নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ বন্ধ!

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ বন্ধ!

জাককানইবি প্রতিনিধি: বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান উন্নয়ন প্রকল্পের নির্মাণাধীন দুটি হলের নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

আজ সোমবার (১৩জুলাই) বেলা ১২ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জয় বাংলা ভাস্কর্যের সামনে করা মানববন্ধন থেকে এ ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।

মানববন্ধন থেকে সাত (৭) দফা দাবি তুলে ধরেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমিটির সদস্য শাহীন হোসাইন সাজ্জাদ।

দফাগুলোর মধ্যে রয়েছে ৭ দিনের মাঝে নিম্ন মানের কাজ ও সময়ক্ষেপণের জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে তদন্ত ও রিপোর্ট পেশ। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে হল গুলো বুঝিয়ে দেওয়ার মুচলেকা দিতে হবে অন্যথায় সকল কাজ বন্ধ করা দেওয়া হবে। এলোমেলো ও পরিবেশ ধ্বংসকারী মাস্টার প্ল্যান পরিবর্তন করতে হবে। শিক্ষার্থীদের সমর্থন নিয়ে সুপরিকল্পিত প্ল্যান গ্রহণ করতে হবে। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ঢেকে যায় বা আড়াল হয় এমন কোন স্থাপনা করা যাবেনা । নবনির্মিত গেস্ট হাউজের স্থান পরিবর্তন করতে হবে।মসজিদের কাজ দ্রুত শুরু করতে হবে । ঠিকাদারদের সাথে যোগসাজশ ও অনৈতিক সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ উঠায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন ওয়ার্কসের পরিচালক হাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে দ্রুত তদন্তে কমিটি গঠন ও ব্যবস্থা করতে হবে।

এবিষয়ে কথা বলতে চাইলে হাফিজুর রহমান অভিযোগ তুলে বলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান উন্নয়ন প্রকল্পের দুটি হলের নির্মাণ কাজ আটকে রেখেছে শিক্ষার্থীরা। তবে কারা বন্ধ করেছে তাদের নাম বলতে চাননি তিনি। তিনি আরো বলেন এর আগেও অনেকবার কাজ বন্ধ করা হয়েছে। আর এই করোনার সময় সম্পূর্ণ শক্তিতে কাজ করা যাচ্ছে না। সামাজিক নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই কাজ করতে হচ্ছে। তবে আমাদের কাজ শেষ পর্যায়ে। এখন বাঁধা আসলে কাজের শক্তি থেমে যাবে। যারা আটকে রেখেছে তাদের প্রতি অনুরোধ থাকবে আমাদের কাজ। করতে দিন অতি দ্রুতই সম্পন্ন করতে পারবো আমরা। আমার বিষয়ে তদন্ত হোক তাতে আমার কোন বাঁধা নেই আমাদের কাজ করতে দিলেই শিক্ষার্থীদের সমস্যা সমাধান সম্ভব। সরকারের নির্দেশনা মেনে কাজ করলে পনেরো (১৫) দিনে শেষ করা যাবে না।

কাজ কারা বন্ধ করেছে, কেন বন্ধ করেছে এমন প্রশ্নের জবাবে রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) কৃষিবিদ ড. হুমায়ুন কবীর বলেন, কারা এমন করছে তাদের অনুসন্ধান চলছে। করোনার এই সময়ে সরকারি কাজ বন্ধ করা উচিত নয়। এতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ভোগান্তিতে পড়বে।

এব্যাপারে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক অভি সাব্বির মানবন্ধনে সংহতি জানিয়ে বক্তব্যে বলেন- সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবীর সাথে আমি একমত পোষণ করি। এটা একটা যৌক্তিক দাবি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বার-বার শিক্ষার্থীদের সাথে প্রতারণা করে আসছে যার সাথে প্রশাসনের কিছু দায়িত্বশীল কর্মকর্তারাও জড়িত আছে বলে জানা গেছে। আমি এর সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি।

এছাড়াও মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন অগ্নিবীণা হল ছাত্রলীগের সাবেক উপ-প্রচার সম্পাদক আশরাফুজ্জামান পারভেজ, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমিটির সদস্য শাহীন হোসাইন সাজ্জাদ । এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কলা অনুষদ ছাত্রলীগের সভাপতি আবু নাঈম আব্দুল্লাহ ।

মানববন্ধনে ঘোষণা দেয়ার পর থেকেই উন্নয়ন প্রকল্পের দুটি হলের কাজ বন্ধ রয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর।

উল্লেখ্য, দুটি হলের নির্মান কাজ ২০১৬ সালে শুরু হয়ে ২০১৮ সালে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও নানা কারণে কাজ এখনও শেষ হয়নি। হল নির্মাণের দায়িত্বে আছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ভাওয়াল কন্সট্রাকশন । এর পূর্বে বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের নির্মাণকাজও আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছিল শিক্ষার্থীদের নামে তবে কোন শিক্ষার্থীরা আটকিয়ে রেখেছিলো প্রশাসন তাদের নাম বলতে চায়নি। অন্যদিকে পরিকল্পনা দপ্তর প্রধানের নামে পূর্বেও অভিযোগ করেছিলো শিক্ষার্থীরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *