আমি আর যাই হই, নারী হতে চাই না


তাছলিমা রূপ পুতুল


আমি প্রকৃতিতে থাকা আর পাঁচটা ক্ষুন্ন জিনিস হব
হব আমি ভোরের কোকিল
অথবা কাকের কর্কষ কা-কা শব্দ,
ঝড়ে ভেঙ্গে পরা বাবুই পাখির বাসাটা হতেও দ্বিধা নেই আমার।

হবো আমি দিঘির ক্ষুদ্র মাছ অথবা ঘাটে লেগে থাকা একগুচ্ছ শামুক।
দেওয়াল জুড়ে লেগে থাকা দুর্বল রংয়ের আস্তরণ হতেও আপত্তি নেই আমার।

আমি তো ফেলে রাখা টবটিতে আগাছাও হতে পারি
হতে পারি আমি ছোনের ঘরের নড়বড়ে খুঁটিটাও
তাছাড়াও নারকেল খোসায় জমে থাকা বহুদিনের পানি হতেও কষ্ট নেই আমার।

হতেও পারি কল পাড়ে জমে থাকা বহু বছরের শ্যাওলা
অথবা ঘরের কোণে পড়ে থাকা আর পাঁচটা ভাঙ্গা ফারর্ণিচারও।
হয়তো হবো নদীতে ভেসে থাকা কচুরিপানা অথবা ঢেউয়ের মাথায় ফুলে ফেপে থাকা সাদা কালো ফেনার স্তূপ ।

যা ইচ্ছে তাই হব,
কিন্তু তবুও আমি নারী হব নাহ্
হবো না আমি বালিকা, কিশোরী অথবা মহিলা।

হবো নাহ্ আমি সেই মেয়েটা যার বুকের উঁচু নিচু আকার দেখেও ভিড়ের মাঝে বৃদ্ধ দাদা মশায়ের শরীর থেকে দর দর করে ঘাম গড়িয়ে পরে।

অথবা সেই মেয়েটাই!
যার ঘামের তীব্র আঁশটে গন্ধও বাবার বয়সী সেই লোকটাকে তার কমড়ে হাত দেওয়া থেকে বিরত রাখতে পারেনি।
আমি চাই না
আমি সত্যি হতে চাই না
আমি আর যাই হই নারী হতে চাই না।

হতে চাই না আমি নুসরাত অথবা আসফিয়া
ইচ্ছে নেই হবার তনু কিংবা রাফিয়া
নারী হওয়ার দ্বায়ে আমি আগুনে জ্বলে পুড়ে মরতে চাই নাহ।
মেয়ে বলে শ্বাসরুদ্ধকর যন্ত্রণাও আমি সইতে চাই না।
পাথরে থেতলানো মুখ আর এসিডে পোড়া মুখও আমি দেখতে চাই না।

তার চেয়ে বরং ভাঙা-চোরা ওই মেঠো পথটাই আমার প্রিয়।
অথবা পথিকের পায়ে ধুলো!

লেখক: শিক্ষার্থী, ফার্মেসী ডিপার্টমেন্ট,
ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *