নিরাপত্তাকর্মীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা

করোনা দুর্যোগে কুবি প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ তহবিল গঠন

কুবি প্রতিনিধিঃ বিশ্বব্যাপী চলমান করোনা দুর্যোগের ফলে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে নিজ বিভাগের অসচ্ছল শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর জন্য বিশেষ তহবিল গঠন করেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ।

প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সকল শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে এ বিশেষ তহবিল গঠন করা হয়। করোনা সংকটে বিভাগের সমস্যাগ্রস্থ শিক্ষার্থী এবং তাদের পরিবারের জন্য প্রয়োজন অনুযায়ী তহবিল থেকে ব্যয় করা হবে।

প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ছাত্র সমন্বয়কদের একজন নাজমুল হাসান জানান, কোভিড-১৯ এর কারনে সৃষ্ট সমস্যা একটি বৈশ্বিক সমস্যা। প্রত্নতত্ত্ব পরিবারের প্রতিটি সদস্য এই সমস্যা মোকাবেলায় ব্যক্তি পযার্য়ে নানাভাবে কাজ করছে এবং আমরা বিভাগের শিক্ষার্থীরা সবাই সবার পাশে দাঁড়ানোর মাধ্যমে পারিবারিক বন্ধনকে দৃঢ় করার জন্যই এই তহবিল গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। শিক্ষকরাও অামাদের সাথে একমত হন।

চলমান সংকটকালীন সময়ে প্রত্নতত্ত্ব পরিবারের অনেক শিক্ষার্থীকেই সমস্যার মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে। প্রত্নতত্ত্ব একটি পরিবার এবং বিভাগের সবাই অামাদের ভাই-বোন। সেই উপলব্ধি থেকেই বিভাগের শিক্ষার্থী যারা বর্তমান পরিস্থিতিতে নূ্ন্যতম জীবনধারণে বেগ পাচ্ছে তাদেরকে সহযোগিতার জন্য বিভাগের উদ্যোগে একটি বিশেষ তহবিল গঠনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। উক্ত ফান্ড থেকে যাদের প্রয়োজন সেই সকল শিক্ষার্থীদের পরিবারের পাশে দাঁড়াবে বিভাগ।

বিভাগীয় প্রধান মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন,’বিভাগের শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনে অামরা সাথে অাছি। শিক্ষার্থীদের প্রতি অনুরোধ লজ্জ্বায় পড়ার কিছু নেই বিভাগ পরিবারের মত। শিক্ষকদের না জানাতে পারলে বন্ধুদের যেন জানায়। তবুও এই পরিস্থিতিতে যারা খারাপ অবস্থায় অাছে তারা একবেলাও যেন না খেয়ে থাকে। বিভাগের সকল শিক্ষক শিক্ষার্থীরা অান্তরিকতার সহিত এগিয়ে এসেছেন। দায়িত্ব নিয়ে তহবিল গঠনে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা এগিয়ে এসেছেন তাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। ইনশাল্লাহ্ অামরা সবাই মিলে এই সমস্যার সমাধান করতে পারবো।’

বিভাগের ছাত্র উপদেষ্টা মুর্শেদ রায়হান বলেন, করোনার এই সঙ্কটকালীন মূহুর্তে বিপদগ্রস্ত বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ। আর এর প্রভাব আমাদের আর্থসামাজিক অবস্থাকেও সঙ্কটাপন্ন করে তুলেছে। বিশেষ করে নিম্ন আয়ের এবং মধ্যবিত্ত জনগোষ্ঠীর একটা বড় অংশ এই মূহুর্তে আর্থিক অস্বচ্ছলতার মুখে। আমাদের শিক্ষার্থীদের একটা বড় অংশ এই পরিবারগুলো থেকে এসেছে। এদের অনেকেই টিউশনি করে নিজেদের ব্যয় নির্বাহসহ পরিবারের ব্যয় নির্বাহ করে থাকে। টিউশনিসহ অন্যান্য উপার্জন বন্ধ থাকায় নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য ও অন্য উপকরণ কেনা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।

এরকম অনেক পরিবার বর্তমানে মানবেতর জীবনযাপন করছে। এ অবস্থায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা এগিয়ে এসেছে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে। বিভাগের শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহায়তার জন্য একটি ফান্ড গঠন করেছে। পাশাপাশি শিক্ষার্থীরাও তাদের সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। এটিই হলো প্রত্নতত্ত্ব পরিবারের বন্ধন। এই মূহুর্তে এই সহায়তাটিই সবচেয়ে প্রয়োজন হলেও এটা আসলে একটা দায়িত্ব। এই সঙ্কটকালে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের এ প্রয়াস তাদের আন্তরিকতার বহিঃপ্রকাশ।

তিনি আরও জানান, বাস্তবতা হলো এ ধরনের কনট্রিবিউশন আসলে প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম এবং এর মাধ্যমে দীর্ঘদিন খুব বেশি সহযোগিতা করা সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে এগিয়ে আসতে হবে। করোনার এ সঙ্কট আমাদের দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক সঙ্কটে ফেলবে। তখন শিক্ষার্থীদের সহায়তা করতে হবে সেন্ট্রাল একটা ফান্ড গঠনের মাধ্যমে। এখন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ তাদের শিক্ষার্থীদের জন্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিলেও সবাইকে সমন্বিত হয়েই এ ভূমিকা পালন করতে হবে। সরকারকেও এ দিকটায় নজর দিতে হবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *