অপরাজনীতির সঙ্গে জড়িত শিক্ষক-কর্মকর্তাদের হুশিয়ারি যবিপ্রবি উপাচার্যের

যবিপ্রবি প্রতিনিধি: শহরের অপরাজনীতির সঙ্গে জড়িত শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ফিরে না এলে তাঁদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আনোয়ার হোসেন।

এছাড়া আগামী তিন বছরের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল অ্যাকাডেমিক, আর্থিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রমকে ডিজিটাইজড করার রোডম্যাপ ঘোষণা দেন যবিপ্রবি উপাচার্য । এই সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শ্রেণিকক্ষও ডিজিটাইজড করা হবে।

আজ (রোববার) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সম্মেলন কক্ষে দ্বিতীয় মেয়াদে যবিপ্রবির উপাচার্যের দায়িত্ব গ্রহণ উপলক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় অধ্যাপক ড. মোঃ আনোয়ার হোসেন এসব কথা বলেন।

অধ্যাপক ড. মোঃ আনোয়ার হোসেন বলেন, আগামীতে আমরা অনলাইন এবং সশরীরে দুই ধরনের ক্লাস একই সাথে চালু রাখব। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছয়টি ডিজিটাল ক্লাসরুম রয়েছে। এই অর্থ বছরে আরও ২৬টি ডিজিটাল ক্লাসরুম সংযোজন করা হবে; যেন অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা যায় এবং ভবিষ্যতে যেকোনো পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীরা ক্লাসের সাথে সংযুক্ত থাকতে পারে।

তাঁর আগামী চার বছরের লক্ষ্য সম্পর্কে তিনি বলেন, ইন্ডাস্ট্রি-অ্যাকাডেমিয়া সম্পর্ককে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে উন্নত বিশ্বের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ন্যায় অ্যাকাডেমিক কারিকুলাম প্রণয়ন, অত্যাধুনিক ল্যাব স্থাপন, স্টার্টআপ কোম্পানি স্থাপন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব উদ্ভাবন ও প্যাটেন্ট রাইট-এর মাধ্যমে জাতীয় অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখার পরিবেশ সৃষ্টি করা হবে। বর্হিঃবিশ্বের সাথে যোগাযোগ রক্ষা এবং বিদেশি শিক্ষার্থীদের আকৃষ্ট ও সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারন্যাশনাল সার্ভিস সেন্টারকে আরও গতিশীল করা হবে।

অধ্যাপক ড. মোঃ আনোয়ার হোসেন বলেন, গত চার বছরে যবিপ্রবিতে অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে পেরেছিলাম। কিন্তু আমার দুই সপ্তাহের অনুপস্থিতির ফলে সেটার অবনতি হতে শুরু করে। আমি শুনেছি, যশোর শহর কেন্দ্রীক অপরাজনীতির চর্চাকারীদেরকে এখানে আহ্বান জানানো হয়েছে। আমি দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলতে চাই, বিশ্ববিদ্যালয় চলবে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম-কানুনে। যশোর শহরের অপরাজনীতিকদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকতে দেওয়া হবে না; প্রভাবও বিস্তার করতে দেওয়া হবে না।

বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের যে সকল সদস্য সেই অপরাজনীতির সাথে এখনো যুক্ত আছেন, তাদেরকে আমি ফিরে আসার আহ্বান জানাচ্ছি। তা না হলে তাদের প্রতিটি অপকর্মের জন্য প্রশাসনিক ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিশৃঙ্খলাকারীদের মধ্যে অনেকে আমার কাছে ক্ষমা চেয়েছে। অভিভাবক হিসেবে আমি ক্ষমা করেছি, কিন্তু আবার অপরাধ করলে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম চালুর বিষয়ে অধ্যাপক ড. মোঃ আনোয়ার হোসেন বলেন, বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হলে সারা বিশ্বের ন্যায় এখানেও শিক্ষা কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে। এখন আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার হচ্ছে, ছেলেমেয়েদের পরীক্ষা নেওয়া। এ জন্য আমার দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথম কর্ম দিবসেই বিভিন্ন অনুষদের ডিনদের সঙ্গে সভা করেছি। আপনারা জেনে খুশি হবেন যে, করোনা পরিস্থিতরি মধ্যেও আমরা স্নাতক শ্রেণির সকল বর্ষের দুটো সেমিস্টারের ক্লাস শেষ করেছি। কিন্তু এখন পরীক্ষা না নিলে বর্ষ উন্নয়ন সম্ভব নয়। পরিস্থিতি অনুকূলে থাকলে আমরা আগামী মাসেই পরীক্ষা শুরু করতে পারব বলে আশাবাদী। বাংলাদেশ সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী সপ্তাহে অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলে বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে।

মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন যবিপ্রবির কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মোঃ আব্দুল মজিদ, রিজেন্ট বোর্ডের সদস্য অধ্যাপক ড. মোঃ আনিছুর রহমান, অধ্যাপক ড. মোঃ ইকবাল কবীর জাহিদ, ফলিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন অধ্যাপক ড. মৃত্যুঞ্জয় বিশ্বাস, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. তহিদুল ইসলাম, যশোর প্রেস ক্লাবের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন, সাধারণ সম্পাদক আহসান কবির বাবু প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *