বিশেষ প্রতিনিধি: গতকাল (বুধবার) Virtual Session এ শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক আবু জাফর আহমেদ মুকুল উপস্থাপনায় আগামির বাংলাদেশ ফেসবুকে পেইজে ”শিক্ষার্থীদের উন্নয়নে ডাকসু ও ছাত্র সংসদের ভূমিকা” শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনায় Panelist হিসেবে সংযুক্ত ছিলেনঃ আসিফ তালুকদার, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক, ডাকসু; উৎপল বিশ্বাস, সহ-সভাপতি, জগন্নাথ হল সংসদ, ঢাবি; সায়মা আক্তার প্রমি, সাধারণ সম্পাদক, রোকেয়া হল সংসদ, ঢাবি এবং ফারজানা ইয়াসমিন অনন্যা, শিক্ষার্থী, ঢাবি।
লাইভ প্রোগ্রামের শুরুতে উপস্থাপক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০১৩–১৪ সেশনের শিক্ষার্থী তানভীর মৃত্যু এবং ২০০১ পরবর্তী সময়ে সেই ভয়াবহ সময়ে তার সহযোদ্ধা, সতীর্থ বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক হেমায়েত উদ্দীন খান হিমুর পিতার মৃত্যুতে শোক প্রস্তাব করেন।
সহকারী অধ্যাপক আবু জাফর আহমেদ মুকুল তাঁর প্রাথমিক বক্তব্যে বলেন, ঢাবি কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদকে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সংসদ বলা হয়।বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক চেতনা ও স্বাধিকার আন্দোলনের অন্যতম সূতিকাগার হল এই ছাত্র সংসদ। প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকেই বাংলাদেশের সামগ্রিক ইতিহাসে গৌরবময় ভূমিকা রাখে এই ছাত্র সংসদ। ১৯৫২’র ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে পরবর্তীতে ৬২’র শিক্ষা আন্দোলন, ৬৯-এর গণ অভ্যুত্থান, ৭১-এর স্বাধীন বাংলাদেশ নির্মাণের লক্ষ্যে রক্তক্ষয়ী জাতীয় মুক্তি সংগ্রাম এবং পরবর্তীতে স্বাধীন বাংলাদেশে স্বৈরাচার ও সামরিকতন্ত্রের বিপরীতে দাঁড়িয়ে গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গঠনে সাহায্য করেছে ঢাবি কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ।
ডাকসুর সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক আসিফ তালুকদার বলেন, ‘শিক্ষার্থী বন্ধুদের চাহিদা অনুযায়ী সাহায্য করছেন বলে উল্লেখ করেছেন । শিক্ষার মান উন্নয়নে উন্নত মানের লাইব্রেরী, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের গবেষনার বিষয়ে মনোনিবেশ করা উচিত বলে তিনি মনে করেন। তবে শিক্ষার মান উন্নয়নে সকল পক্ষকে এক প্লাটফর্মে কাজ করার আহবান জানান। শিক্ষাকে বাস্তবধমী ও জীবনধর্মী করা প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন। ডাকসুর ভিপির নেতৃত্বের ভূমিকা নিয়ে তিনি প্রশ্ন তুলেন।”
ঢাবির জগন্নাথ হল সংসদের সহ-সভাপতি, উৎপল বিশ্বাস বলেন, “করোনাকালীন এই সংকটে হলের এলামনাই এসোসিয়েশন এবং ছাত্র সংসদের ও নিজ উদ্যোগে হলের শিক্ষার্থীদের ও কর্মচারিদের সাহায্য করেছেন বলে উল্লেখ করেন। পাশাপাশি ডাকসু সহযোগিতার কথা উল্লেখ করেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষাকে সার্টিফিকেট সর্বস্ব না করার আহবান জানান। তিনি শিক্ষার মানের সাথে শিক্ষা বান্ধব পরিবেশের উপর গুরুত্বরোপ করেন।”
ঢাবির রোকেয়া হল সংসদের সাধারণ সম্পাদক সায়মা আক্তার প্রমি বলেন, ”করোনাকালীন এই সংকটে রোকেয়া হল সংসদ ব্যক্তিগত, হল সংসদ ও ডাকসুর সবাই মিলে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর মানবিক সাহায্য করেছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন। সাথে সাথে অনলাইন ক্লাস ও পরীক্ষার বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন। নিম্ন আয়ের শিক্ষার্থীদের ইন্টারনেট সুবিধা ও ল্যাপটপ অথবা স্মার্ট ফোন ব্যবস্থা করার জন্য কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেন। পাশাপাশি বিবাহিত মেয়েদের মাদার কেয়ার সেন্টারের কথা উল্লেখ করেন। “
ঢাবির উইমেন এন্ড জেন্ডার স্টাডিজ এর শিক্ষার্থী ফারজানা ইয়াসমিন অনন্যা বলেন, “রোকেয়া হলে জিম ও খাবারের মানের উন্নত করার জন্য হল সংসদের ভূমিকা উল্লেখ করেন। পাশাপাশি করোনাকালীন এই সংকটে শিক্ষার্থীদের পাশে থাকার জন্য ডাকসু ও হল সংসদ ভূয়সী প্রশংসা করেন।”
আলোচনায় উঠে আসে, প্রায় তিন দশক পর ২০১৯ সালের ১১ মার্চ ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত ডাকসুর প্রতিনিধিদের কাছে অনেক চাওয়া-পাওয়া ছিল শিক্ষার্থীদের। তাদের প্রত্যাশা ছিল, দীর্ঘদিনের আবাসন, পরিবহন, শ্রেণিকক্ষ, গ্রন্থাগারসহ বিভিন্ন সংকটের একটি ভালো সমাধান এনে দেবে ডাকসু। বিভিন্ন বিভাগে উন্নয়ন ফি কমানো, সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষা চালু করা, স্যানিটারি ন্যাপকিনের ব্যবস্থা, জো-বাইক চালু, রিকশা ভাড়া নির্ধারণসহ বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য কাজ করেছে ডাকসুর নতুন নেতৃত্ব।