করোনা কালে রাবি নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহায়তার হাত

উম্মে কুলসুম রিমা


করোনাভাইরাস বা কোভিড-১৯ বিশ্বে আজ এক আতঙ্কের নাম৷ করোনার বিষাক্ততায় পুরো বিশ্ব আজ যেন বিষাক্ত। গত ডিসেম্বরে চীনের ‘উহান’ শহরে ধরা পড়া এ ভাইরাসটি ধীরে ধীরে পুরো বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে৷ ছোঁয়াচে রোগ হওয়ার দরুন এর ছড়িয়ে পরার হার যেন একটু বেশিই।

করোনায় স্তম্ভিত হয়ে পড়েছে বিশ্বের উন্নত – অনুন্নত সকল দেশ। মৃতের সংখ্যা আজ হাজার থেকে লাখে ছাড়িয়ে গেছে। প্রতিষেধক আবিষ্কৃত না হওয়ায় এ সংখ্যা দিন দিন আরও বেড়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বিশ্বের এ সংকটময় পরিস্থিতিতে উন্নত দেশগুলোই যখন মুখ থুবড়ে পড়ে গিয়েছে তখন বাংলাদেশের মত নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশের পক্ষে এ ধাক্কা সামলে উঠা যেন এক বিশাল চ্যালেঞ্জ। কিন্তু সরকারের পাশাপাশি দেশের সকল শ্রেণীর মানুষ যদি তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী এগিয়ে আসে তাহলে সরকারের পক্ষে এ সংকট কাটিয়ে উঠা অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে।

এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে দেশের এ সংকটকালে অন্যান্য বিভাগের মত নিজ জায়গা থেকে এগিয়ে এসেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবির) নৃবিজ্ঞান বিভাগ। ছাত্র-শিক্ষক সকলের প্রচেষ্টায় একটি ফান্ড তৈরি করা হয়েছে যেখানে বিভাগের সকল ব্যাচের শিক্ষার্থী সহ শিক্ষকরা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। ফান্ড থেকে উত্তোলিত অর্থ দিয়ে প্রথমত বিভাগের গরীব ও অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের পাশে দাড়ানো হচ্ছে। এক্ষেত্রে তাদের পরিচয় গোপন রাখা হচ্ছে।

রাবি নৃবিজ্ঞান ২১ তম ব্যাচের পক্ষ থেকে একটি ফান্ড তৈরি করেছে যেখানে ব্যাচের শিক্ষার্থীরা তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী অর্থ সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি জানায়। প্রতি মাসের ২৫ তারিখ এর ভিতর তারা তাদের টাকা বিকাশ বা রকেট যোগে পাঠিয়ে থাকেন। শিক্ষকদের পাশাপাশি ব্যাচের দুই জন শিক্ষার্থী ‘আদর’ ও ‘অর্পা’ অর্থ সংগ্রহের এ বিষয়টির দায়িত্ব নেন।

এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে বিভাগের ২১ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ‘শাহানা আক্তার আইরিন’ বলেন, “দেশের এ সংকটময় পরিস্থিতিতে সকলের নিজ নিজ জায়গা থেকে এগিয়ে আসা উচিত। আমাদের এমন অনকে বন্ধু আছে যারা অর্থকষ্টে ভুগছে কিন্তু লোকলজ্জার ভয়ে হয়তো বলতেও পারছে না, ব্যাচের সকলের তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসাটা আমি একপ্রকার দায়িত্ব বলে মনে করি “। তাই, সবকিছু বিবেচনা করে আমরা এ মহতী উদ্যোগে সকলে এগিয়ে এসেছি।

তিনি আরও বলেন, মানবতার সেবায় নিজেকে বিলিয়ে দেয়ার মাঝেই যেন প্রকৃত সুখ। সরকারের পাশাপাশি আমরা সকলে যদি এভাবে এগিয়ে আসি তাহলে এ যাত্রা অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে৷

“নিপাত যাক করোনা, শুদ্ধ হোক ধরণী”


লেখক- শিক্ষার্থী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *