অনলাইন ক্লাসের মধ্যে দিয়েই শুরু হলো কলেজ জীবন

ক্যাম্পাস টুডে ডেস্ক

এ বছরের মাধ্যমিকের চৌকাঠ পেরোনো ১৬ লাখ ৯০ হাজার শিক্ষার্থীদের মধ্যে শিক্ষাবোর্ডগুলোর হিসেবে অন্তত সাড়ে ১৪ লাখ একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছে। রোববার ছিল তাদের কলেজ জীবনের প্রথম দিন।

শিক্ষার্থীদের জীবনের এটি স্মরণীয় দিন। স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে প্রথম কলেজে পা রাখার দিন হলেও করোনার কারণে এবার সেই আনন্দটুকু করার সুযোগ হয়নি বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীর। কলেজ বন্ধ থাকায় তাদের ক্লাস শুরু করা হয়েছে অনলাইনে।

নতুন ক্লাস, নতুন বই, নতুন বন্ধু, নতুন জীবনে নবসূচনা- সবই এবার ছিল ভিন্ন রকম। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি রোববার সকালে ঢাকা কলেজ আয়োজিত এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের অনলাইন পাঠদান কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।

ঢাকা কলেজসহ রাজধানী বেশ কয়েকটি কলেজের শিক্ষক এবং একাদশ শ্রেণির নবীন শিক্ষার্থীরা ভার্চুয়াল এ অনুষ্ঠানে অংশ নেন। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে নির্ধারিত সময়ের দুই মাস পরে শুরু হলো একাদশ শ্রেণির ক্লাস। স্বাস্থ্য ঝুঁকি এড়াতে গতানুগতিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্লাসের পরিবর্তে অনলাইন ক্লাস দিয়ে শুরু হলো নতুন শ্রেণির লেখাপড়া। প্রতি বছর ১ জুলাই একাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরুর রেওয়াজ থাকলেও এবছর তা শুরু হলো ৪ অক্টোবর।

একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের অনলাইন পাঠদানের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, সঙ্কট দেখে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। সব সঙ্কটই নতুন সম্ভাবনা তৈরি করে। আগামী দিনগুলোতে অনেক পরিবর্তন আসবে। এই পরিবর্তনের সাথে আমাদের খাপ খাইয়ে নিতে হবে। আমরা অনেক সীমাবদ্ধতা দেখছি, কিন্তু আসলে অনেক সম্ভাবনা। আমরা যেন এগুলোকে কাজে লাগাই।

তিনি বলেন, নানা প্রতিবন্ধকতা থাকার পড়েও অনলাইনে ক্লাস শুরু হচ্ছে। ডিজিটাল বাংলাদেশের জন্য তা সফল হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শে নিজেকে গড়ে তুলতে শিক্ষার্থীদের আহ্বান জানান তিনি।

দীপু মনি আরও বলেন, আগে আমাদের ধারণা ছিল শিক্ষকরা সব জ্ঞানের উৎস। কিন্তু আধুনিক প্রযুক্তির যুগে সব তথ্যই সবার হাতের কাছে। তাই আমরা শিক্ষকদের নিজেদের জ্ঞানের উৎস না ভেবে আদর্শ গাইড হিসেবে ভাবতে হবে। শিক্ষকরা আগামী প্রজন্মকে দক্ষ পথ প্রদর্শকের মতোই এগিয়ে নেবেন।

অনুষ্ঠানে শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যরিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, কাজে ন্যায়-অন্যায় আছে। কিন্তু ছোট-বড় ভেদাভেদ নেই। প্রয়োজনের তাগিদে আমি নিজেও অনেক ধরনের কাজ করেছি। অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের সাথে নিজের জীবন অভিজ্ঞতা নিয়ে আলোচনা করেন তিনি।

তিনি বলেন, করোনার সময় আমাদের নিজেকে মাল্টি স্কিলড করে গড়ে তোলার সুযোগ হয়েছে। আমরা যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছি তখন অনেক পরিশ্রমের কাজ করেছি। নিজের হাতে গাড়ি ধুয়েছি, বার্গারও বানিয়েছি। তাতে, আমার মানইজ্জত কমে যায় নাই। কিন্তু আমরা বাচ্চাদের শিখাই শুধু ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার হতে হবে।

উপমন্ত্রী আরও বলেন, আরও অনেক দক্ষতা কাজে লাগানোর সুযোগ এসেছে। অনেক দক্ষতা আয়ত্ব করার সুযোগ এসেছে। আজ আমরা শিক্ষিত হয়ে আভিজাত্যের অসুস্থতায় ভুগছি। সমাজের সকল মানুষকে সম্মানের সাথে দেখতে হবে। কারো স্কিলকেই ছোট করে দেখার সুযোগ নেই।

ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক নেহাল আহমেদের সঞ্চালনায় এ অনুষ্ঠানে আরও অংশগ্রহণ করেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন, কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রফেসর ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক, ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মু. জিয়াউল হক।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ

Leave a Comment