বাবার কাছে মেয়ের আর্তনাদ,”বাবা দরজা খুলে বুকে নাও”

সারাদেশ টুডে:একজন বাবার কাছে সবথেকে মূল্যবান সম্পদ হয়ত তার সন্তান। শিশু সন্তান ডাকছে আর বাবা সাড়া দিচ্ছে না,এরকম চিত্র কল্পনা করতেও কষ্ট হয়। কিন্তু করোনা ভাইরাসের বদৌলতে সেটিও এখন বর্তমান।

‘বাবা দরজা খোলো,বুকে নাও’ করোনা আক্রান্ত এক বাবার কাছে এভাবেই আকুতি জানায় তার শিশু সন্তান বয়সী শিশুকন্যা আলীশাবা রহমান ইবতেজা, যার বয়স মাত্র সাড়ে তিন বছর।

শনিবার একটি ভিডিও প্রকাশ পায় বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের ফেসবুক পেজে।যেখানে বরিশালের কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুর রহমান মুকুল বলেছেন, ‘গত ২৬ মে হঠাৎ করেই শরীরে পরিবর্তন লক্ষ্য করলাম। এরপর ডাক্তারের কথা মতো আলাদা থাকার সিদ্ধান্ত নেই। ৩১ মে নমুনা পরীক্ষার রেজাল্ট পজিটিভ আসে। এরআগে থেকেই আলাদা রুমে থাকা শুরু করি, কিন্তু আমার ছোট্ট মেয়ে এতো কিছু বোঝে না। রাতে অধিকাংশ সময়ে আমার বুকের উপরই সে ঘুমিয়ে পড়ত। এখনও আমার সাথে ছাড়া ঘুমাতে চায় না, কান্নাকাটি করে। এক সময় এভাবেই অনেক রাতে ঘুমিয়ে পড়ে।’

তিনি আরও বলেন, ‘মাঝে মাঝে তার মা বলে, ‘এখন তুমি ঘুমিয়ে পড়, বাবা কাল সকালেই তোমাকে বুকে নেবে।’ সে সকালে উঠে ব্যালকনিতে এসে আবার ডাকতে থাকে। আমার কষ্ট হলেও তার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করি। কিন্তু, সে তাতে সন্তুষ্ট নয় , সে আমার কাছেই আসতে চায়।’

বরিশাল বিভাগের পুলিশ যে কতটা নিঃস্বার্থ ভাবে সেবা দিয়ে যাচ্ছে সেটা একটি পরিসংখ্যান এই বোঝা যাই। বরিশালে করোনা আক্রান্ত ৯৩২ জন এর মধ্যে পুলিশ সদস্য রয়েছেন ৯৯ জন ।

আব্দুর রহমান মুকুল বলেন আরও বলেন, ‘করোনা শনাক্ত হওয়ার পর থেকে সমাজ ও পরিবারের স্বার্থে নিজেকে আলাদা রাখছি। কিন্তু, সাড়ে তিন বছরের মেয়েকে তা বোঝানো সম্ভব না। আগামী ১১ তারিখ পুনরায় পরীক্ষা হবে । আশাকরি এবার রেজাল্ট নেগেটিভ আসবে। আশায় বুক বেঁধে আছি কবে সাড়ে তিন বছর কন্যাকে বুকে নেব।’

গত ২৬ মে থেকে আলাদা কক্ষে থাকছেন তিনি। ব্যালকনির সামনে দাঁড়িয়ে বাবার জন্য চিৎকার করে ওঠে ছোট্ট আলীশাবা। কিন্তু তার বাবার কোনো উপায় নেই। তিনি চাইলেও কোলে নিতে পারেন না ছোট্ট সন্তানকে। করোনাভাইরাস এভাবে বাবা ও শিশু সন্তানকে আলাদা করে দিয়েছে। কিন্তু, তিন বছরের শিশু তো আর বোঝেনা করোনা কি,কেনো তার সাথে এমন টা করা হচ্ছে, তাই সে বাবার বুকেই থাকতে চায়।

সূত্র:
সুশান্ত
দ্য ডেইলি স্টার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *