পোস্টঅফিস

 

চিঠি লিখেছে বউ আমার ভাঙা ভাঙা হাতে,,,,

একসময় চিঠিই ছিলো যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম।চিঠির পাতার এক একটা শব্দে ছিলো হাজারো আবেগ,ভালোবাসা।

এক চিঠির জন্য অপেক্ষা করতে হতো সপ্তাহ বা মাস।প্রেমিক – প্রেমিকার অব্যক্ত কথাগুলোর ঠাই মিলতো এসব চিঠিতে।

পিতামাতা ও তাদের শহুরে অবস্হানরত সন্তান- সন্ততির মধ্যকার যোগাযোগও হতো চিঠির মাধ্যমে।

এছাড়াও যোগাযোগের যাবতীয় কার্যাদি সম্পূন্ন হতো এই চিঠিতেই।

চিঠিগুলো আদান-প্রদানের জন্য পোষ্ট অফিস সর্বদা থাকতো মুখরিত ও ব্যস্ত।একই সাথে পোস্ট অফিসে অবস্থানরত ডাক- হরকরা এ বাড়ি থেকে ও বাড়ি চিঠি বিলি করে বেড়াত।

কিন্তু কালের পরিক্রমায় ইন্টারনেটের বদৌলতে এবং ইমেইল,ফেসবুক,মেসেন্জার,
ইমো,হোয়াটসঅ্যাপ ইত্যাদির সংস্পর্শে চিঠির আবেদন অনেকটাই ফুরিয়ে গেছে।ঘন্টার পর ঘন্টা এখন এসবের মাধ্যমে তথ্য আদান-প্রদান করা যায়।

তবে,সেই আবেগঘন হৃদয় থেকে
ঝরে পড়া অব্যক্ত কথাগুলো ঠাই পায় না, কলমের কালিতে লেখা খাম মোড়ানো কোন চিরকুটে।প্রেমিকা ও তার প্রেমিকের চিঠির পথ পানে চেয়ে থাকে না।

এছাড়াও,চিঠি পেয়ে ঘরের কোন এক কোণে চিঠির লাইন পড়তে পড়তে কল্পনার রাজ্যে প্রেমিক যুগল এখন আর বিচরণ ও করে না।

চিঠির গুরুত্ব কমে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে গেছে চিঠি বিলি করার মাধ্যম পোস্টঅফিস গুলো।
প্রায় বেশিরভাগ পোস্ট অফিসগুলোতে ঝুলতেছে তালা।ডাকহরকরাবৃন্দ তাদের পেশা ছেড়ে নাম লিখিয়েছে অন্য পেশায়।

হয়তো বাংলাদেশের মানুষ আর চিঠি লিখবে না প্রিয়জনকে।লেখা হবে না কোন গান চিঠি কেন্দ্রীক।কোন প্রেমিকা চিঠি পড়তে পড়তে হারিয়ে যাবে না তার প্রেমিককে নিয়ে কল্পনার কোন স্বর্গরাজ্যে।তবে পোস্টঅফিসগুলো সান্ত্রীর মতো হয়তো আর ও বহুকাল দাড়িয়ে থাকবে চিঠির সেই সোনালী যুগকে মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য।

Scroll to Top