করোনা ভাইরাসের প্রভাবে স্থবির হয়ে পড়েছে গোটাবিশ্ব, থেমে গেছে অর্থনীতির সকল চালিকাশক্তি। বন্ধ রয়েছে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ায় সবাইকে হোম কোয়ারেন্টাইনে অবস্থান করতে হচ্ছে। করোনা দুর্যোগের পূর্ববর্তী সময়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাত্রনেতাদের সারাদিন ব্যস্ততা আর সাংগঠনিক কাজকর্মের মধ্য দিয়ে কাটতো।
সারাদিন ব্যস্ততা প্রবণ সেই সকল ছাত্রনেতারাও অধিকাংশই নিজ গৃহে অবস্থান করছেন আবার অনেকেই জীবন বাজি রেখে করোনাযুদ্ধে নিজেকে শামিল করেছেন। তাই করোনাকালে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি) শাখা ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দের সময় কেমন কাটছে তা নিয়ে সাক্ষাৎকার নিয়েছেন দ্য ক্যাম্পাস টুডে’র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি ওয়াশিম আকরাম। কথা বলেছেন আসন্ন কমিটিতে বিভিন্ন পর্যায়ে শীর্ষ পদপ্রত্যাশী শাখা ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দের সাথে-
শহীদ মসিয়ূর রহমান হল শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি বিপ্লব কুমার দে শান্ত জানান, “করোনাকালীন সময়ে হোম কোয়ারেন্টাইনে নয়, আমার সময় কাটছে মানুষের পাশে থেকে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে ও দেশরত্ন শেখ হাসিনার ভিশন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি।
করোনায় সৃষ্ট এই সংকটময় সময়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নির্দেশনা অনুযায়ী এবং যশোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদের সহযোগিতায় অস্বচ্ছল, অনাহারী ও কর্মহীন মানুষের মাঝে নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী, সচেতনতা মূলক লিফলেট, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও মাস্ক বিতরণ করেছি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে যোগাযোগ রেখে এই আপৎকালীন সময়ে সৃষ্ট সমস্যা দূরীকরণে সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছি । ছাত্রলীগের কর্মী হিসাবে করোনাকালীন বৈশ্বিক এ দুর্যোগে নিজেকে সর্বাত্মকভাবে মানবকল্যাণে নিয়োজিত করার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।”
“ভালোই কাটছে হোম কোয়ারেন্টাইন, কিন্তু ক্যাম্পাসের সবাইকে অনেক মিস করছি, যাদের প্রয়োজন আছে যতটুকু পারছি তাদের পাশে থাকার চেষ্টা করছি। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, বাসার ছাদ, নিচতলা হাঁটাহাটি করেই সময় যাচ্ছে, আসলে সবাই সচেতন না হলে এ যুদ্ধে জয়ী হওয়াটা প্রায় অসম্ভব।কষ্ট হলেও সবার থেকে দূরে আছি যেটা রাজনীতি তে অনেক কষ্টকর” এমনটাই বলেছেন শাখা ছাত্রলীগের সদ্য সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আফিকুর রহমান অয়ন।
করোনার এ দুর্যোগের সময়ে নিজের কর্মতৎপরতা তুলে ধরতে শহীদ মসিয়ূর রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক সোহেল রানা বলেন, “করোনার আঘাতে বিশ্বের প্রায় দুইশতাধিক দেশের মতো বাংলাদেশও বিপর্যস্ত, ঠিক সেই মুহুর্তে দিন এনে দিন খাওয়া মানুষেরা অনাহারে-অর্ধাহারে দিনানিপাত করছে, মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো অন্যের সাহায্য চাইতেও ইতস্তত বোধ করছেন।
তাদের জন্য নিজ এলাকার ছাত্রলীগ নেতাদের নিয়ে প্রায় দু’সপ্তাহের খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেছি। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ কর্মীদের সহায়তায় প্রায় ৫০টি পরিবারের একসপ্তাহের খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেছি এবং যবিপ্রবির সাবেক ছাত্রদের সহায়তায় বর্তমান ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে থেকে নাম গোপন করে প্রায় ৩৫ জনের অার্থিক সহায়তায় প্রদান করেছি। তবে পুরোটা সময় বাড়িতেই থেকে কাজ করার চেষ্টা করছি,বাড়িতে মা’বাবাকে সময় দিচ্ছি।”
শাখা ছাত্রলীগের সদ্য সাবেক তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক মোঃ আল মামুন শিমন বলেন,বঙ্গবন্ধুর নিজের হাতে গড়া সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের আদর্শ কর্মী হিসেবে এই পরিস্থিতিতে,সমাজের খেটে খাওয়া অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো আমার কর্তব্য এর পরিপেক্ষিতে আমি নিজের জীবনকে বাজি রেখে সমাজের খেটে খাওয়া মানুষের পাশে থেকেছি এবং থাকবো।
পাশাপাশি একজন শিক্ষিত নাগরিক হিসেবে তাদেরকে সতর্ক করেছি। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে করোনা সংক্রান্ত সকল বিষয় তুলে ধরেছি যাতে করে সকলে সচেতন হতে পারে। অসুস্থ, বৃদ্ধা মায়ের সেবায় কাটছে আমার হোম কোয়ারান্টাইন, পরিবারকে সময় দিচ্ছি। আশা করি সব আবার আগের মতো হয়ে যাবে। আপনারা মহান আল্লাহ এর কাছে দোয়া করেবেন যেনো দ্রুত তিনি আমাদের এই মহামারি থেকে সবাইকে রক্ষা করেন।
শাখা ছাত্রলীগের সদ্য সাবেক উপ-প্রচার সম্পাদক ইলিয়াস হোসাইন বলেন, “করোনা প্রতিরোধের প্রধান উপায় জনসচেতনতা আর জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কর্তৃক উপজেলার প্রতিটি ওয়ার্ডে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ সেচ্ছাসেবক টিম গঠন করেছেন আর আমি টিমের দলনেতার দায়িত্ব পালন করছি।
নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে সরকারী নির্দেশনা অনুযায়ী জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। এছাড়া ছাত্রলীগের প্রতিনিধি হিসাবে আমার ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের করোনা মোকাবেলা ত্রান কমিটির সদস্য হিসাবে অসহায়, কর্মহীন মানুষের বাড়িতে খাদ্য ও ত্রাণসামগ্রী পৌছে দিয়ে নিজের দায়িত্ব পালন করছি।”