ইমানুল সোহান, ইবি- করোনা ভাইরাস প্রতিরোধক টিকার রেজিস্ট্রেশন নিয়ে বিপাকে পড়েছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হলেও সুরক্ষা অ্যাপে রেজিস্ট্রেশন করছে পারছে না শিক্ষার্থীরা।
এদিকে ইউজিসি ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নোটিশ দিলেও যথাযথ নির্দেশনা দেয়নি বলে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
তথ্য সূত্রে, গত ২ই জুলাই শিক্ষার্থীদের টিকা দিতে ইউজিসির নির্দেশনা মোতাবেক সুরক্ষা অ্যাপে নিবন্ধনের নির্দেশ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে ইবি কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তর থেকে পাঠানো প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ইবির আবাসিক শিক্ষার্থীদের কোভিড-১৯ টিকা গ্রহণের লক্ষ্যে সঠিক এনআইডি নম্বর সহ সুরক্ষা অ্যাপে নিবন্ধন করতে হবে। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিকা সংক্রান্ত ফরম যেসব শিক্ষার্থী পুরণ করেছে তাদেরও অ্যাপে নিবন্ধন করতে বলা হয়।
এদিকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর শিক্ষার্থীরা বারবার নিবন্ধনের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হচ্ছে বলে জানা গেছে। এ ছাড়া যেসব শিক্ষার্থীর জাতীয় পরিচয়পত্র নেই তারা আবাসিক হওয়া সত্ত্বেও আবেদন করতে পারছেন না। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শিক্ষার্থীরা মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছেন।
এ বিষয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী হৃদয় পাল বলেন ‘নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে গিয়ে টিকার জন্য কয়েকবার নিবন্ধন করেছি। ইউজিসির সিদ্ধান্ত মোতাবেক এবার সুরক্ষা অ্যাপে নিবন্ধন করতে বলা হয়েছে। কিন্তু নিজের সব তথ্য প্রদান করেও নিবন্ধন করতে পারছি না। বিড়ম্বনা এবং প্রতিবন্ধকতা ছাড়াই আমরা নিবন্ধন করে দ্রুত টিকা নিতে চাই।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের আবাসিক শিক্ষার্থী আশরাফিয়া তাসনিম বলেন, ‘ এর আগে হলে গিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপিসহ প্রয়োজনীয় তথ্যাদি জমা দিয়েছি। আবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নির্দেশনা মোতাবেক অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করেছি। একটা টিকার জন্য এতবার নিবন্ধন করা কষ্টকর। আমাদের ভোগান্তি কমিয়ে টিকা রেজিস্ট্রেশন সহজ করতে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়ন সংসদের সাধারণ সম্পাদক জি কে সাদিক বলেন, ‘টিকার রেজিষ্ট্রেশন আরও সহজ প্রক্রিয়ায় হওয়া দরকার। নয়তো শিক্ষার্থীদের অনেকেই ঠিক মতো রেজিস্ট্রেশন করতে পারবে না। ভোগান্তি আর নানাবিধ জটিলতায় শিক্ষার্থীরা রেজিষ্ট্রেশন করতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে। শিক্ষার্থীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সেন্টারের আওতায় হল কার্ডের মাধ্যমে যদি টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয় তাহলে তা বেশি ফলপ্রসূ হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আব্দুস সালাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের তালিকা ইউজিসি বরাবর পাঠানো হয়েছে। টিকা দেয়ার জন্য ইউজিসি আমাদের চিঠি দিয়েছে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ বিবেচনায় নিয়ে ইউজিসির সাথে কথা বলবো।’
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সচিব ফেরদৌস জামান বলেন, মন্ত্রণালয় থেকে আমাদের কাছে তালিকা চাওয়া হয়েছে। এ জন্য আমরা আবার নতুন করে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছি। এর আগেই অনেকগুলো বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের কাছে তালিকা পাঠিয়েছে। আমরা তাঁদের তালিকা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। যারা তালিকা পাঠিয়েছে তাঁদের রেজিস্ট্রেশনের প্রয়োজন নেই। তালিকা থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সবার মোবাইলে মেসেজ চলে যাবে। আগে আবাসিক শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়া হবে। পর্যায়ক্রমে অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের দেওয়া হবে। ৩০ লাখ টিকা শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দ আছে।