অভিভাবকহীন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ২৬ দিন
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ২৬ দিন ধরে উপাচার্যবিহীন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি)। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে চলে যান। এরপর থেকে সারা দেশে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের পদত্যাগের দাবি ওঠে শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে। ফলে আওয়ামী সরকারের আজ্ঞাবহ হয়ে যারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজ করে আসছিলেন, তাদের মধ্যে সৃষ্টি হয় অস্থিরতা।
গত ৭ আগস্ট ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কারণ দেখিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক নূরুল আলম পদত্যাগ করেন। একই দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার আবু হাসানও পদত্যাগ করেন।
গত ১১ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মোহাম্মদ মোস্তফা ফিরোজ পদত্যাগ করেন এবং গত ১৯ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক শেখ মনজুরুল হক ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক রাশেদা আখতার দেশে উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেন।
উপাচার্যহীন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। প্রশাসনিক, একাডেমিক জটিলতা এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন প্রদান-সংক্রান্ত বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন না থাকায় সার্টিফিকেট উত্তোলন করতে পারছেন না শিক্ষার্থীরা। ভোগান্তিতে পড়েছেন অনেক চাকরিপ্রত্যাশী শিক্ষার্থী, যারা এখনো সনদ উত্তোলন করেননি।
এ ছাড়া সাধারণ শিক্ষার্থীরা সেশন-জটের আশঙ্কা করছেন, তারা বলছেন, যত দ্রুত উপাচার্যসহ অন্যান্য প্রশাসনিক পদে নিয়োগ প্রদান করবে, তত দ্রুত একাডেমিক অন্যান্য কাজে সচলতা আসবে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম বাপ্পি বলেন, উপাচার্য হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবক। অভিভাবক ছাড়া যেমন একটা পরিবার চলতে পারে না, অনিরাপদ ও অনিশ্চয়তায় ভোগে, ঠিক আমরা অনিশ্চয়তায় ভুগতেছি। আমরা চাই যত দ্রুত সম্ভব অন্তর্বর্তীকালীন সরকার একজন যোগ্য, শিক্ষা ও শিক্ষার্থীবান্ধব উপাচার্য নিয়োগ করবেন।
এ বিষয়ে বাংলা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক শামীমা সুলতানা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ পদ। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাসহ সার্বিক কার্যক্রম সুষ্ঠু ও স্বাভাবিকভাবে পরিচালনার জন্য উপাচার্য থাকা আবশ্যক। এ ছাড়া উপাচার্যবিহীন একটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক-শিক্ষার্থী সবার জন্য অনিরাপদ।
তিনি আরও বলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ৫৩তম আবর্তনে অনেকে ভর্তি পরীক্ষা দিয়েছে এবং ভর্তি হয়েছে। কিন্তু তারা এখনো ক্লাস শুরু করতে পারেনি। এতে তারা শিক্ষাজীবন থেকে পিছিয়ে পড়ছে। তাই আমি আশা করব, সরকার দ্রুত একজন দক্ষ উপাচার্য নিয়োগ দেবে।