সোমবার, ২৯ মে ২০২৩, ০৯:২৩ পূর্বাহ্ন

মুখ খুললেন প্রক্সিদাতা: জালিয়াতির মূলে রাবি ছাত্রলীগ নেতার নাম!

  • আপডেট টাইম বুধবার, ২৭ জুলাই, ২০২২, ১.৩৪ পিএম

রাবি প্রতিনিধি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালেয়ে ভর্তি পরীক্ষায় প্রক্সি দিতে আসা চার জন এবং একজন ক্যান্ডিডেটসহ মোট পাঁচ জনকে দণ্ডিত করে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এঘটনায় প্রক্সিদাতা বায়জিদ খানকে কয়েকঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করার পর তিনি ছাত্রলীগ নেতা মুশফিক তাহমিদ তন্ময়ের নির্দেশে ভর্তি পরীক্ষায় প্রক্সি দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন। পরবর্তিতে এই জিজ্ঞাসাবাদের একটি ভিডিও গণমাধ্যমের হাতে পৌঁছে।

গতকাল মঙ্গলবার সত্যেন্দ্রনাথ বসু একাডেমিক ভবনে অনুষ্টিত‘এ’ ইউনিটের গ্রুপ-২ এর ভর্তি পরীক্ষায় প্রক্সি দিতে এসে ধরা পরে। পরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাকে আটক করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর দফতরে নিয়ে আসেন। এখানে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি এ কথা স্বীকার করেন।

বায়জিদ খান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগের ২০১৪-১৫ সেশনের শিক্ষার্থী। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায় বায়জিদ জানান, একই বিভাগের তার বন্ধু ও রাবির ছাত্রলীগ নেতা মুশফিক তাহমিদ তন্ময় তাকে প্রক্সির কাজ দিয়েছে। তিনি প্রক্সি দিতে সকালে ক্যাম্পাসে এসেছেন। প্রক্সি দেওয়ার পূর্বে তিনি তার ব্যক্তিগত ফোন তন্ময়ের কাছে জমা রেখেছিলেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মুশফিক তাহমিদ তন্ময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এবং রাবি শাখা ছাত্ররীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ্ মখদুম হলে থাকেন। এর আগেও তার বিরুদ্ধে ভর্তি বাণিজ্য, সিট বাণিজ্যসহ রাবি ও রুয়েট ক্যাম্পাসে ইয়াবা ও মাদক পাচারের সিন্ডিকেটের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে ছাত্রলীগ নেতা মুশফিক তাহমিদ তন্ময়কে একাধিকবার ফোন করা হলে তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

ভর্তি পরীক্ষায় প্রক্সির সঙ্গে ‘সম্পৃক্ততা’ থাকায় মুশফিক তাহমিদ তন্ময়ের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে কিনা এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, এ বিষয়টি আমরা শুনেছি। আমরা খুব দ্রুতই কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে কথা বলে এ ঘটনায় প্রমাণসাপেক্ষ তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের মুক্তিযুদ্ধ ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা মেহেদী হাসান তাপস বলেন, এই বিষয়টি আমাকে কেউ জানায়নি। তবে সে যদি সত্যিকার অর্থে এমনটা করে থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, জালিয়াতির ঘটনায় অভিযুক্তদের পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে। অভিযুক্তদের একজন তন্ময় নামে একজনের কথা বলেছে। এ বিষয়ে আমরা প্রশাসনকে তদন্ত করতে অনুরোধ জানিয়েছি।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষে তন্ময়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে কিনা এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, আইন সব সময় আইনের গতিতেই চলবে। ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি চক্রের সাথে যে বা যারা জরিত, তাদের পরিচয় যতই শক্ত হোক না কেন, অপরাধ প্রমাণিত হলে তাকে শাস্তির আওতায় আনা হবে। বিশ্ববিদ্যালেয় প্রশাসন এবং গোয়ান্দা সংস্থা সর্বদা তৎপর রয়েছেন। আমাদের তদন্ত চলমান রয়েছে। আশা করছি খুব দ্রুত প্রমাণসাপেক্ষ অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে পারবো।

The Campus Today YouTube Channel

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
themesbazar_creativenews_II7
All rights reserved © 2019-20 The Campus Today