রাবি প্রতিনিধি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শহীদ শামসুজ্জোহা হল সংলগ্ন পুকুর খননকাজ বন্ধের নির্দেশনা থাকলেও প্রশাসনের নির্দেশনাকে উপেক্ষা করে খনন কাজ চালিয়ে যাচ্ছে ইজারাদার মাসুদ রানা।
খননকৃত এই মাটি নিটকবর্তী এক কবরস্থানে নেয়া হচ্ছে বলে জানান সেখানে কর্মরত কয়েকজন শ্রমিক।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের মার্চ মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুজ্জোহা হলের পূর্ব পাশের প্রায় ১০ বিঘা জমিতে পুকুর তৈরির জন্য দরপত্র হয়। বিশ্ববিদ্যালয়-সংলগ্ন বুধপাড়া এলাকার মাসুদ রানা দরপত্রে সর্বোচ্চ দর দিয়ে চার বছরের জন্য পুকুরটির ইজারা পান।
জানা যায়, দরপত্রের শর্ত অমান্যের অভিযোগ তুলে গত ২৮ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি প্রকল্প কর্তৃপক্ষ উপাচার্য বরাবর অভিযোগ দাখিল করে। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ২ এপ্রিল সিন্ডিকেট সভায় বিষয়টি আলোচনা করেও সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত নিতে ব্যর্থ হয় প্রশাসন। তবে পহেলা এপ্রিল মৌখিকভাবে পুকুরের ইজারাদারকে খননকাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পরবর্তীতে ৮ এপ্রিল জরুরি সভা ডেকে আনুষ্ঠানিকভাবে খননকাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়।
কৃষি প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, দরপত্রের শর্ত ছিল খননের পর পুকুরের পাড় বাঁধাই করে অতিরিক্ত মাটি পাশেই রাখতে হবে। এ মাটি ব্যবহারের বিষয়ে কৃষি প্রকল্প সিদ্ধান্ত নেবে।
এদিকে ক্যাম্পাসের মাটি পাচারের খবরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও চলছে নানা সমালোচনা। এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মতিহার হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মোশতাক আহমেদ তার ফেসবুক ওয়ালে লিখেন, ‘আবেদন করেও হলের সামনে উঁচুনিচু জায়গায় সমতা আনার জন্য মাটি পাই না, আর বাইরে পাচার হয়।’ মাটি পাচার রোধে প্রশাসনকে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।
এবিষয়ে কৃষি প্রকল্পের উপদেষ্টা কমিটির সভাপতি ও উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা বলেন, ‘১৭টি শর্তের ওপর ভিত্তি করে আমাদের দরপত্রের চুক্তি হয়েছিলো। তার মধ্যে অন্যতম হলো- “খননকৃত মাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যেই রাখতে হবে।” কিন্তু তারা শর্ত ভঙ্গ করে মাটি বাইরে নেওয়ায় আমরা ব্যবস্থা নিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি।’
নির্দেশনা অমান্য করে মাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে নিয়ে যাবার ঘটনায় প্রশাসনের অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাইলে রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আবদুস সালাম জানান, ‘তাঁর এ বিষয়ে কথা বলার এখতিয়ার নেই।’ এরপর তিনি এবিষয়ে আর কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহানকে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
শর্ত ভেঙে মাটি বাইরে নেওয়ার ব্যাপারে জানতে ইজারাদার মাসুদ রানাকে একাধিকবার ফোন করে তাকে পাওয়া যায়নি।