নির্ধারিত সময় পার হলেও শেষ হয়নি বুটেক্স বঙ্গবন্ধু ভবনের নির্মাণ কাজ

শামীম, বুটেক্স


শ্রেণিকক্ষের অপ্রতুলতা, শিক্ষকদের অফিস, ক্যানটিন ব্যবস্থা, ছাত্রীদের জন্য পর্যাপ্ত শৌচাগারের অভাব সহ নানান সমস্যায় অব্যাহত বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুটেক্স) একাডেমিক কার্য্যক্রম।

এ সকল সমস্যা দূর করতে ২০১৭ সালে পাশ হয়েছিল ১৫তলা বিশিষ্ট বঙ্গবন্ধু ভবন নির্মাণ কাজের প্রকল্প। একই বছরের জুন মাস থেকে নির্মান কাজ শুরু করে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে এ ভবন প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করার কথা ছিল।

তবে, নানান জটিলতায় পেছাচ্ছে এ ভবনের নির্মান কাজ। ইতোমধ্যেই এ প্রকল্পের জন্য নির্ধারিত ৩০ মাসের সময় শেষ হয়েছে। কন্সালটেন্টদের সময়ের অভাব, অসম্পূর্ণ ও জটিল ডিজাইন, নির্মানকালীন বৃষ্টিপাত, রাজনৈতিক সন্ত্রাসীদের চাদাবাজী সহ নানা কারণে এ বিলম্ব হচ্ছে বলে জানা যায়।

এ ব্যাপারে কথা বললে ’দ্যা ক্যাম্পাস টুডে’ কে প্রকল্প ম্যানেজার জনাব আকবর হোসেন বলেন, “২০১৭ সালে আমরা যখন কাজ শুরু করি, তখন প্রচুর বৃষ্টিপাতের কারণে বেজমেন্টের ৩ মাসের কাজে প্রায় ৭-৮ মাস সময় লেগে যায়। এছাড়া সামনের দিকে ৪০ ফুট সমপরিমাণ উচ্চতা খালি রেখে তারপর কাজ করার কারণে বাড়তি ৩ মাস সময় লেগেছে।”

তিনি আরও উল্লেখ করেন, “কিছু ডিজাইন নতুন করে পরিবর্তন করায় এবং বাতাস আসা যাওয়ার ব্যবস্থা রাখতে জটিল কিছু নতুন ডিজাইনের কাজ করতে হয় বলে নির্মান কাজ বিলম্বিত হচ্ছে।”

নির্মান কাজের এ বিলম্ব হাসিমূখেই মেনে নিচ্ছে বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন। শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালনা ও তত্তাবধানে ভবনের কাজ চললেও প্রশাসনের পক্ষে কাজ তদারকি ও দেখভাল করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকল্প উন্নয়ন পরিচালক আব্দুস সাত্তার। নির্মান কাজের এ বিলম্ব কোন ধরনের অবহেলার কারণে হচ্ছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘অবহেলা না। এই ধরনের কাজ সময়মতো করা যায় যে তা না। ওরা কাজ করে পারছে না।”

সময়ের স্বল্পতা নিয়ে তিনি আরও বলেন, “ওরা বলে, ৩০ মাস কম সময়। এটা আমরাও বুঝি। কিন্তু টেন্ডারের সময় তারা এসব কিছু বলে নি।”

ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি বুয়েটের কন্সালটেন্টদের সময়ের অভাব ও সিদ্ধান্তহীনতাকে দায়ী করছেন সংশ্লিষ্টরা। জানা যায়, জটিল ডিজাইন বলে সময়মতো সিদ্ধান্ত দিচ্ছে না কন্সালটেন্টরা। এছাড়া বেশিরভাগ সময় তারা বিদেশে অবস্থান করেন বলে এমনটা হচ্ছে।

ভবন নির্মাণের কাজ ৯০ শতাংশ শেষ হয়েছে বলে জানা যায়। তবে, নির্ধারিত সময় অতিবাহিত হলেও নিয়মমাফিক আনুষ্ঠানিকভাবে সময় বাড়ানো হয় নি। তাই, প্রশ্ন উঠেছে কাজের বৈধতা নিয়ে। এ ব্যাপারে প্রকল্প উন্নয়ন পরিচালক বলেন, “নতুন করে সময় তাদের দিতে হবে। তবে, আনুষ্ঠানিকভাবে সেগুলো এখনও সম্পন্ন হয় নি।”

সম্পূর্ণ ভবন নির্মাণ কাজ কবে শেষ হবে এমন তথ্য দিতে পারছেন না কেউ। দাবি অনুযায়ী জানুয়ারির মধ্যে বেজমেন্ট ২ তলা সহ ৬ তলা পর্যন্ত কাজ শেষ করে বুটেক্স প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে আশা প্রকাশ করেন প্রকল্প ম্যানেজার।

নতুন এ ভবনে ১ম বর্ষের (৪৬তম ব্যাচ) শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু হবে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা যায়। ইতোমধ্যেই সম্মুখভাগের ফটকের কাজ, লাইট ফ্যান সহ ইউটিলিটি লাগানোর কাজ শেষ হয়েছে। এছাড়া মাঠের দিকে ভবনের দক্ষিণ পাশে বসার জন্য গ্যালারি তৈরির কাজ চলছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *