ক্যাম্পাস টুডে ডেস্কঃ ৩৫ বছর বয়সে চলতি এসএসসি পরীক্ষায় বসেছেন রাজশাহীর আছিয়া বিবি। এবারই প্রথম বোর্ড পরীক্ষায় বসেছেন তিনি। বাল্যবিবাহের শিকার হয়ে থেমে যায় লেখাপড়া। কিন্তু লেখাপড়ার প্রতি প্রবল আগ্রহ ও ইচ্ছের জোরেই আবার পরীক্ষাকেন্দ্রে তিনি।
গত ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষায় বাগমারার চানপাড়া আদর্শ বালিকা উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন ভবানীগঞ্জ কারিগরি ও ব্যবস্থাপনা কলেজের শিক্ষার্থী আছিয়া বিবি। ইউপি সদস্য আছিয়া বিবির বাড়ি রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার কোয়ালীপাড়া গ্রামে। তিনি যোগীপাড়া ইউপির সংরক্ষিত ১নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য। বিয়ের আগে ভটখালী বালিকা বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেছেন সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত।
পরে ওই প্রতিষ্ঠানই বন্ধ হয়ে গেছে। আছিয়া বেগম জানান, তাঁর বিয়ে হয় প্রায় ২০বছর আগে। বাল্যবিবাহের শিকারে বন্ধ হয়ে যায় তার লেখাপড়া। তবে তাঁর ইচ্ছা বন্ধ হয়নি। বিয়ের ২০ বছর পর অষ্টম শ্রেণি পাস না করেই ভর্তি হন কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ভবানীগঞ্জ কারিগরি ও ব্যবস্থাপনা কলেজে। গত বছর দিয়েছেন নবম শ্রেণির ফাইনাল। এবার দিচ্ছেন দশম শ্রেণির ফাইনাল। নিজের ইচ্ছাপূরণে ৩৫ বছর বয়সে বসেছেন এসএসসি পরীক্ষায়।
তিনি আরও জানান, সংসারে তাঁর এক মেয়ে। এরই মধ্যে মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। নির্বাচন করে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।
ভবানীগঞ্জ কারিগরি ও ব্যবস্থাপনা কলেজের অধ্যক্ষ আতাউর রহমান শিবলী বলেন, ‘আমাদের কেন্দ্রে ভালোভাবেই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। নির্দিষ্ট সময়ে কেন্দ্রে এসে পরীক্ষা দিচ্ছে সবাই। ইউপি সদস্য হওয়ার কারণে নিয়মিত ক্লাসে না এলেও নিয়মিত পরীক্ষা দিচ্ছেন আছিয়া। আছিয়া বিবি বলেন, ‘আমি ভালোভাবেই পরীক্ষা দিচ্ছি। পরীক্ষার আগে থেকে ভালোভাবে লেখাপড়া করেছি। অষ্টম শ্রেণিতে না পড়ার কারণে একটু বেশি সময় দিতে হয়েছে এবারের পরীক্ষায়।
আছিয়া বিবি আরও বলেন, ‘আগে থেকেই লেখাপড়ার আগ্রহের কারণে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছি। শিক্ষিত লোকজনের মূল্য সবখানে। তাই দীর্ঘ সময় পর লেখাপড়া শুরু করেছি। এসএসসি পাস করতে পারলে লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছে আছে। সূত্রঃ দৈনিক করতোয়া।