ট্যাবলেট দিলেন। যার বাজারমূল্য সর্বসাকুল্যে ১০.৫০ টাকা। আমার কথা হচ্ছে ডাক্তার যদি রোগীর সমস্যার কথাই যদি মন দিয়ে না শুনলেন তাহলে চিকিৎসা কিসের দিবেন?
সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করার পর ক্ষোভ প্রকাশ করে শিক্ষার্থীরা নানা রকম মন্তব্য করেন। ওই পোস্টে তাসকিয়া তাবাচ্ছুম নামে একজন বলেন, সমস্যার কথা বললে ভাবে মিথ্যা বলছি।শ্বাসকষ্ট নিয়ে একদিন গেছিলাম, উল্টা বলে কিছু হয় নাই,গ্যাস্ট্রিকের প্রবলেম। বলে গরম পানি খাওয়াইয়া,গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ দিয়ে রুমে পাঠাইছে।কিডনির সমস্যা ছিলো, তো আমি জানি সেটার চিকিৎসা এখানে না,গেছিলাম শুধু কথা বলতে একটু সমস্যা মনে হচ্ছিল জন্য, ওখানকার ডক্টর সেদিনও বললো গ্যাস্ট্রিকের জন্য খাবার হজম হয় না
নুর এ মাওলা বলেন, কিছু হলেই বলবে রংপুর মেডিকেল এ যান, তাহলে প্রতি সেমিস্টারে মেডিকেল ফি দেই কেন?
মাইদুল ইসলাম নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ভুলে 'মেডিকেল সেন্টার' বলতেছেন আপনারা। সঠিক নাম হবে 'নাপা সেন্টার' পাশাপাশি ডাক্তার ও কর্মচারীর অসৌজন্য আচরণ। মেহেরাজ হোসাইন, একজন মহিলা ডাক্তার বসেন ওনার ব্যবহার একজন চিকিৎসক সুলভ নয় । শ্বাসকষ্ট বা জ্বরের সমস্যা নিয়ে গেলে বলে গরম পানি পান করেন কিংবা শুধু নাপা ট্যাবলেট দিয়ে বিদায় করে দেন ।
সাব্বির রহমান বলেন, একদিন জ্বরের ওষুধ নিতে গেছিলাম , ৩টা নাপা ট্যাবলেট দিছে । জ্বর কমে না দেখে তারপরের দিন ওষুধ নিতে গেছি , ডাক্তার ম্যাম বলে যে কালকেই ওষুধ নিলেন। আজকে আবার কিসের ওষুধ ,, জ্বর কি একদিনে সারে নাকি । ঔষধ না দিয়ে বিদায় করে দিছে ।
শিমু বলেন, সমস্যার কথা টাও ভালোভাবে শোনে না এক মিনিটে বিদায় করতে পারলে বাঁচে এমন ভাব । মেইনলি যেই ওষুধ দরকার সেটা বাইরে থেকে নিতে বলে গ্যাস্ট্রিক এর ওষুধ দিয়ে বিদায় করে।
তরঙ্গ রায় বলেন, একেক জনের ব্যবহার আমেরিকার প্রেসিডেন্টের চেয়েও উচ্চ লেভেলের । যে কয়েকদিন গিয়েছিলাম প্রতিবার তাদের খোশগল্পের জন্য বাইরে দাড়িয়ে সময় নষ্ট করতে হয়েছে । তারা ভুলেই গেছে যে তারা সেবা দেয়ার জন্য ওখানে আছে । আর রইল ওষুধ যাই বলিনা কেন শুধু কাশির ট্যাবলেট দেয় । এর বাইরে কিছু থাকলে বাইরে থেকে নিতে বলে । আহারে গল্প সেন্টার।
পিয়াস হোসাইন বলেন,একবার আমি এবং আমার বন্ধু গেলাম কাশির সমস্যা নিয়ে , আমাদেরকে শেষমেশ হাতে ধরায় দিলো ৭৭ দিন আগেই মেয়াদোত্তীর্ণ ২ বোতল সিরাপ । তাদের সেই অমায়িক সিরাপ খেয়েছিলাম না বলে আজ আমি এবং আমার বন্ধু বেঁচে আছি। চিকিৎসা সেবা অথবা পরামর্শ নিতে গেলে ভুক্তভোগীর আক্রান্ত স্থান পর্যবেক্ষণ করেন না , গিয়ে চেয়ারে বসার সাথে সাথেই ওষুধ লেখা শুরু করেন । উনারা ডাক্তার নাকি কবিরাজ আমার মাথায় ঢুকে না । বিঃদ্রঃ একাধিকবার এরকম হয়েছে , সমস্যা না শুনেই ওষুধ লেখা শুরু।