নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিঃ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীন এক শিক্ষার্থীকে র্যাগিং ও অত্যাচার করায় এক শিক্ষার্থীকে শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে সাময়িক বহিষ্কারের সুপারিশ করেছে বিশ্ববিদ্যালটির শৃঙ্খলা বোর্ড।
রবিবার (২০ মার্চ) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়টির জনসংযোগ দপ্তর থেকে প্রচারিত এক বিজ্ঞপ্তিতে শৃঙ্খলা বোর্ড সভার সিদ্ধান্ত গণমাধ্যমে জানানো হয়। এছাড়া ঐ ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি আরও চার শিক্ষার্থীর আবাসিক সিট বাতিলের সুপারিশ ও তিন শিক্ষার্থীকে সর্তকীকরণ পত্র ইস্যুর সুপারিশ করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়টির শৃঙ্খলা বোর্ড ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের চারুকলা বিভাগের সৌমিক জাহানকে সাময়িক বহিষ্কারের সুপারিশ করেছে। সেইসাথে, কেন তাকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হবে না তার জবাব ১৫ দিনের মধ্যে জানানোর ও পরবর্তী বোর্ড সভায় সৌমিকের অভিভাবককে উপস্থিত থাকার সুপারিশও করেছে। এছাড়া, নবীন শিক্ষার্থীর চিকিৎসার ব্যয়ভার বাধ্যতামূলক সৌমিকের জাহানের পরিবারকে বহন করার সিদ্ধান্ত জানায় শৃঙ্খলা বোর্ড।
নবীন ঐ শিক্ষার্থী সঙ্গীত বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের সাগর চন্দ্র দে। এ ঘটনায় অগ্নি-বীণা হলের ২০৪ নং কক্ষে রাজু মিয়া, নাজমুল হুদা, আফজাল হোসেন ও রিফাদুল হাসানের বরাদ্দকৃত সিট বাতিলের সুপারিশ করা হয়েছে। কেন তাদেরকে অধিকতর শাস্তি দেওয়া হবে না তার জবাব ১৫ দিনের মধ্যে জানানোর সুপারিশ করেছে শৃঙ্খলা বোর্ড।
অন্যদিকে, মশিউর রহমান, বিজয় চন্দ্র শীল (রাজা) ও অমর্ত্য অর্নব মিত্রকে সর্তকীকরণ পত্র ইস্যুর সুপারিশ করেছে শৃঙ্খলা বোর্ড।
নির্যাতনের শিকার সাগর চন্দ্র দে’র বক্তব্য অনুযায়ী, শনিবার (১২ মার্চ) বিকেলে রুমের রোলিং চেয়ারে জোর করে বসিয়ে ৫০-৬০ বার জোরে ঘুরাচ্ছিলো চারুকলা বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সৌমিক জাহান। বারবার নিষেধ করার পরেও সাগরের কথা না শুনে চেয়ার ঘুরিয়ে ফেলে দেয় সে। চেয়ার থেকে পড়ে গিয়ে দুটি দাত ভেঙ্গে যাবার পর মাথা ফুলে গিয়ে রক্তক্ষরণ হলেও তাকে নিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যাননি অভিযুক্ত শিক্ষার্থী। এমনকি কাউকে যেন ফোন না করতে পারেন সে জন্যে ফোন ছিনিয়েও নেয়া হয় নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থী থেকে। ঘটনার সময় রুমটিতে আরও কয়েকজন শিক্ষার্থী ছিল বলে জানায় আহত শিক্ষার্থী সাগর। সেদিন বিকাল ৪টায় ত্রিশাল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে উন্নত চিকিৎসার জন্যে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় আহত সাগরকে।
এ ঘটনায় ঐদিন রাতে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে কর্তৃপক্ষ। পরেরদিন (১৩ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ে র্যাগিংয়ের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা।