'এইচএসসি' পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত ২৪শে সেপ্টেম্বর

এইচএসসি: ‘প্রেডিকটেড রেজাল্ট’ না ‘অটোপাস’, সার্টিফিকেটে লেখা থাকবে কোনটা?

ক্যাম্পাস টুডে ডেস্ক


করোনার কারণে এইচএসসি’২০ পরীক্ষা না নিয়ে জেএসসি-এসএসসি ফল অনুযায়ী রেজাল্ট দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ড দিপু মনি। পরীক্ষা নিতে না পেরে ‘ও’ এবং ‘এ’ লেভেলের ফল প্রকাশে ইংরেজি মাধ্যম স্কুল-কলেজগুলো পন্থা নিয়েছিল সেটা বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। তাতে ‘প্রেডিকটেড রেজাল্ট’ উল্লেখ থাকবে।

কিন্তু এবারের উচ্চ মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষা বাতিল করে জেএসসি ও এসএসসির ফলের ভিত্তিতে বাংলাদেশ সরকার ডিসেম্বরে যে ফল দিতে যাচ্ছে তা ‘প্রেডিকটেড’ লেখা যাবে না। অভিভাবকরা প্রশ্ন তুলেছেন, শিক্ষার্থীর সার্টিফিকেট বা ট্রান্সক্রিপ্টে কী লেখা হবে ‘আরোপিত’ বা ‘অটোপাস’। যে পন্থা নেয়া হয়েছে সেটা বৈজ্ঞানিক নয় বলেও মন্তব্য করেছেন শিক্ষাবিদ ও অভিভাবকরা।

দেশে ইংরেজি মাধ্যম শিক্ষার্থীদের প্রায় ৮০ শতাংশই যুক্তরাজ্যের প্রতিষ্ঠান ‘অ্যাডেক্সেল’-এর শিক্ষার্থী। সংস্থাটির বাংলাদেশের প্রধান আবদুল্লাহ লিটন সাংবাদিকদের বলেন, মে-জুন সেশনের ‘এ’ এবং ‘ও’ লেভেল পরীক্ষার্থীদের ফল তৈরির ক্ষেত্রে বেশকিছু নীতি অনুসরণ করা হয়।

প্রথমত, শিক্ষার্থীদের নেয়া ‘মক টেস্ট’র (বিভিন্ন সময়ে প্রস্তুতি পরীক্ষা) ফল বিবেচনা করা হয়। কোনো প্রতিষ্ঠান করোনার কারণে এই টেস্ট না নিতে পারলে ‘ক্লাস টেস্ট’ (বছরব্যাপী) বিবেচনা করা হয়। যদি এই টেস্টের ফলও কোথাও না পাওয়া গেছে সেখানে শিক্ষকের কাছ থেকে শিক্ষার্থীর সম্ভাব্য প্রাপ্ত গ্রেড নেয়া হয়েছে। যেহেতু শিক্ষার্থীকে শিক্ষকই যথার্থভাবে মূল্যায়ন করতে পারে। তিনি জানান, যুক্তরাজ্যের পরীক্ষা বোর্ড এমন আরও কিছু গাইডলাইন দিয়েছিল। সেটার আলোকে গোটা বিশ্বেই এই নীতি অনুসরণ করে শিক্ষার্থীর ফল তৈরি করা হয়। এটাকেই ‘প্রেডিকটেড রেজাল্ট’ বলা হয়েছে।

অভিভাবকরা বলছেন, আগের দুই পরীক্ষার ফলের গড়ের মাধ্যমে এইচএসসির ফল নির্ধারণে আরও বেশকিছু জটিলতা তৈরি হতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার ফলে এসএসসি ও এইচএসসির প্রাপ্ত নম্বরের একটি অংশের গড় থাকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এইচএসসির প্রাপ্ত নম্বরের ৬০ শতাংশ এবং এসএসসির ৪০ শতাংশ নেয়া হয়েছে। কোথাও এইচএসসির ৩০ বা ২৫ শতাংশ আর এসএসসির যথাক্রমে ১০ ও ১৫ শতাংশ নেয়া হয়ে থাকে। অন্যদিকে বুয়েটসহ ইঞ্জিনিয়ারিং বা মেডিকেল কলেজে ভর্তিতে পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, উচ্চতর গণিত ও জীববিদ্যার বিষয়ে গ্রেড নির্ধারণ করে দেয়া হয়।

স্নাতকে সম্মান পড়তে বিষয়ভিত্তিক প্রাপ্ত নম্বর বিবেচনা করা হয়। এসএসসির তুলনায় বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীরা এইচএসসি স্তরে উল্লিখিত বিষয়ে বেশ গুরুত্ব দেন। কিন্তু সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী, গড় নম্বর বা গ্রেড দেয়া হলে কেউ অতি মূল্যায়িত হবেন আবার কেউ অবমূল্যায়িত হবেন। এতে কেউ কেউ বঞ্চিত হতে পারে।

জেএসসি-এসএসসি ফল অনুযায়ী রেজাল্ট দেওয়া হবে এমন সিদ্ধান্তে দেশের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কেউ কেউ সরকারি সিদ্ধান্তের ব্যাপারে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন তারা পরীক্ষায় বসতে চাচ্ছেন। সেটা সম্ভব না হলে ইংরেজি মাধ্যমের মতো ‘প্রেডিকটেড রেজাল্ট’ (সম্ভাব্য ফল) চেয়েছেন তারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *