করোনাভাইরাস পরিবেশের জন্য আর্শীবাদ

যেখানে পুরো বিশ্ব ব্যস্ত করোনায় আক্রান্ত ও মারা যাওয়া মানুষের হিসাব নিয়ে, সেখানে প্রকৃতি যেন তার উল্টো হিসাবে ব্যস্ত। সে যেন বিন্দুমাত্র উদ্বিগ্ন নয়। মনুষ্য তাণ্ডবের আড়ালে আবডালেই চলছে তার হঠাৎ জাগরণের খেলা। নীরব, নির্জন, কোলাহলমুক্ত পরিবেশে মায়াময় প্রকৃতি নিজের সুষমা, সৌন্দর্য রাশি যেন একের পর এক তুলে ধরছে।

আজ বিশ্ব পরিবেশ দিবস। সারাবিশ্বে একযোগে পালিত হবে দিবসটি। দিবসটি নিয়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কী ভাবছেন তাই জানার চেষ্টা করেছেন ইমানুল সোহান


করোনা ভাইরাস পরিবেশের জন্য আর্শীবাদ

প্রত্যেকটি দিবস পালনের একটি তাৎপর্য রয়েছে। নির্দিষ্ট বিষয়বস্তুর সমস্যা-সম্ভাবনা নিয়ে সর্তকতা ও করণীয় জানতে বা জানাতে দিবসের স্বীকৃতি দেওয়া ও পালন করা হয়। পরিবেশের প্রতি মানুষের সচেতনতা বাড়াতে, পরিবেশকে বাঁচিয়ে রাখতে পরিবেশ দিবস পালিত হয়।

দিন দিন মানুষের কারণে পরিবেশের পরিসংখ্যান হুমকির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। মাটি, বায়ু এবং পানির গুণগত মান ভালো থাকলে পরিবেশ আমাদের জন্য আশীর্বাদ। অন্যথায় পরিবেশ আমাদের মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে আমাদের সাথে লড়াই করবে। ফলে মানুষের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাবে, এতে পৃথিবী নামক রাজ্যে রাজত্ব করবে অন্যকোন প্রাণী।

খুশির সংবাদ হচ্ছে- লকডাউনের কারণে কমেছে পানি, বায়ু এবং মাটি দূষণ। করোনা ভাইরাস মানুষের জন্য অভিশাপ হলেও পরিবেশের জন্য আকাশচুম্বী আশীর্বাদ। আসুন আমরা অযথা পরিবেশ দূষিত না করি, নিজেদের সুস্থ রাখি।

শাফিউল কায়েস
পরিবেশ বিজ্ঞান ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বশেমুরবিপ্রবি)।



নিজে পরিবেশ দূষণমুক্ত রাখি এবং অন্যকে আগ্রহী করি

গোটা পৃথিবী জুড়ে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর গ্যাস নির্গমন আর প্রচুর পরিমানে ক্ষতিকর রাসায়নিক বর্জ্য নিষ্কাশনের ফলে প্রকৃতি ও পরিবেশ দূষণের সাথে বৃদ্ধি পাচ্ছে পৃথিবীর তাপমাত্রা। সেই সাথে পরিবর্তন ঘটছে পৃথিবীর আবহাওয়া ও জলবায়ুর। ফলে মেরু অঞ্চলের বরফ গলে পানিতে রুপান্তরিত হয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা। যা বর্তমান সময়ের সবথেকে উদ্বেগের বিষয়। সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়ে পৃথিবীর নিন্মভূমির দেশ গুলো তলিয়ে যাওয়ার আগেই বিশ্ববাসীর মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করা দরকার।

পাহাড়কাটা বন্ধ, বৃক্ষনিধন না করা, গাড়ির কালো ধোঁয়া বন্ধ রাখার চেষ্টা করা সহ অন্যান্য সচেতনতা মুলক কাজ নিজে করার পাশাপাশি অন্যকে সচেতন এবং আগ্রহী করে তুলতে হবে। কারন আমাদের চারপাশের পরিবেশটা আমাদের, এটা দূষণমুক্ত রাখার দায়িত্বটাও আমাদের । আমরা নিজেরা যদি একটুখানি সচেতন হয়ে নিজেদের চারপাশের পরিবেশটা দূষন মুক্ত রাখি তাহলে আমাদের গোটা পৃথিবী দুষন মুক্ত হবে।

সোয়াদুজ্জামান সোয়াদ
এগ্রিকালচারাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, হাজী মোহাম্মাদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, দিনাজপুর।



পরিবেশ রক্ষার্থে গাছ লাগানোর বিকল্প নেই

প্রতিদিন বাড়ছে পৃথিবীর ভূ-পৃষ্ঠের তাপমাত্রা। এতে জলবায়ুর বিরাট পরিবর্তন ঘটছে। এ পরিবর্তন মানবজাতির জন্য একটি বিপদজনক ঘটনা। জলবায়ুর পরিবর্তনে জীব-বৈচিত্র্য এবং পরিবেশ দিন দিন বিরাট হুমকির মুখে পড়ছে। জলবায়ুর পরিবর্তনে বৃষ্টিপাত ও তাপমাত্রার পরিবর্তন ঘটছে। ফলে কৃষি উৎপাদনে প্রভাব পড়ছে। পৃথিবী পৃষ্ঠের তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে বরফ গলে সমুদ্রের পানির পরিমান বাড়ছে। এতে ঘূণিঝড় সহ নতুন নতুন প্রাকৃতিক দূর্যোগের আগমন ঘটছে।

এছাড়াও তাপমাত্রা বৃদ্ধি জনিত কারণে মানুষের নিত্য নতুন রোগে মত্যুর সংখ্যা দিন দিন ভারি হচ্ছ। এছাড়াও পলিথিন পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। তারপরেও থেমে নেই পলিথিনের উৎপাদন ও ব্যবহার। একটি পলিথিন শত শত বছরেও নষ্ট হয় না। মাটিতে থেকে যায়। ফলে মাটির ভেতরের অণুজীবগুলো বৃদ্ধি পেতে বাঁধাগ্রস্থ হয়। এতে মাটির উর্বরতা ধ্বংস হয়।

আমাদের পরিবেশ রক্ষা করতে ব্যাপক বৃক্ষ রোপন, পলিথিনের বিকল্প ব্যবহার, সঠিক বর্জ্য ব্যাবস্থাপনা এবং ব্যক্তিগত পর্যায়ে সচেতনতা তৈরি করতে হবে। একই সাথে পরিবর্তিত পরিবেশের সাথে সবাইকে মানিয়ে নেয়ার সক্ষমতা অর্জন করতে হবে।

ইরফান মাহমুদ রানা
লোক-প্রশাসন বিভাগ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ

Leave a Comment