বুধবার, ২৯ মার্চ ২০২৩, ০২:৪৯ পূর্বাহ্ন

হল বা মেসের শিক্ষার্থীদের একটি বড় অসুখ সকালের খাবারে অনীহা

  • আপডেট টাইম সোমবার, ২৩ মে, ২০২২, ১১.০৮ পিএম
ল বা মেসের শিক্ষার্থীদের একটি বড় অসুখ সকালের খাবারে অনীহা

আবু হাসনাত তুহিনঃ “ঘুম থেকে উঠলি? ব্রাশ করে আয় খেতে যাব।” দুই বন্ধু এভাবেই সকালে ঘুম ঘুম অবস্থায় হয়ত একজন আরেকজনকে খেতে যাওয়ার বায়না করে। কিন্তু কখনো সকালের খাবার খেতে যাওয়া হয় না। কিংবা বিস্কুট, কেক বা কলাসহ অনেককিছু নিজেদের সংরক্ষণে থাকলেও অনীহাবশত আর খাওয়া হয় না সেগুলোও। খাওয়াই হবে বা কী করে? ঘুম থেকে এই উঠবে বলে তো বেজে গেল বেলা ১২ টা। এরকমই নিত্যদিন কেটে যাচ্ছে হল বা মেসে অবস্থানরত বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ বা স্কুল শিক্ষার্থীদের।

দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে এই প্রবণতা বেশি। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা সকালে নাস্তা খাওয়ার চেষ্টা করে কিংবা কোন কারণে খেতে না পারলেও বাকি মিলগুলো সময়মতো খেয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে এমনটি খুব কমই চোখে পড়ে। এমনটি হওয়ার কারণও যে কারো চোখ এড়িয়ে যাওয়ার মতো নয়।

বেশিরভাগ হলের শিক্ষার্থীই রাতভর জেগে থেকে পড়ালেখা করেছে কারণ আগামীকাল তো সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষায় বসতে হবে। তারপর কেউ পড়তেছে, গেম খেলছে, হঠাৎ রাতে হল থেকে বেরিয়ে পড়েছে অজানা উদ্দেশ্যে। কেউ রাতভর বসে বসে আড্ডা দিয়েছে, কোথাও কোথাও যে গানের আসরও বসেছে। এসব থেকে অনেকের মন ঘুমাতে যেতে নারাজ। রাত হয়েছে তো কী? দিনেরবেলা নাহয় ঘুমাব সারাদিন ধরে। এরকম করে রাত পার হয়ে যাওয়ার পর যেই ভোর ৫টা কি ৬টা বেজেছে তখন শুরু হয়ে গেল রাজ্যের সকল কান্না। চারিদিক থেকে যে এলার্ম বেজে উঠছে। এখন যে উঠতে হবে। মন বলছে না আরেকটু ঘুমাই কিংবা চোখ বুজে থাকি।

সারারাতের ক্লান্তি যেন তখনই ভর করে। অনেক কষ্টে উঠার পর শুরু হলো বই বা শীট নিয়ে হেফজ পড়া। নাহ কিছুতেই যে মাথায় ঢুকছে না। থাক কি হয় হবে, যা আসবে কোনোমতে লিখতে পারলেই হবে। এই চিন্তা নিয়ে কেউ সকাল ১০টায় পরীক্ষা দিতে চলে গেছে কোনো ধরনের নাস্তা না করেই। আবার কেউ ক্লাস করতে আটটায় উঠে চলে গেছে ক্লাস করতে। সবাই খাওয়ার কথা যেন ভুলেই গেছে। আসলে এটা ভুলে যাওয়া নয়, অন্তহীন সীমানা পেরিয়ে চলে গেছে নিরুদ্দেশ।

যাইহোক এভাবেই আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীদের দিন কেটে যাচ্ছে সকালে না খেয়ে কিংবা সারাদিন দু’বেলা খেয়ে। কেউ কেউ কখন খেয়েছে কিংবা খেয়েছে কি না সেটিও মনে রাখেনা। এর ফলে অনেকের স্বাস্থ্যগত দুর্বলতা, শারীরিক নানা জটিলতা ঘটছে। এর সবকিছুর বড় কারণ খাবারে অনিয়ম কিংবা স্বাস্থ্যসম্মত খাবার না খাওয়া। এর জন্য অবশ্য হল কর্তৃপক্ষও নানাভাবে দায়ী। কারণ তারা অনেকসময়ই হলের ডাইনিং বন্ধ রাখে, খাবারের মান কমিয়ে দেয় আবার কখনো খাবারের দাম পর্যন্ত বাড়িয়ে দিতে দ্বিধাবোধ করে না। এগুলোই হলো আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোর প্রতিদিনের অবস্থা। তারপরও হলের শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যরক্ষার দায়িত্ব নিতে হবে নিজেকে। সকল শিক্ষার্থী খাবারে অনীহা না করে বিশেষ করে সকালের খাবার নিয়মিত খেয়ে দিনটা শুরু করবে এই প্রত্যাশা রাখি।

The Campus Today YouTube Channel

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
themesbazar_creativenews_II7
All rights reserved © 2019-20 The Campus Today