একুশে গ্রন্থমেলায় তরুণ প্রজন্মের লেখক শাহমুব জুয়েলের ‘গিরিকন্যা’

একুশে গ্রন্থমেলায় তরুণ প্রজন্মের লেখক শাহমুব জুয়েলের 'গিরিকন্যা'

সাহিত্য ডেস্ক


এবারের একুশে গ্রন্থমেলা-২০২১-এ প্রকাশিত হচ্ছে তরুণ প্রজন্মের লেখক শাহমুব জুয়েলের তৃতীয় উপন্যাস গিরিকন্যা। ‘দেশ পাবলিকেশন্সের’ ব্যানারে বইটির প্রচ্ছদ বানিয়েছেন মোস্তাফিজ কারিগর। পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ ২৫৬ মুদ্রিত মূল্যঃ ৫০০ টাকা মাত্র। বইমেলার ৫৫-৫৬-৫৭ নং স্টলে পাওয়া যাবে। এছাড়াও অর্ডার করা যাবে রকমারি.কম থেকেও।

গিরিকন্যা উপন্যাসে বিস্তর মানুষের জীবনযাপনের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে নানান সমস্যা ও সংকট বিদ্যমান।চোখের সামনে নানান ঘটনা ঘটে।মানুষ নিরুপায় হয়ে দেখে। বদলে গেছে মানুষ। বদলে গেছে পরিবেশ ও প্রকৃতি। প্রকৃতি ও পরিবেশের সাথে মেলবন্ধন নেই মানুষের। অথচ বেঁচে থাকা ও জীবনাচরণের ক্ষেত্রে প্রকৃতি প্রধান ভূমিকা রাখে। মানুষ ধ্বংসে মাতোয়ারা। চারপাশের অবস্থা রক্ষা ও মানসিক উন্নতি ধারণের লক্ষে দুটি চরিত্র কাজ করছে। অদ্রি ও পারিজাত গিরিকন্যা উপন্যাসের প্রধান চরিত্র।

উপন্যাসে পাহাড় কাটা, বিল ভরাট, পাখি নিধন, ফসলের মাঠ বিরান, ছিন্নমূল মানুষের জীবনযাপন, হাসপাতালে অক্সিজেনের অভাবে মৃত্যু, চোরাকারবারি, ঘুষবাণিজ্য, সংস্কৃতিচর্চার অভাব, বিলবোর্ডের মাধ্যমে গাছ পরিবেশ ধ্বংস এবং অপচয় রোধের চিত্র এসেছে।

পাখি প্রকৃতির রক্ষক। বক পরিচিত পাখি। শাদা পালক নেড়ে মঙ্গলের বার্তা বয়ে বেড়ায়। মাঠের প্রান্তে থেকে প্রান্তরে ধীর পায়ে হাঁটে । কখনো ধ্যানী সাধকের মত আলের কিনারে বসে মানুষের কথা ভাবে। পাখির চিত্র নান্দনিক রেখাচিত্রে বর্ণনা করা হয়েছে।

তেপান্তের সৌন্দর্য ফসল। মাঠের উপর সারি সারি বকের পাহারা বেশ মুগ্ধকর। মাঠে মাঠে ফসলের সমারোহ। গুটিপোকা আক্রমণ করলে বক সেগুলোকে তাড়া করে। তাতে ফসল রক্ষা পায়। হীনমনা মানুষ পাখিগুলো শিকারে মেতে উঠে। উপন্যাসের প্রধান চরিত্র পারিজাত শহর থেকে বিলের মাঝ দিয়ে নতুন সড়ক দিয়ে বাড়ি ফিরে। এ সময় শিকারী বন্দুক তাক করা দেখে বিস্মিত হয়। হঠাৎ গুলি ও বকের ডানা ঝাপটানো দেখে আহত হয়েছে। অন্যদিকে বক তাড়া খেয়ে বিল ছেড়ে যায়। গুটিপোকা এসে নষ্ট করে সোনালি ফসল। গ্রামীন কৃষক ফসল মাঠের চিত্রও সাবলীলভাবে ফুটে উঠেছে।

লেখক শাহমুব জুয়েল বলেন- “আমি মানুষের কাছে ঘেঁসে দেখি, ছিন্নমূল মানুষ, প্রকৃতির ধ্বংস, চাটুকারিতা, ধান্ধাবাজি, গোঁড়ামি, আধিপাত্য, বিপর্যয় ও অমানবিক আচরণ, তারপর চারপাশের নানান অনুষঙ্গকে লিপিবদ্ধ করি গল্পের রাজ্যে, মন ও মননে বিশ্বাস করে বুনন করি শব্দশিল্প। গ্রাম ও শহরের সেতুবন্ধন আমাকে টানে তাই অন্যান্য লেখার মত গিরিকন্যা উপন্যাসেও তা বৈচিত্র্যময়ভাবে ফুটে উঠেছে।”

নতুন প্রজন্মের সাথে বইয়ের সংযোগ ঘটানোর স্বপ্নবাজ এই লেখক এর পূর্বেও লিখেছেন সবুজডানা, সমুদ্রগামিনী উপন্যাস। লিখেছেন প্রবন্ধ গ্রন্থ ‘কথাসাহিত্যে রাজনৈতিক দর্শন ও বিবিধ প্রবন্ধ’। এছাড়াও তার সম্পাদিত লিটলম্যাগ বর্ণিল কবিতা গ্রন্থ: কাঁচা রোদের সন্ধানে (২০১৭)মুখোমুখি আহ্লাদি চিবুক (২০১৭),জলসিঁড়ি পেরিয়ে বালির সন্যাসে(২০১৯) গল্পগ্রন্থ : অথৈ সময়ের শ্বাস( ২০১৮)।

উল্লেখ্য, চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলায় জন্ম নেওয়া এই তরুণ লেখক পেশায় শিক্ষক হলেও সাহিত্যের প্রতিটি ক্ষেত্রে বিচরণ তার চিন্তার খোরাক। অল্প সময়েই করেছেন ঈর্ষান্বিত অর্জন। পেয়েছেন ছায়াবানী মিডিয়া কমিউনিকেশন সম্মাননা-২০১৮,কাব্যকথা ভাষা শহিদ স্মৃতি সম্মাননা- ২০১৮,চাঁদপুর মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক স্বরচিত কবিতা বিষয়ে বিজয়ী সম্মাননা -২০১৮,দৈনিক বাঙালির কণ্ঠ লেখক সম্মাননা- ২০১৯,বাঙালি কৃষ্টি ও সংস্কৃতি সম্মাননা-২০১৯,সিলেট কবিতা উৎসব সম্মাননা-২০১৯, ১১ তম চকুরঙ্গ ইলিশ উৎসব সম্মাননা-২০১৯।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ

Leave a Comment