রবিবার, ০২ এপ্রিল ২০২৩, ০৩:১০ অপরাহ্ন

রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬ শিক্ষার্থীর চুল কেটে লাঞ্ছনার অভিযোগ শিক্ষকের বিরুদ্ধে

  • আপডেট টাইম মঙ্গলবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১১.৩৯ এএম
রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬ শিক্ষার্থীর চুল কেটে লাঞ্ছনার অভিযোগ শিক্ষকের বিরুদ্ধে

 

ডেস্ক রিপোর্ট: সিরাজগঞ্জের রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ’র ১৬ শিক্ষার্থীর চুল কেটে তাদের লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে।অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন। তিনি সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর।

গত রোববার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা ফাইনাল পরীক্ষায় অংশগ্রহণের করতে এলে তাদের সঙ্গে এ ঘটনা ঘটে।

ওই দিনই (রোববার) রাতে মো. জাফর হোসেন নামে এক শিক্ষার্থী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন। যেখানে তিনি লেখেন- ‘রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ইতিহাস, যেখানে শিক্ষকের হাতে লাঞ্ছিত হলো ১৬ শিক্ষার্থী।’

এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী মাথা ন্যাড়া করা ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে লেখেন- ‘আমার চুল আমি কাটব যেমন খুশি তেমন কাটব।’

এদিকে ঘটনাটি রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দিলে তা মুহূর্তে ভাইরাল হয়।

আরো পড়ুন : ডুয়েটের ভর্তি পরীক্ষা শুরু আগামীকাল

জানা যায় , সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের প্রথম বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষার হলে প্রবেশের সময় এই ঘটনা ঘটিয়েছেন ওই বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহকারী প্রোক্টর ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন একই বিভাগের শিক্ষক সহকারী প্রোক্টর রাজিব অধিকারী ও জান্নাতুল ফেরদৌস মুনি। এ সময় তারা এ ঘটনার প্রতিবাদ না করে সেখানে নীরবে দাঁড়িয়ে ছিলেন।

পরদিন সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ওই বিভাগের বাংলাদেশের ইতিহাস বিষয়ে পরীক্ষা শুরুর আগে লাঞ্ছিত পরীক্ষার্থী ও তাদের সহপাঠীরা এ ঘটনার প্রতিবাদে পরীক্ষা বর্জন করে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করার জন্য শাহজাদপুরের বিসিক বাসস্ট্যান্ড এলাকার অবস্থিত রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পাস-১ এর গেটে জড়ো হয়।

পরবর্তীতে ওই শিক্ষক ও তার শুভাকাঙ্ক্ষী শিক্ষার্থীরা তাদের পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেওয়ার ভয়ভীতি দেখিয়ে ও সবাইকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে পরীক্ষার হলে যেতে বাধ্য করে।

আরো পড়ুন :নাসিমের মৃত্যুতে কটূক্তি, মামলায় অব্যাহতি পেলেন বেরোবি শিক্ষক

লাঞ্ছিত একাধিক শিক্ষার্থী সাংবাদিকদের অভিযোগ করে বলেন, কয়েকদিন আগে ক্লাস চলাকালে ওই শিক্ষক তাদের চুল বড় রাখার বিষয়ে ছাত্রদের বকাঝকা করেন। তার ভয়ে সবাই পরদিনই চুল ছোট করে। কিন্তু তারপরেও পরীক্ষার হলে ঢোকার সময় আগে থেকেই দরজার সামনে কাচি হাতে দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি। যাদের চুল মুঠোর মধ্যে ধরা যায় এমন শিক্ষার্থীদেরকে মাথার সামনের দিকের বেশ খানিকটা চুল তিনি নিজ হাতে কাচি দিয়ে কেটে দেন।

শিক্ষার্থীরাআরও জানান, সবার সামনে এভাবে তাদের লাঞ্ছিত করার পর ওই শিক্ষক জোর করে তাদের পরীক্ষা দিতে বাধ্য করেছেন। এ ঘটনার পরে অনেক শিক্ষার্থী বাধ্য হয়ে তাদের মাথা নেড়ে করেন। ঘটনাটি জানাজানি হবার পর আতঙ্কে রয়েছে লাঞ্ছিত শিক্ষার্থীরা।

অভিযুক্ত শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি তাও বলছি না। তবে কয়েকদিন আগে কিছু ছাত্র আমার কাছে এসে পরীক্ষা পিছিয়ে দিতে বলেছিল। আমি এতে রাজি হইনি। হয়তো বা সেই রাগে এ ধরনের অপপ্রচার চালিয়েছে তারা।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার বিষয়ে তিনি বলেন, অন্য বিভাগের ছাত্ররা মিথ্যা গুজব ছড়াতে ফেসবুকে এসব দিয়েছে। আমার বিভাগের কোনো ছাত্র দেয়নি। এটা গুজব।

আরো পড়ুন :আইআইইউসি ছাত্রী সাদিয়ার লাশ মিলল আগ্রাবাদের সেই ড্রেনে

এ বিষয়ে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি (রুটিন দায়িত্ব )ও ট্রেজারার আব্দুল লতিফ বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। এই প্রথম শুনলাম। এ ধরনের কোনো লিখিত অভিযোগও পাইনি। ভুক্তভোগীরা এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

The Campus Today YouTube Channel

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
themesbazar_creativenews_II7
All rights reserved © 2019-20 The Campus Today