আমরণ অনশনে ইটিই বিভাগ

বশেমুরবিপ্রবি: উপাচার্যের মিথ্যা আশ্বাস, আমরণ অনশনে অসুস্থ ২


বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বশেমুরবিপ্রবি)


দীর্ঘ ৩ মাস ধরে আন্দোলনে ইটিই বিভাগের শিক্ষার্থীরা

দীর্ঘ তিন মাস ধরে ইলেকট্রনিক্স এন্ড টেলিকমিউনিকেশন ইন্জিনিয়ারিং (ইটিই) বিভাগকে ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইন্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের সাথে একীভূতকরণের দাবিতে চূড়ান্ত পরীক্ষা ও ক্লাস বর্জন করে আন্দোলন করে আসছে ইটিই বিভাগের প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী।

রবিবার (১৯ জানুয়ারি) সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে আমরণ অনশনে বসেন তারা। এটি তাদের ২য়বারের মত আমরণ অনশন । এর আগে ১৫ জানুয়ারি তারা বিভাগ একীভূতকরণের দাবিতে প্রথমবার আমরণ অনশনে বসেন।

যেকারণে ফের আমরণ অনশনে তাঁরা

আমরণ অনশনরত শিক্ষার্থীরা জানান, আন্দোলরত শিক্ষার্থীরা দীর্ঘ তিন মাস শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালন করার পরেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি । এ কারণে গত ১৫ জানুয়ারি (৯১তম দিনে) তাঁরা আমরণ অনশনে বসে। পরে একই দিনে উপাচার্যের আশ্বাসে তা স্থগিত করি। কিন্তু উপাচার্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় আমরা আবারো আমরণ অনশনে বসছি।

ইটিই ৩য় বর্ষের ছাত্র শিহাব শাহরিয়ার বলেন,”বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ শিক্ষকদের আশ্বাসে গত ১৬ জানুয়ারি আমরা অনশন কর্মসূচি স্থগিত করে ১৭ জানুয়ারি আলোচনায় বসেছিলাম। উক্ত আলোচনায় আগামী ২৬ জানুয়ারির মধ্যে আমাদের দাবির যৌক্তিকতা বিচারে একটি তদন্ত কমিটি গঠনসহ তিনটি প্রস্তাব দিয়েছিলাম। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের প্রস্তাবে রাজি হয়নি।”

ফের আমরণ অনশন নিয়ে ইটিই বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী কামরুল হাসান বলেন, ‘দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাব।’

কেন তাঁরা ইইই বিভাগের একীভূতকরণের দাবি করছে?

তাদের দাবি নিয়ে এলাধিক শিক্ষার্থী জানান ‘ক্রমাগতভাবে ইটিই বিভাগের চাকরিক্ষেত্র কমে আসছে। ইটিই এবং ইইই বিভাগের অ্যাকাডেমিক কারিকুলাম প্রায় একই হলেও চাকরি ক্ষেত্রে ইইইকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। এ সকল কারণে আমরা ইটিইকে ইইই-এর সঙ্গে একীভূতকরণের দাবিতে ৯০ দিন ধরে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছি।’

শিক্ষার্থী আরো জানান, ইলেকট্রনিকস টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের (ইটিই) পাঠ্যসূচির সাথে ইলেক্ট্রিক্যাল এন্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের পাঠ্যসূচি ৮০% থেকে ৯০% মিল থাকা সত্ত্বেও চাকুরী ক্ষেত্রে বৈষম্য কথা ও শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে ইটিই বিভাগকে ইইই তে রুপান্তর করার দাবি।

আমরন অনশনে অসুস্থ দুই, হাসপাতালে ভর্তি

এই আমরণ অনশনে অসুস্থ হয়েছেন ইটিই বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের আকাশ বিশ্বাস এবং ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের নাফিসা। উভয়েই গোপালগঞ্জের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

এ ব্যাপারের প্রশাসনের বক্তব্য

ইটিই বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. শাহজাহান ‘দ্য ক্যাম্পাস টুডে’ কে বলেন, “রেজিস্ট্রার বরাবর স্মারকলিপি পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। এছাড়া আমি রুটিন দায়িত্ব (ভারপ্রাপ্ত) পালন করায় এবিষয়ে কিছু করা যাচ্ছে না। এমতাবস্থায় নতুন ভিসি নিযুক্ত হওয়ার পর এ সমস্যা সমাধানে অবহিত করা হবে।”

ওই বিভাগের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. নূরউদ্দিনন আহমেদ সাক্ষরিত একটি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয়, বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ শাহজাহানের এখতিয়ারের বাইরে।


উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ইটিই বিভাগের নাম ইইই বিভাগে একীভূতকরণের দাবিতে তারা গত বছরের ১৭ই অক্টোবর থেকে চূড়ান্ত পরীক্ষা ও ক্লাস বর্জন করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে। ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন অব্যাহত রাখে। এমনকি গত ২৭শে নভেম্বর সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষায়ও অংশ নেয়নি তারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *