কভিড ১৯: প্রভুর নিকট ফিরে আসার সতর্কবাণী

মাহমুদুল হাসান


মানব সৃষ্টির আদিকাল থেকেই নানা সময়ে এই পৃথিবীর নানা অঞ্চলে নানা সময়ে নানান রকমের মহামারী এসেছিল।আর এই ধারাবাহিকতা ততোদিন পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে যতোদিন এই পৃথিবী নামক গ্রহটিতে থাকবে মানুষের বসবাস।

বর্তমান সময়ে পৃথিবী বাসী করোনা নামক একটি অদৃশ্য ভাইরাসের ভয়ে থমকে গেছে। গৃহবন্দী আজ কোটি কোটি মানুষ। অনাহারে মরছে ছিন্নমূল মানুষেরা। পৃথিবীর এত বড় বড় ক্ষমতাধর রাষ্ট্রগুলো আজ অদৃশ্য একটি ভাইরাসের সামনে অসহায়।

একজন মানুষকে অসুস্থ করতে ৭০ বিলিয়ন ভাইরাসের প্রয়োজন। ৭০ বিলিয়ন ভাইরাসের ওজন ০.০০০০০০৫ গ্রাম।বর্তমানে বিশ্বজুড়ে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত প্রায় ৪০ লাখ মানুষ। তাহলে বিশ্বের সমস্ত আক্রান্তদের দেহে সমস্ত ভাইরাসের মোট ওজন ২ গ্রাম। অর্থাৎ দুই ফোঁটা পানির সমান। এর পরেও কিসের এতো অহংকার!

আমরা অনেকেই জানিনা, কেন এই মহামারী আসে। কখনো জানতেও চাইনা। ভাবি, মহামারী এসেছে আবার একসময় চলেও যাবে। মহামারী আসার প্রকৃত কারণ যদি মানবজাতি সঠিকভাবে উপলব্ধি করতে পারতো তাহলে এই পৃথিবীতে এতো অশান্তি, মারামারি, গণহত্যা, ধর্ষণ, যেনা-ব্যভিচার থাকতোনা।

বিপদ/ মহামারী কে ঘৃণা করার কোন সুযোগ নেই। এটা কারো জন্য পৌষ মাস আবার কারো জন্য সর্বনাশ। অনেক সময় মহামারী এবং বিপদের কারণেই মানুষ তার পাপের রাজ্য থেকে প্রভূর ছায়াতলে ফিরে আসে।আবার যখন মানুষ পাপের দিক থেকে সীমালঙ্ঘন করে ফেলে তখন তাকে পৃথিবী থেকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে এই মহামারীর আবির্ভাব হয়।

মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মাঝে মাঝে তার বান্দাদের ভয়, মুসিবত ও বিপদ দিয়ে পরীক্ষা করে থাকেন। সুতরাং এই সময়ে ধৈর্যধারণ করে আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইতে হবে।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, “আর আমি অবশ্যই তোমাদের পরীক্ষা করবো কিছু ভয়, ক্ষুধা এবং জানমাল ও ফল-ফলাদির স্বল্পতার দ্বারা। আর তুমি ধৈর্য্য শীলদের সুসংবাদ দাও” ~ (সূরা বাকারা-১৫৫)।

হাদীস শরীফে মহানবী (সাঃ) বলেছেন, “যখন কোন সম্প্রদায়ের মাঝে ব্যভিচার ও অশ্লীলতা ছড়িয়ে পরে তখন সেখানে মহামারী দেখা দেয়। ~(ইবনে মাজাহ)।

মহান আল্লাহ মানুষের জন্য জীবনব্যবস্থা হিসেবে দিয়েছে আল কোরআন। কোরআনের বিধান মেনে চলা প্রত্যেক মানুষের জন্য আবশ্যক। এর ব্যত্যয় ঘটলে আল্লাহর পক্ষ থেকে দুনিয়ায় নেমে আসে শাস্তি যার ফল অনেক নিরপরাধ মানুষকেও ভোগ করতে হয়।

তাই আসুন, মহামারীর এই সময় টাতে সারাবিশ্বের সামনে ইসলামের সুমহান আদর্শ তুলে ধরি। অন্য ধর্মাবলম্বী মানুষদেরকে ভালোবাসা দিয়ে ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট করে তুলতে পারি। বিপদের এই সময়টিতে আমরা সবাই দুঃস্থ ও দরিদ্রদের পাশে দাঁড়াই এবং পাপের পথ থেকে প্রভুর দিকে ফিরে আসি।


লেখকঃ শিক্ষার্থী, ইংরেজি বিভাগ, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ

Leave a Comment