বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গ্রামীণ উদ্যোক্তাদের ভূমিকা

আবু জাফর আহমেদ মুকুল


একটি দেশের অর্থনৈতিক বিকাশে উদ্যোক্তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বাংলাদেশের জনসংখ্যা, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস)-২০১৯ উপাত্ত অনুযায়ী, ১৬ কোটি ৫৭ লাখ, মোট জনগোষ্ঠীর ২১.৪% শহরে বাস করে, বাকি ৭৮.৬% গ্রামাঞ্চলে বসবাস করেন। জাতীয় বিকাশের পাশাপাশি সামাজিক বিকাশের জন্য গ্রামীণ উদ্যোক্তা বিকাশ প্রয়োজনীয়।

একজন উদ্যোক্তা মূলধন গঠনের প্রচার করে এবং সমাজে সম্পদ তৈরি করে এবং প্রক্রিয়াটিতে বেকারত্ব এবং দারিদ্র্য হ্রাস করে। গ্রামীণ উদ্যোগকে গ্রাম পর্যায়ে উদীয়মান উদ্যোক্তা হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা যেতে পারে যা বিভিন্ন ধরণের ব্যবসা যেমন শিল্প, শিল্প, কৃষিকাজ এবং অর্থনৈতিক বিকাশের শক্তিশালী উপাদান হিসাবে কাজ করতে পারে। তারা দেশীয় সম্পদ ব্যবহার করে যা স্থানীয় প্রাকৃতিক সম্পদের ব্যবহার এবং স্থানীয় জীবনযাত্রাকে উন্নত করে।

এটি সাধারণত গ্রাম পর্যায়ে উদ্ভূত উদ্যোক্তা হিসাবে সংজ্ঞায়িত হয় যা বিভিন্ন ধরণের ব্যবসা যেমন শিল্প, শিল্প, কৃষির মতো উদ্যোগ এবং অর্থনৈতিক বিকাশের শক্তিশালী উপাদান হিসাবে কাজ করতে পারে। গ্রামীণ অঞ্চলের বিকাশকে পূর্বের তুলনায় আরও বেশি উদ্যোগের সাথে যুক্ত করা হয়েছে। ব্যক্তি, পরিবার এবং সম্প্রদায়ের জীবনমান উন্নত করার জন্য এবং একটি স্বাস্থ্যকর অর্থনীতি ও পরিবেশ বজায় রাখার জন্য উদ্যোক্তা একটি বাহন হিসাবে দাঁড়িয়েছে।

গ্রামীণ উদ্যোক্তা কৃষি, কৃষির সাথে সম্পর্কিত ক্রিয়াকলাপ, ক্ষুদ্র শিল্প, ক্ষুদ্র ব্যবসায়, গ্রামীণ কারিগর এবং অন্যান্যগুলিতে বজায় রাখে। তবে, সচেতনতা, উত্সাহ এবং প্রশিক্ষণের অভাবে গ্রামীণ উদ্যোক্তা সুপ্ত পর্যায়ে রয়েছে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের দেশজ মোট উৎপাদনে (জিডিপি) অবদান ২৫ ভাগ, সেখানে সব শিল্প খাতের রয়েছে ৩৫ শতাংশ। বর্তমানে দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি ৭৮ লাখ উদ্যোক্তাই জিডিপিতে এ অবদান রাখছেন। এ সংখ্যা আরও বাড়লেই দেশের অর্থনীতির পরিধি বড় হবে এবং এ ক্ষেত্রে সরকারের যথাযথ পদক্ষেপ ও ব্যবস্থাপনা দরকার ।

গ্রামীণ অর্থনীতিতে অবদান বাড়ছে নারী উদ্যোক্তাদের। শহরের পাশাপাশি এখন গ্রামেও বাড়ছে নারী উদ্যোক্তা। গ্রামীণ অবকাঠামো নির্মাণ, গ্রামীণ পরিবহন ও যোগাযোগ এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার হওয়ায় স্বল্প আকারে হলেও বাড়ছে নারী উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগ। এ ক্ষেত্রে গ্রামীণ পরিবারগুলোর আয় ও কর্মসংস্থান বাড়াতে অকৃষি খাতের অবদানও বাড়ার তথ্য পাওয়া গেছে।

গ্রামীন সেবা খাতগুলোর মধ্যে রয়েছে বিউটি পার্লার, বিকাশ, নাগাদ, এজেন্ট ব্যাংকিং, স্বাস্থ্য ও ফার্মেসী সেবা, ফটো স্টুডিও, সার্ভিসিং ভিত্তিক কার্যক্রম পাম্প মেরামত ও সার্ভিসিং সহ জ্বালানী ইঞ্জিন পরিষেবা অন্তর্ভুক্ত , মোবাইল, রেফ্রিজারেটর যানবাহন মেরামত, খুচরা বা পাইকারের দোকানে সরবরাহকৃত পরিষেবা, মুদ্রণ, হোটেল এবং রেস্তোঁরা, চা স্টল, সার, কীটনাশক এবং বীজ বিক্রির দোকান, সাপ্তাহিক টুপি, মাছের ব্যবসা , টেক্সটাইল ভিত্তিক কাজগুলির মধ্যে বুনন, কাটা, এবং টেইলারিং এবং মেরামত এর অন্তর্ভুক্ত।

স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের বয়স এখন ৪৯ বছর। এই সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ অনেক এগিয়েছে। আর এই এগিয়ে যাবার পেছনে অন্যতম প্রধান শক্তি হচ্ছে-তরুণ সমাজ। জাতীয় যুব নীতি অনুসারে বাংলাদেশের ১৮-৩৫ বছর বয়সী জনগোষ্টিকে যুব হিসেবে সংঞ্জায়িত করা হয়েছে। এ বয়সসীমার জনসংখ্যা দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ, যা আনুমানিক ৫ কোটি। তরুণরাই দেশের সম্পদ। পৃথিবীর ইতিহাসে পরিবর্তনের সকল ধারায় তরুণদের ভুমিকা অনস্বীকার্য। এমনকি বাংলাদেশ একটি স্বাধীন রাষ্ট্র উপহার দেবার জন্য তরুণদের অগ্রণী ভূমিকা রয়েছে।

তরুণরাই পারে দেশের উন্নতিতে অবদান রাখতে। আর দেশের উন্নতি উত্তরোত্তর বৃদ্ধির জন্য তরুণ উদ্যোক্তা বাড়াতে হবে। তরুণদের উজ্জীবিত করার মাধ্যমে ঈর্ষণীয় এই অগ্রগতির মূলমন্ত্র শিখিয়ে গেছেন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি যে অর্থনৈতিক মুক্তির কথা বারবার বলে গিয়েছিলেন, আজ আমরা সেই মুক্তি অর্জনের পথে।

বঙ্গবন্ধু প্রায় বক্তব্যে বলতেন, ‘দেশের ভাগ্য পরিবর্তন করতে হলে বেকার সমস্যা দূর করতে হবে। একটি দেশের সমস্যা এবং সম্ভাবনা দুটিই তরুণ সমাজের ওপর অনেকাংশে নির্ভর করে। তরুণরা বেকার থাকলে তারা বিপদগ্রস্ত হয়, দেশের জন্য ক্ষতিকর বোঝায় পরিণত হয়। আর কোনো দেশের তরুণ সমাজ যদি কর্মঠ হয় এবং কাজের জন্য পর্যাপ্ত সুযোগ পায়, তাহলে ওই দেশের দ্রুত উন্নতি কেউ আটকাতে পারে না। তরুণদের দীপ্ত মেধা এবং সতেজ জ্ঞানের গতি এই সবুজ-শ্যামল বাংলাকে প্রকৃত সোনার বাংলায় রূপান্তরিত করতে পারে।’

২০০৮ সালে জননেত্রী শেখ হাসিনা তাঁর নির্বাচনী ইশতেহার ডিজিটাল বাংলাদেশের বাস্তবায়নের জন্য তৎকালীন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হিসেবে প্রফেসর ড. আতিউর রহমান স্যারকে নিয়োগ প্রদান করেন। ড. আতিউর রহমান স্যার গভর্নর থাকাকালীন বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে ব্যাপক স্বয়ংক্রিয়তা ও ডিজিটাইজেশন এনেছিলেন এবং তরুণদের কর্মসংস্থানের জন্য ১ লাখ কোটি টাকা লোন দিয়ে এসএমই খাতকে পুর্নবিন্যাস, কৃষককে ১০ টাকা দিয়ে ব্যাংক একাউন্ট খোলার সুযোগ, স্কুল ব্যাংকিং, গ্রিন ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিং ও সর্বোচ্চ বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ, উন্নয়ন ও মানবিক ব্যাংকিং ধারনা প্রবর্তন, পদ্মাসেতুর অর্থায়নে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করেছিলেন ও
সহায়তা করার জন্য এগিয়ে আসাসহ নানাবিধ কাজে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন । এর সুবিধা আজকে ভোগ করছেন গ্রামের প্রান্তিক জনগোষ্ঠি।

গত অর্থ বছরের বাজেটে প্রথমবারের মত নতুন উদ্যোক্তাদের সহায়তার জন্য ১শ’ কোটি টাকা ‘স্টার্ট আপ ফান্ড’ বা ‘নতুন উদ্যোক্তা তহবিল’ গঠন করা হচ্ছে। ২০১৮ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তার নির্বাচনী ইশতেহারে তরুণ যুবসমাজ:‘তারুণ্যের শক্তি, বাংলাদেশের সমৃদ্ধি’কথা তুলে ধরেছেন। তারুণ্যের শক্তিকে কাজে লাগিয়ে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে এবং স্বাবলম্বী তরুণ সমাজ গঠন করতে ২০২১ সালের মধ্যে ‘তরুণ উদ্যোক্তা নীতি’, একটি দক্ষ ও কর্মঠ যুবসমাজ তৈরি করতে ২০২৩ সালের মধ্যে ‘কর্মঠ প্রকল্প’ এবং প্রতি উপজেলায় যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করে স্বল্প ও অদক্ষ তরুণদের দক্ষতা বৃদ্ধি করার পরিকল্পনা নেয় সরকার।

যে সোনার বাংলার স্বপ্ন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু দেখেছিলেন, যে অর্থনৈতিক মুক্তি চেয়েছিলেন মানুষের, যে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সমাজ গড়তে চেয়েছিলেন সবার জন্য, তাঁরই সুযোগ্য কন্যা সফল রাষ্ট্রনায়ক জননেত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে সে পথেই তর তর করে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।

এসডিজির প্রথম লক্ষ্যটি নিয়েই যদি বলি, তাহলে দারিদ্র্য দূরীকরণের মোক্ষম উপায় হচ্ছে মানুষের আয় বৃদ্ধি। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, যেখানে বাংলাদেশে প্রতিবছর ২৬ লাখ তরুণ বেকারত্বের খাতায় নাম লেখাচ্ছেন, সেখানে প্রথম লক্ষ্য পূরণই কি বাংলাদেশের জন্য প্রধান চ্যালেঞ্জ নয়? উত্তরটি হচ্ছে ‘না’। এসডিজির লক্ষ্য ৯-এ বলা আছে শিল্প, উদ্ভাবন এবং অবকাঠামোগত উন্নয়নের কথা। এ উন্নয়ন কাদের হাত ধরে হবে? এ দায়িত্বের ভার নেওয়ার জন্য সবচেয়ে যোগ্য তো তরুণেরাই।

একজন উদ্যোক্তা তাঁর উদ্ভাবনী শক্তি দিয়ে সমস্যা সমাধানের নতুন নতুন উপায়ের জানান দেন, যা সমাজকে একটি ভিন্ন উচ্চতায় নিয়ে যায়। তাহলে এই যে শিল্প বা কৃষি খাত কিংবা রাষ্ট্রের অবকাঠামোগত উন্নয়ন—এই প্রতিটার জন্যই এমন মানসিকতার মানুষ লাগবে, যাঁরা উদ্যোগী। এসডিজির প্রথম লক্ষ্যটি শহর ও মানুষের বসবাসকে একীভূত, নিরাপদ, প্রাণবন্ত এবং টেকসই করা সম্ভব কেবলমাত্র গ্রামীন উদ্যোক্তাদের অর্থনীতিতে অর্ন্তভুক্ত করে।

জাতিসংঘের দেওয়া টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) পূরণে একটা বড় ভূমিকা রাখতে পারেন তরুণ উদ্যোক্তারা। সামাজিক উদ্যোক্তা আন্দোলন থেকে শুরু করে লাভজনক বা অলাভজনক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা, প্রতিটি ক্ষেত্রে সম্ভাবনাময় তরুণ উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসতে হবে। বাংলাদেশকে বিশ্ব মানচিত্রে সম্মানের সঙ্গে প্রতিষ্ঠা করতে হলে তরুণ উদ্যোক্তাদের যথাযথ ভূমিকাই তাই প্রত্যাশিত।

এসএমই ফাউন্ডেশন ও বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) পরিচালিত ‘ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতে নারী উদ্যোক্তা : বাংলাদেশ প্রেক্ষিত ২০১৭’ শীর্ষক গবেষণায় দেখা গেছে, দেশে ২০০৯ সালে শিক্ষিত ২০ শতাংশ নারী ব্যবসায় সম্পৃক্ত ছিলেন। ২০১৭ সালে তা বেড়ে ২৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। দেশের ৮৬ শতাংশ নারী উদ্যোক্তাই বিবাহিত। তাদের ৬৫ শতাংশেরই আবার পারিবারিক ব্যবসা রয়েছে। ৭৫ শতাংশ নারী উদ্যোক্তার বয়স ৩১ থেকে ৫০ বছর। তরুণ নারী উদ্যোক্তার সংখ্যা মাত্র ১৩ শতাংশ (২১ থেকে ৩০ বছর)। শূন্য দশমিক ৫ শতাংশের বয়স ১৫ থেকে ২০ বছর। ঋণ প্রাপ্তি, সামাজিক ও পারিবারিক প্রতিবন্ধকতায় অবিবাহিত নারীরা এখনো উদ্যোক্তা হিসেবে তৈরি হতে পারছেন না।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসা আওয়ামী লীগের ইশতেহারে নির্বাচনী অঙ্গীকার হিসেবে গ্রামকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ইশতেহার ঘোষণাকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, গ্রাম হবে শহর। আমার গ্রাম-আমার শহর’ : প্রতি গ্রামে আধুনিক নগর সুবিধার সম্প্রসারণ- এ প্রতিপাদ্য সামনে রেখে তিনি গ্রাম উন্নয়নের পথ-নকশাও উপস্থাপন করেছেন। তারপর থেকে এ বিষয়টি আমাদের উন্নয়ন আলোচনায় বেশ গুরুত্ব পাচ্ছে।

অতঃপর সংবিধানের ১৬নং অনুচ্ছেদে নগর ও গ্রামের বৈষম্য ক্রমাগতভাবে দূর করার উদ্দেশ্যে কৃষিবিপ্লবের বিকাশ, গ্রামাঞ্চলে বৈদ্যুতায়নের ব্যবস্থা, কুটির শিল্প ও অন্যান্য শিল্পের বিকাশ এবং শিক্ষা, যোগাযোগ ব্যবস্থা ও জনস্বাস্থ্যের উন্নয়নের মাধ্যমে গ্রামাঞ্চলের আমূল রূপান্তর সাধনের জন্য রাষ্ট্র কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়েছে। রাষ্ট্রের এ প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করার জন্য গ্রহণ করা দরকার সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন কর্মসূচি। এর জন্য প্রয়োজন গ্রামীণ অর্থনীতির রূপান্তর।

এ লক্ষ্য অর্জনের জন্য স্বাধীনতার পর থেকেই নিরন্তর কাজ চলছে- বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মসূচি গ্রহণ করা হচ্ছে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ সরকারের বিগত ১০ বছরের শাসনামলে এ কার্যক্রম অনেক বেশি বেগবান হয়েছে।


লেখকঃ উদ্যোক্তা গবেষক ও ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ; এবং সহকারী অধ্যাপক, ম্যানেজমেন্ট এন্ড ফাইন্যান্স বিভাগ, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *