বুধবার, ২২ মার্চ ২০২৩, ০৯:৪৭ পূর্বাহ্ন

রাবির মেইনগেটে গাছ কাটা প্রসঙ্গে কর্তৃপক্ষের বক্তব্য

  • আপডেট টাইম মঙ্গলবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২০, ৪.২৩ পিএম

অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা


সম্প্রতি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইনগেট থেকে জোহাচত্ত্বর পর্যন্ত ফিস টেল পাম গাছগুলো কাটা নিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে কিছুটা ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছে। সে বিষয় নিয়ে সম্যক ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্যবর্ধন করবার জন্য গাছগুলো লাগানো হয়েছিলো।

গাছগুলোর কোন টিম্বার ভ্যালু নেই, এমনকি জ্বালানি হিসেবে ব্যবহারের অনুপযোগী। গত দুই-তিন বছর ধরে গাছগুলো মৃতপ্রায়ভাবে দাঁড়িয়ে ছিলো। যা অনেকের দৃষ্টিতে কটু লাগতো। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ রোগাক্রান্ত গাছগুলো ভালো করবার জন্য উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের কিছু শিক্ষকের সহায়তা নিয়েছিলো। হর্টিকালচার বিশেষজ্ঞ শিক্ষক প্রফেসর ড. মো. গিয়াস উদ্দিন আহমদ এক বছর গাছগুলো পর্যবেক্ষণ করেছেন।

বিশেষজ্ঞ শিক্ষকদের মতামতের উপর ভিত্তি করে এবং কৃষি প্রকল্পের উপদেষ্টা কমিটির সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে গাছগুলো অপসারণ করা হয়। প্রশ্ন হতে পারে এ সময় কেন? যেহেতু সামনে বর্ষা মৌসুম গাছ লাগানোর উপযুক্ত সময়, সেকারণে গাছগুলো অপসারণ করা হয়। ইতোমধ্যে উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. গোলাম কবীরের মতামতের ভিত্তিতে বোটল পাম লাগানোর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এছাড়াও সোনার বাংলা নার্সারী বোটল পাম গাছ সরবরাহ করবে বলে তাদের সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে।

রাবির মেইনগেটে গাছ কাটা প্রসঙ্গে কতৃপক্ষের বক্তব্য

মৃতপ্রায় ফিস টেল পাম গাছগুলো


বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ গত তিন বছরে প্রায় ২,৫০০ গাছ লাগিয়েছে। ২০১৮ সালে কৃষি প্রকল্পের পূর্বদিকে অর্থাৎ ফায়ার সার্ভিসের পিছনে প্রায় দু’ হাজারের অধিক গাছ লাগানো হয়েছে। পাখিদের কথা চিন্তা করেও বিভিন্ন প্রজাতির গাছ লাগানো হয়েছে।

রাবির মেইনগেটে গাছ কাটা প্রসঙ্গে কতৃপক্ষের বক্তব্য

১৯৫৩ সালের ৬ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয় যাত্রা শুরু হয়। ২০১৮ এবং ২০১৯ সালে গৌরবের ৬৫ এবং ৬৬ বছর স্মরণ করবার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে গাছ লাগানো হয়েছে প্রায় শতাধিক। ২০১৯ সালে ঔষধী বাগান তৈরী করা হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ৭৩ তম জন্মদিনে ৭৩টি মেহগুনি গাছ লাগানো হয়েছে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শততম জন্মবার্ষিকীতে ১০০টি গাছ লাগানো হয়েছে। যার স্লোগান ছিলো- ‘শতবর্ষে শতপ্রাণ’।

রাবির মেইনগেটে গাছ কাটা প্রসঙ্গে কতৃপক্ষের বক্তব্য
সুইপার কলোনী থেকে বুধপাড়ার গেট পর্যন্ত ৫০টি শিমূল গাছ লাগানো হয়েছে। ট্রেনযোগে রাজশাহীতে আসার সময় ব্যতিক্রম একটি দৃশ্য চোখে পড়বে বলে আমাদের ধারণা। বধ্যভূমির দক্ষিণদিকে একটি ফলের বাগান তৈরী করা হয়েছে। আগামী বছর থেকে গাছে সুস্বাদু ফল আসবে এবং প্রিয় শিক্ষার্থীরা সবেদা ফলের স্বাদ গ্রহণ করতে পারবে। এছাড়াও জিমনেসিয়ামের দক্ষিণদিকে কাঠবাদাম, মালটা, শিমূল এবং পলাশ গাছ লাগানো হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যেই বিনোদনের জায়গা হিসেবে শিক্ষার্থীরা উপভোগ করবে বলে আশা রাখি।

রাবির মেইনগেটে গাছ কাটা প্রসঙ্গে কতৃপক্ষের বক্তব্য
আর যে কথা দিয়ে শুরু করেছিলাম, পাম গাছগুলোর কোন অপরাধ ছিলো না।প্রকৃতিগতভাবে গাছগুলোর কিছু মরে গিয়েছিলো, আর কিছু বয়সের ভারে ন্যূজ ও মৃতপ্রায় হয়ে পড়েছিলো। নতুন গাছকে জায়গা করে দিতে মৃতপ্রায় এ গাছগুলো অপসারণ করা হয়। শিগগিরই সেখানে শোভা পাবে একই প্রজাতির নতুন গাছ।

ফেসবুকের মাধ্যমে বিভ্রান্তিকর তথ্য না দেয়ার জন্য সবিনয় অনুরোধ করছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষকের কাছে দায়িত্বশীল আচরণ জাতি প্রত্যাশা করে।


লেখকঃ উপ-উপাচার্য, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।

The Campus Today YouTube Channel

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
themesbazar_creativenews_II7
All rights reserved © 2019-20 The Campus Today