অ্যাপ্রোন

আমি কালো রংয়ের অ্যাপ্রোন পরে একটা বিশালাকার ট্রে হাতে এগিয়ে যাচ্ছি। আমার সামনে আছে আকরাম ভাই। উনি আমার হাতে থাকা ট্রে থেকে ত্রিভুজাকার স্যান্ডউইচ আর চায়ের কাপ এগিয়ে দিচ্ছেন ট্রেন যাত্রীদের হাতে।

আমাদের পরিবেশন দেখে এক মধ্য বয়সি মহিলা বলে উঠলেন, এগুলা কত কইরা বিক্রি করতাছেন?

আমি তখন বলতে যাব, আফা ২০ টাকা। তার আগেই আকরাম ভাই একটা মৃদু হাসি দিয়ে বললেন, আফা নেন। মাত্র ২৫ টাকা।

মহিলা অবাক চোখে বলল, ধুর মিয়া এর থেইকা বনরুটির সাইজ তো বড়। কি কন ২৫ টাকা!

মহিলার পাশে থাকা ছেলেটি অভিমানি মুখে বসে রইল। আর এই কথোপকথনের মাঝেই আমার দৃষ্টি চলে গেল একটা বইয়ের উপরে। একটা রূপবতী মেয়ে জানালার পাশে বসে বই পড়ছে। আমি ধরে নিলাম বইটা কোন গল্প কিংবা উপন্যাস।

আর এটা দেখতেই ভাল লাগছে আমার কাছে। আমি হঠাৎ সিদ্ধান্তহীনতায় পড়ে গেলাম। আমার কাছে মনে হল আচ্ছা, ভাল লাগার সংজ্ঞাটি এখানে কেমন?- জানালা, বই, প্রকৃতি নাকি মেয়েটা? আমার কল্পনার ঘুম ভাঙিয়ে আকরাম ভাই বলে উঠলেন, ঐ মিয়া কোন দিকে চাইয়া আছো? আফারে দুই পিস স্যান্ডউইচ দাও।

আমি স্যান্ডউইচ এগিয়ে দিতে দিতে ভাবলাম, জীবনটা তো এমনি। একটা চলমান ট্রেন। সেখানে প্রকৃতি সিদ্ধান্তহীনতা আর আমি স্যান্ডউইচ অথবা চা বিক্রেতা।

গল্প: অ্যাপ্রোন
লেখা: মনজুরুল হাসান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *