বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাংচুরে জড়িতদের বিচার দাবি

বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাংচুরে জড়িতদের বিচার দাবি

বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাংচুরে জড়িতদের বিচার দাবি

রাবি প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধুর নির্মাণাধীন ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবি জানিয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষকরা।

রবিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবন চত্বরে আয়োজিত এক মানববন্ধনে এ দাবি জানান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ।

মানববন্ধনে প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. এম মজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে বক্তারা বলেন, প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ মনে করেন স্বাধীনতা বিরোধী ও উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী কর্তৃক বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ভাস্কর্য এবং দেশে বিদ্যমান অন্যান্য ভাস্কর্যের বিরোধিতা না করে শুধুমাত্র বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের বিরুদ্ধাচারণ উদ্দেশ্য প্রণোদিত এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধের পরিপন্থী। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ধর্মীয় মৌলবাদী চক্রের এহেন ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ ও কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কার্যকরী আইনী পদক্ষেপ গ্রহণসহ তাদেরকে অবিলম্বে বিচারের আওতায় এনে শাস্তি প্রদানের দাবি জানান।

মানবন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষক-শিক্ষিকা অংশগ্রহণ করেন।

একই ঘটনায় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে এদিন দুপুর ১২টার দিকে দলীয় টেন্ট থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে সংগঠনের নেতাকর্মীরা। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে একই স্থানে এসে শেষ হয়। কর্মসূচিতে অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

কুষ্টিয়া শহরের পাঁচ রাস্তার মোড়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্মাণাধীন ভাস্কর্যে ভাঙচুর চালায় দুর্বৃত্তরা। এতে ভাস্কর্যের বিভিন্ন অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুরের প্রতিবাদ জানিয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি

চবি প্রতিনিধিঃ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাংচুরের প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। ৫ডিসেম্বর রাতে শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর মোঃ এমদাদুল হক এবং সাধারণ সম্পাদক মনজুরুল আলমের সাক্ষরিত এক লিখিত বিবৃতিতে এ প্রতিবাদ জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়,” বিগত কয়েকদিন যাবত একটি সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য স্থাপনের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক ও বিভ্রান্তিকর বক্তৃতা ও বক্তব্য প্রদানের মাধ্যমে জাতির জনকের সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃতে অপ্রতিরোধ্য গতিতে উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় এগিয়ে চলা বাংলাদেশের স্থিতিশীল পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করার হীন উদ্দেশ্যে লিপ্ত রয়েছে।

আর এরই ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধু কর্তৃক ”পূর্ব পাকিস্তানকে” “বাংলাদেশ” নামকরণের দিবসে ৫ ডিসেম্বর ২০২০ শুক্রবার রাত আনুমানিক ২টায় কুষ্টিয়া পৌরসভার পাঁচ রাস্তার মোড়ে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের উপর কাপুরুষোচিত হামলা চালিয়ে ভাস্কর্যটির অংশবিশেষ ভেঙে ফেলেছে। মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর এ উদ্ধত ও অপতৎপরতা জাতির জনকের নেতৃত্বে মুক্ত এ স্বাধীন বাংলাদেশে সহ্য করা হবে না।

ভাস্কর্য মানুষের নান্দনিকাবোধ প্রকাশের এক চিরন্তন মাধ্যম যা মানব সভ্যতার ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সাংস্কৃতিক উৎকর্ষতার প্রতীক স্বরূপ । তাই ভাস্কর্যকে মূর্তির সাথে এক করে বক্তব্য প্রদান বাংলাদেশের উদার, অসাম্প্রদায়িক ও গণতন্ত্রমনা আপামর ধর্মপ্রাণ জনগণকে বিভ্রান্তিতে ফেলে দেয়ার উদ্দেশ্যে এক শ্রেণীর ধর্মীয় উগ্রবাদীদের হীন মানসিকতারই বহিঃপ্রকাশ।

জাতির জনকের ভাস্কর্যের ক্ষতিসাধনকারী ও ভাস্কর্য বিরোধীতাকারীদের সাথে এ দেশের আপামর ধর্মপ্রাণ মানুষের কোন সম্পৃক্ততা থাকবে না। জাতির জনকের ভাস্কর্যের ভাঙচুরের সাথে জড়িতদের প্রতিহত করতে চ.বি. শিক্ষক সমিতি বদ্ধপরিকর এবং এসকল দুষ্কৃতিকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি বিধানের জন্য সমিতি সরকারের নিকট জোর দাবী জানাচ্ছে।

বঙ্গবন্ধুর ভাষ্কর্য ভাঙচুর ঘটনায় নোবিপ্রবিতে প্রতিবাদ সমাবেশ

নোবিপ্রবি প্রতিনিধিঃ কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাঙচুর ও অবমাননা করায় প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ বিশ্বাসী শিক্ষক ও কমচারীবৃন্দ।

রবিবার ৬ তারিখ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আফসানা মৌসুমির পরিচালনায় উক্ত প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

এসময় নোবিপ্রবি কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফারুক উদ্দিন, শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ আল-মামুন, স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের সভাপতি মফিজুল ইসলাম, ফিসারিজ এন্ড মেরিন সায়েন্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শুভ ভৌমিকসহ অন্যান্য শিক্ষক ও কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

উক্ত সমাবেশে নোবিপ্রবি কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফারুক উদ্দিন বলেন, “আওয়ামী সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে বঙ্গবন্ধুর ভাষ্কর্য ভাঙচুরের ঘটনাটি আমাদের মর্মাহত করেছে। অনতিবিলম্বে ভাস্কর্য ভাঙচুর ঘটনার সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।”

এসময় অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ আল-মামুন বলেন, “মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ সম্পর্কিত যেকোনো প্রশ্নে আমাদের আপোষ নেই। যারা জাতির পিতার ভাস্কর্য ভেঙ্গেছে তাদের কোনোভাবেই ছাড় নয়।”

স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের সভাপতি মফিজুল ইসলাম বলেন, “আওয়ামী সরকার যখন দেশকে সর্বোচ্চ উন্নয়নের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাচ্ছে, ঠিক তখনই একটি গ্রুপ দেশকে অস্থিতিশীল করার উদ্দেশ্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য অবমাননা করে চলেছে। এছাড়া তিনি অতিদ্রুত জড়িতদের শনাক্ত করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান।

বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙ্গনের প্রতিবাদে শেকৃবিতে বিক্ষোভ মিছিল

শেকৃবি প্রতিনিধি: বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য নির্মাণ নিয়ে সারাদেশ যখন উত্তপ্ত।একদিকে বর্তমান সরকারের দলীয় সংগঠন আওয়ামী লীগ ভাস্কর্য নির্মাণের পক্ষে অন্যদিকে ইসলামিক রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক দলগুলো ভাস্কর্য নির্মাণের বিরুদ্ধে।

এমন নাজুক সময়ে, গত ৫ ই ডিসেম্বর শনিবার কুষ্টিয়া শহরের পাঁচ রাস্তার মোড়ে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা শেখ মুজিবুর রহমানের একটা নির্মাণাধীন ভাস্কর্যের হাত ও মুখের কিছু অংশ ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে।
কে বা কাহারা এমন ন্যাকারজনক কাজ করেছে সে বিষয়ে এখনো হদিস পায়নি কর্তৃপক্ষ। তবে অপরাধীদের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে।

শেখ মুজিবের ভাস্কর্য ভাঙনে বিক্ষুব্ধ রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ। আজ ৬ ই ডিসেম্বর (রোববার) ১১.৩০ ঘটিকায় শেকৃবি ছাত্রলীগ ভাস্কর্য ভাঙনের প্রতিবাদ স্বরূপ বিক্ষোভ মিছিল করে।জয় বাংলা স্লোগান ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে রুখে দেওয়ার স্লোগানে মিছিলটি মুখরিত ছিলো।

এছাড়াও এমন ন্যাকারজনক কাজে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্হা করতে সরকারের নিকট জোর দাবী জানায় -শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ।

বশেমুরবিপ্রবিতে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুরে শিক্ষকদের প্রতিবাদ

বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধিঃ বঙ্গবন্ধুর নির্মাণাধীন ভাস্কর্য ভাঙচুর, ভাস্কর্য নির্মাণে অপব্যাখ্যা এবং বঙ্গবন্ধুর প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শনের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) শিক্ষকরা।

রবিবার দুপুর দেড়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে শিক্ষক সমিতির ব্যানারে মানববন্ধনটি অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. শাহজাহান, বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জাকিয়া সুলতানা মুক্তা এবং শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দসহ আরও অনেকে বক্তব্য রাখেন।

বক্তারা বলেন, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি এবং জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য নির্মাণের বিরোধিতা করে সম্প্রতি কিছু ধর্মান্ধ উগ্র মৌলবাদী গোষ্ঠী বঙ্গবন্ধুকে কটাক্ষ ও অবমাননা করে বক্তব্য দিয়েছে যা রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল। সেই সঙ্গে কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধুর নির্মাণাধীন একটি ভাস্কর্য ভাঙচুরের মত ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে। অতীতেও বিভিন্ন মৌলবাদী গোষ্ঠী ধর্মভিত্তিক অপরাজনীতির মাধ্যমে এদেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছে কিন্তু সফল হতে পারেনি এবং ভবিষ্যতেও পারবে না।

মানববন্ধনে বশেমুরবিপ্রবির শিক্ষকদের পক্ষ থেকে ধর্মান্ধ অপশক্তির সকল অপচেষ্টার বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করা হয় এবং নির্মাণাধীন ভাস্কর্য ভাংচুরে জড়িতসহ ধর্মের অপব্যাখ্যাকারীদের চিহ্নিত করে অতি দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়।

এছাড়াও মানববন্ধনের পাশাপাশি বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. হাসিবুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক মো. রকিবুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিও প্রকাশ করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *