শিক্ষার বাস্তবিক প্রয়োগ বনাম নৈতিকতা
মোজাহেদুর ইসলাম ইমন
বাবা-মায়ের স্বপ্ন আমার ছেলে তার শিক্ষা জীবনের প্রতিটি স্টেজে প্রথম হবে। প্রতিটি প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় গোল্ডেন এ প্লাস পাবে। ডাক্তার হবে,ইঞ্জিনিয়ার হবে,বিসিএস ক্যাডার হবে,সরকারি উচ্চপদস্থ অন্যান্য চাকুরী করবে!
কিন্তু ভেবে দেখুন তো আপনার সন্তান মানুষের মত মানুষ হচ্ছে কিনা ! নাকি আপনার অতিরিক্ত চাপে অসুস্থ প্রতিযোগিতায়,মাদকাসক্তে,অপসংস্কৃতিতে নুয়ে পড়ছে! আজকাল দেখা যায় ডাক্তার রোগী পর্যবেক্ষণে উদাসীন,অর্থলোভে খুলে বসেছে প্রাইভেট চেম্বার ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার,ইঞ্জিনিয়ার বিল্ডিং নির্মানে অনিয়ম,সরকারি চাকুরীজীবী নিজের দায়িত্বে অবহেলা।
কিসের জন্যে এই অবক্ষয়! নিজের প্রফেশনে যদি ভালোবাসা ও দায়িত্ববোধ না থাকে তাহলে সেই চাকুরী দেশ ও জাতির জন্যে কাল হয়ে দাঁড়ায়। মনে রাখবেন চাকুরীর অর্থ শুধুমাত্র টাকা উপার্জন নয়! আপনার সন্তানের প্রতিটি স্টেজে জনগণের অর্থ রয়েছে! মানুষের জন্যে কাজ করতে হবে,মানুষের প্রতি দায়বদ্ধতা থাকতে হবে! সব সময় আপনার সন্তানের চাইতে আপনার নিজের উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে প্রাধান্য দিয়েছেন সন্তানকে আত্মপরতা শিখিয়েছেন!
তাহলে সেই সন্তান আপনাকে এবং দেশকে আত্মপরতা ছাড়া কি দিবে! ভবিষ্যৎ টা আপনার সন্তান ও তাঁর পরবর্তী প্রজন্মের তাই ভেবে চিন্তে সিদ্ধান্ত নিন। টাকাই সব নয়,মনে রাখবেন অর্থই অনর্থের মূল। ভালো কিছুতে,অল্পতেই সন্তুষ্ট থাকার চেষ্টা করুন। সন্তানকে পড়ালেখার পাশাপাশি নৈতিকতা,মূল্যবোধ শেখান। আপনার সন্তানকে অবশ্যই ভালো কাজে উৎসাহ দিন ও মন্দ কাজে বাঁধা দিন।
নাহলে বর্তমান যে অবস্থানে আছেন সেটিও হারিয়ে বসবেন। বৃক্ষ পরিচর্যার সময় বীজ ও চারা অবস্থায়। গাছের ফল অবস্থায় যেমন ডালগুলো হেলে পড়ে তেমনিভাবে আপনার সন্তানকে শিক্ষা দিন,অর্নথায় অঙ্কুরেই বিনষ্ট হয়ে যাবে। সন্তানকে গাছের মতো বড় করুন তাহলে ছায়া পাবেন,ফল পাবেন,আপনি মরে গেলেও সন্তানের দোয়া সাদকায়ে জারিয়া হয়ে থাকবে।
নাহলে অতিরিক্ত আদর ও উচ্চাকাঙ্ক্ষা আপনায় নিয়ে যেতে পারে বৃদ্ধাশ্রমের বদ্ধ ঘরে…….
লেখকঃ সাধারণ সম্পাদক, গ্রীন ভয়েস
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়,রংপুর
ও সভাপতি ও প্রতিষ্ঠাতা,অক্সিজেন
হরিপুর,ঠাকুরগাঁও ।