জন্মদিনে হাজারো শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ভালোবাসায় সিক্ত হাবিপ্রবি উপাচার্য

তানভির আহমেদ, হাবিপ্রবি প্রতিনিধি


অধ্যাপক ড.মু.আবুল কাসেম। ১৯৫৩ সালের আজকের এই দিনে লালমনিরহাট জেলার বড়খাতার শেখ সুন্দর গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মৌলভী নুর আহমেদ আকন্দ (মৃত) মাতা জমিরুন নেছার (মৃত)ঘরকে আলোকিত করে জন্ম নেন তিনি।এখন তিনি নিজের সেই আলোকে ছড়িয়ে যাচ্ছেন।

যখন নানামুখী সমস্যায় জর্জরিত ছিল দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। ক্যাম্পাস ভিসি শূন্য ছিল প্রায় ৩ মাসের অধিক। ঠিক সেই সময় উন্নয়ন ও আলোর বার্তা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি হয়ে ক্যাম্পাসে আসেন অধ্যাপক ড.মু.আবুল কাসেম।নামটি এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২ হাজার শিক্ষার্থীদের কাছে প্রিয়ময়। একইসাথে শিক্ষক-কর্মকর্তা,কর্মচারীসহ সকল সহকর্মীদের কাছে।

সমস্যায় জর্জরিত ক্যাম্পাসে এসেই তিনি দিলেন বিশ্ববিদ্যালয়কে আধুনিকায়ন ও আন্তর্জাতিকমানে উন্নীত করার প্রতিশ্রুতি। সেই প্রত্যাশার কথাগুলো আজ বাস্তবায়িত। শতবাধা উপেক্ষা করে দায়িত্বের ৪ বছর শেষ হওয়ার আগেই সেশনজট অনেকটা কমিয়ে এনেছিলেন।বর্তমানে করোনা পরিস্থিতির কারনে আবার সেই অংশে বাধার সৃষ্টি হয়েছে।

শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশামত প্রতিবছর করেছেন আন্তঃবিভাগ ক্রীড়া প্রতিযোগিতা,বৃক্ষ মেলা,বই মেলা,স্থাপত্য প্রদর্শনীসহ বিতর্ক প্রতিযোগিতা। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের গুনগত শিক্ষাগ্রহণে অধ্যয়নের পরিবেশ এবং লেখাপড়ার মান কে করেছেন আরও মানসম্পন্ন। বিশ্ববিদ্যালয়কে সাজিয়েছেন আধুনিক স্থাপত্য শৈলী প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সংমিশ্রণে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী,কর্মকর্তাদের পরিবহনের জন্য তার মেয়াদে মাত্র সাড়ে তিন বছরে পরিবহন পুলে যুক্ত হয়েছে ১৩ টি যানবাহন । একাডেমিক ল্যাবগুলো পেয়েছে নতুন যন্ত্রপাতি,সৃষ্টি হয়ে ভার্চুয়াল ক্লাসরুম। আবাসন ও শ্রেনী সংকট কমাতে নির্মিত হচ্ছে ১০তলা বিশিষ্ট একটি একাডেমিক ভবন ও ৬ তলা বিশিষ্ট ছাত্রী হল। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের গুনগত শিক্ষাগ্রহণে অডিটোরিয়ামে করেছেন সভা- সেমিনার।

শিক্ষক,কর্মকর্তাদের আরও বেশি দক্ষ করে গড়ে তুলতে করেছেন নিয়মিত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা। যা আগে হাবিপ্রবিতে অবহেলিত ছিল।

কৃষি গবেষণা কর্মকাণ্ড ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে করেছেন “কৃষি,মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ গবেষণা কমপ্লেক্স” প্রতিষ্ঠা । এ গবেষণা কমপ্লেক্সে ডেইরি, পোল্ট্রি,মৎস্য, এবং শস্য উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে গবেষণা করা হয়। বৃহত্তর দিনাজপুরের কৃষক পরিবারের সেবা প্রদানের লক্ষ্যে “ভ্রম্যমান ভেটেনারি ক্লিনিক” চালু করেন তিনি। কৃষক পরিবারের গৃহপালিত গবাদি পশু প্রাণীর চিকিৎসা প্রদানের লক্ষ্যে সকল সুযোগ সুবিধা সম্পন্ন অত্যাধুনিক ভ্রাম্যমান ভেটেনারি ক্লিনিকটি হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রথম বাংলাদেশে শুরু করে।

তার এই উদ্যোগের ফলে বৃহত্তর দিনাজপুরের কৃষক পরিবারগুলো অত্যন্ত উপকৃত হচ্ছে। বৃহত্তর দিনাজপুরের কৃষকদের কৃষি সেবা প্রদানের লক্ষ্যে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন “কৃষক সেবা কেন্দ্র” । উপাচার্যের বাস্তবায়িত এই উদ্যোগও বাংলাদেশে প্রথম‌। বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য গ্র্যাজুয়েটদের চাকরি, পিএইচডি, ফেলোশিপ, বিদেশে স্কলারশিপ ইত্যাদি সেবা এবং পরামর্শের লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে “ক্যারিয়ার এডভাইজারী সার্ভিস” তিনি নিজ হাতে শুরু করেন। এই সার্ভিস এর ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া ছাত্র ছাত্রী বৃন্দ তাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে সঠিক দিকনির্দেশনা পাচ্ছেন।

তাইতো মাত্র সাড়ে তিন বছরের ব্যবধানে হাজারো শিক্ষার্থীর মনিকোঠায় স্থান করে নিয়েছেন অধ্যাপক ড.মু.আবুল কাসেম। আজ ভিসি ও শিক্ষার্থীদের প্রিয় শিক্ষক ড.মু.আবুল কাসেম এর জন্মদিন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক- শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর ভার্চুয়াল ভালোবাসায় সিক্ত হচ্ছেন ভিসি। কেউ ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, আধুনিক হাবিপ্রবি স্বপ্নদ্রষ্টা, অনুপ্রেরনার বাতিঘরসহ নানান কথা। সবশেষে সবাই সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে ভিসিকে জানিয়েছেন জন্মদিনের শুভেচ্ছা বার্তা শুভ জন্মদিন স্যার। শুভ হোক আপনার আগামীর দিনগুলো।

সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড.মু.আবুল কাসেম জানান,ছাত্র-ছাত্রীদের ভালোবাসাই আমার কাজের শক্তি।সবার শ্রদ্ধা,ভালোবাসা নিয়ে আমি আমার জীবনের বাকী সময়টুকু কাটাতে চাই। যে কয়দিন ভাইস চ্যান্সেলরের দায়িত্বে আছি সেই কয়টা দিনকে আমি কাজে লাগাতে চাই। শিক্ষক, শিক্ষার্থী,কর্মকর্তা ও কর্মচারী সকলকে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নে কাজ করতে চাই,হাবিপ্রবিকে আধুনিক ও আন্তর্জাতিকমানে উন্নীত করতে চাই।আমার এই উন্নয়নের কাজে সবাইকে আমি পাশে চাই। সবাই ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন এই প্রত্যাশা করি।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ

Leave a Comment