ওরা নিশাচর

ওরা নিশাচর


আধারে যেন কারা হাটে!!
দিন ফুরিয়ে নিকষ কালো অন্ধকার
যখন নেমে আসে নগরীর প্রতিটি গলিতে,
সন্ধ্যা প্রদীপ যখন নিভে যায়
সবাই ঘুমিয়ে পড়ে নির্জনতার বুকে
তখন তারা হাটে-
আমি রোজ শুনি তাদের হাটার শব্দ
বাতাসে প্রতিধ্বনিত হয় সেই শব্দের।

রাত গভীর হলেই ওরা নেমে পড়ে
ছড়িয়ে যায় এদিকে সেদিকে
তীব্র শীত কিংবা রাতের নির্জনতা
তাদের দমাতে পারে নাহ-
তারা চষে বেড়ায় লোকালয় থেকে লোকালয়
রেলস্টেশন থেকে বস্তি।
নগরীর প্রতিটি প্রান্তরে
তাদের পদচিহ্নের খবর পাওয়া যায় রোজ
শুনেছি তারা গুটি কয়েক,
সখিনার জীর্ণ কুটিরটিকেও বাদ দেয়নি।

দিনের আলোয় যারা স্বাভাবিক
যাদের স্লোগান ২ দলে বিভক্ত হয়
অথচ
রাতের অন্ধকারে তারা বদলে নেয় নিজেকে,
আমাদের জাগতিক সমাজ থেকে –
আলাদা এক সমাজ গঠন করে,
পদচিহ্ন একে দেয় শহরের নষ্ট গলি গুলোতেও।

আমি অবাক হয়ে শুনি-
নগরীর বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে
রিকশার গ্যারেজ,উলঙ্গ ফুটপাতেও
তারা হানা দেয়,
ওরা থেমে থাকে নাহ।
রাত পেরিয়ে ভোর হবার আগেই
ওরা হেটে যায় মাইলের পরে মাইল,
সে হিসেব আমি লিখতে পারিনি
তাদের চলার এত দ্রুততা –
যেন বিশ্বের দ্রুততম মানব কেও হার মানায়।

হঠাৎ মাঝ রাতে শুনি
কারা যেন ফিসফিসিয়ে কথা বলছে
কারা যেন হেটে আসছে –
আমি দরজা খুলতেই, শব্দ বন্ধ হলো।
বললাম কে ওখানে? কে যায়?
উত্তর মেলেনি –
শুধু হাড় হিম করা বাতাস ফিসফিসিয়ে
বলে গেল –
ওরা নিশাচর, ওরা এসেছিলো
এক টুকরা উষ্ণতা দেবার জন্য।

তাজমিন রহমান,
ফোকলোর স্টাডিজ,
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়।

Scroll to Top