বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে ডাক্তার: ‘রেপ করে দিলে সব ঠিক হয়ে যাবে’

ক্যাম্পাস টুডে ডেস্ক


রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালের গাইনি বিভাগে এক চিকিৎসকের কাছে যৌন সমস্যা নিয়ে চিকিৎসা নিতে গিয়ে উল্টো হেনস্তার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী আফসারা তাসনিম বুশরা।

এমনকি মেয়েদের ‘স্বামী জংলি হওয়া উচিত এবং রেপ করে দিলে সব ঠিক হয়ে যাবে’ এমন বেফাঁস মন্তব্য করেছেন বলে ফেইসবুক পোস্টে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভুগী ওই শিক্ষার্থী।

ওই ভুক্তভুগী শিক্ষার্থীর দেওয়া ফেইসবুক পোস্ট ঘিরে ব্যাপক আলোচনা তৈরি হয়েছে। অভিযুক্ত চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানিয়েছেন অনেকে।

তবে কাজী শামসুন নাহার নামের ওই চিকিৎসক অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, তার বিরুদ্ধে ‘অপপ্রচার চালানো হচ্ছে’।

এ বিষয়ে স্কয়ার হাসপাতালের ফেসবুক পেইজে সোমবার (১৩ জুলাই) ডা. কাজী শামসুন নাহারের বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে তিনি বলেন, ‘রোগী আমার বিরুদ্ধে মনগড়া অনৈতিক ব্যাখ্যামূলক অপপ্রচার চালাচ্ছেন, যা কাম্য নয়। তার সাথে অসদাচরণ করলে তিনি আইনগত ব্যবস্থা নেবার অধিকার রাখেন। তা না করে আমার ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য এবং হেয় করার উদ্দেশ্যে অপপ্রচার চালাচ্ছেন, যা কোনোভাবে কাম্য নয়।’ স্কয়ার হাসপাতাল অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক ওয়াহিউদ্দিন মাহমুদ বিবৃতির বিষয়টি সাংবাদিকদেরকে নিশ্চিত করেছেন।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী বুশরা গত রোববার রাতে ফেসবুক পোস্টে লেখেন, সম্প্রতি ‘ভ্যাজাইনিসমাস’ সমস্যা বুঝতে পেরে তার মায়ের সঙ্গে আলোচনা করে গত শনিবার কাজী শামসুন নাহারের কাছে যান তিনি। এ সময় সঙ্গে ছিলেন তার মাও। সেখানে পরীক্ষার এক পর্যায়ে এমন মন্তব্য করেন ওই চিকিৎসক।

তিনি ফেসবুকে আরও লিখেছেন, ‘কাঁদতে কাঁদতে চেম্বার থেকে বের হয়েছি। জীবনের সবচেয়ে খারাপ মুহূর্ত ছিল। আমি বিশ্বাস করতে পারছিলাম না, এ ধরনের বাজে কথা শোনার জন্য আমি টাকা দিয়েছি। আমার রাগ হচ্ছিল, কেন এর প্রতিবাদ করলাম না।’

ওই ছাত্রী সাংবাদিকদেরকে বলেন, ওই চিকিৎসক বার বার জানতে চান, তার বিয়ে হয়েছে কি না। তিনি বলেন, ‘তিনি আমাকে বলেন, বিয়ে না হলে এত কনসার্নড কেন? সময়ের আগে কিছু জানা উচিত না। এটা আধুনিকতার লক্ষণ না।’ ওই ছাত্রী বলেন, ডা. শামসুন নাহার যৌনাঙ্গ পরীক্ষার সময় তিনি ব্যথা পাচ্ছিলেন জানালে ওই চিকিৎসক ক্ষেপে গিয়েছিলেন।

বুশরা বলেন, ‘চেম্বার ত্যাগ করার আগে ডাক্তার বলেন, ‘এসব মেয়েদের হাজবেন্ড জংলি টাইপের হওয়া উচিত, যাতে তারা একেবারে রেপ করে ফেলে। কারণ মেয়েরা পারমিশন দিতে চায় না, যেহেতু সেক্সের সময় ব্যথা লাগে। তাই রেপ করে দিলে সব ঠিক হয়ে যাবে।’ এ ধরনের ঘটনা অনেক মেয়ের সাথে ঘটলেও কেউই মুখ খোলেন না বলে দাবি করেন বুশরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *